বার্তা সংস্থা ইকনা: ইসরাইলের পেট্রোকেমিক্যাল ও জীবাণু প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট সব স্থাপনার ওপরও আঘাত হানার হুমকি দিয়েছেন হিজবুল্লাহ’র মহাসচিব সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ।
আলমায়াদিন টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে গতকাল সোমবার তিনি এইসব হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
হিজবুল্লাহর
মহাসচিব লেবাননে নিকট ভবিষ্যতে ইসরাইলি কোনো হামলার আশঙ্কা
নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, মার্কিন সরকারের অনুমতি ছাড়া ইসরাইল কোনো সামরিক
অভিযান চালায় না। ২০০৬ সালে তৎকালীন মার্কিন সরকারের নির্দেশেই
ইহুদিবাদী ইসরাইল লেবাননে হামলা চালিয়েছিল বলে তিনি স্মরণ করিয়ে দেন।
সাইয়্যেদ হাসান
নাসরুল্লাহ বলেছেন, আরবদের অনুরোধে ইসরাইল কোনো যুদ্ধে জড়ায় না, কিন্তু (সেবাদাস) আরব সরকারগুলো ও তাদের গোয়েন্দা চক্র ইসরাইলের স্বার্থে কাজ করে।
তিনি আরও বলেন, 'ইসরাইল কোনো যুদ্ধ শুরু করার আগে এটা নিশ্চিত হতে চায় যে এ যুদ্ধের মাধ্যমে তার লক্ষ্যগুলো অর্জন করা যাবে এবং ইসরাইলের ক্ষয়ক্ষতি ও খরচ হবে সবচেয়ে কম। হিজবুল্লাহ তার নানা সাফল্য ও ক্ষমতার মাধ্যমে ইসরাইলকে এটা বুঝিয়ে দিতে পেরেছে যে লেবাননে যে কোনো হামলার জন্য খুব চড়া মূল্য দিতে হবে। শত্রুর হাতে বন্দী সেনা ও লাশগুলোকে ইসরাইল পরিত্যাগ করে না, আর এটা ইহুদিবাদী কর্তৃপক্ষের ওপর চাপ প্রয়োগের একটি মাধ্যম।'
এর আগে ইসরাইলের হাইফা শহরের অ্যামোনিয়া ট্যাংকগুলোর ওপর হিজবুল্লাহরহামলার হুমকির পর থেকে তেলআবিব সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে বলে তিনি স্মরণ করিয়ে দেন। ইসরাইল ওই ট্যাংকগুলোকে অন্য শহরে সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলেও ইসরাইলি নাগরিকরাই রাসায়নিক সামগ্রীর এইসব ট্যাংক অন্যত্র স্থানান্তরের বিরোধিতা করেছে।
হিজবুল্লাহর রকেটগুলো অধিকৃত ফিলিস্তিন তথা ইসরাইলের সবগুলো শহরে আঘাত হানতে সক্ষম বলে জনপ্রিয় এই প্রতিরোধ আন্দোলন বার বার হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছে।
ইসরাইল লেবাননে
হামলা চালালে হিজবুল্লাহ তার সব ধরনের অত্যাধুনিক অস্ত্র ব্যবহার
করবে এবং হামলার কৌশল ও পদ্ধতির ক্ষেত্রেও প্রচলিত কোনো সীমারেখা মেনে
চলবে না বলে উল্লেখ করেন সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ।
হিজবুল্লাহ
সিরিয়ায় তাকফিরি সন্ত্রাস-বিরোধী অভিযানে আসাদ সরকারের পক্ষে যুদ্ধ অব্যাহত
রাখবে এবং এমনকি তাকফিরি হুমকি অব্যাহত থাকলে সে অবস্থায় ইরান ও রাশিয়া
তাদের সেনা সরিয়ে নিলেও হিজবুল্লাহর এই নীতিতে কোনো পরিবর্তন আসবে না বলে
তিনি দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
সিরিয়ায় রাশিয়ার সেনা সংখ্যা হ্রাসের পদক্ষেপ সম্পর্কে তিনি বলেন, রাশিয়ার লক্ষ্যগুলো অর্জিত হওয়ায় এখন সিরিয়ায় বেশি সেনা রাখার দরকার মনে করছে না মস্কো। রাশিয়া সিরিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘনকারী যে কোনো তুর্কি জঙ্গি বিমানকে ঘায়েল করার হুমকি দেয়ার পর তুরস্কের কোনো বিমান সিরিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘনের সাহস দেখায়নি বলে হিজবুল্লাহ প্রধান স্মরণ করিয়ে দেন।
তিনি এ প্রসঙ্গে আরও বলেন, রাশিয়া প্রয়োজনে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আবারও সিরিয়ায় সেনা মোতায়েন করবে বলে জানিয়ে দিয়েছে। আর এ থেকেই বোঝা যায় যে সিরিয়ার ব্যাপারে রুশ নীতিতে কোনো পরিবর্তন আসেনি। রাশিয়া, ইরান, ইরাক ও সিরিয়া এ অঞ্চলে সংঘাত মোকাবেলার বিষয়ে বাগদাদে একটি সমন্বয় কেন্দ্র গড়ে তুলেছে বলে হিজবুল্লাহ প্রধান জানান।
হিজবুল্লাহকে সন্ত্রাসী হিসেবে অভিহিত করার সৌদি নেতৃত্বাধীন পদক্ষেপ সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেছেন, হিজবুল্লাহ আরব ও মুসলিম বিশ্বে এখনও জনপ্রিয়। অন্যদিকে সৌদি সরকার সিরিয়া, ইয়েমেন ও ইরাকে তার নানা ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে ব্যর্থ হওয়ায় হিজবুল্লাহকে দোষী বলে দেখানোর চেষ্টা করছে। সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ বলেন, সৌদি সরকার কোনো ধরনের বিরোধিতা সহ্য করতে পারে না, এমনকি কেউ সৌদি রাজতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললেও এ সরকার ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে! #
সুন্দর মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ