IQNA

বিশ্বের বিভিন্ন ধর্ম যেভাবে আধুনিক ধ্যান-ধারণার সাথে তাল মিলিয়ে টিকে আছে

15:00 - September 23, 2018
সংবাদ: 2606784
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কয়েক শতাব্দীরও অধিক কাল পুরনো ধর্মীয় ঐতিহ্য এবং নিয়মনীতি কিভাবে বর্তমান সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে? সময়ের পরিবর্তনের সাথে এই পুরনো ধর্মীয় বিশ্বাসের সঠিক ভারসাম্য রক্ষা করা বলতে কি বুঝায়?

বিশ্বের বিভিন্ন ধর্ম যেভাবে আধুনিক ধ্যান-ধারণার সাথে তাল মিলিয়ে টিকে আছে 

বার্তা সংস্থা ইকনা: টেইলর লাক নামের একজন সংবাদ কর্মী সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে কিভাবে ইসলাম সামনে এগিয়ে চলছে তার একটি অনুসন্ধান চালিয়েছেন। তিনি রাজনৈতিক সংযমের বীজ কত গভীরে প্রথিত আছে তা দেখার জন্য জর্ডান থেকে তিউনিসিয়া ভ্রমণ করেছেন।

তিনি বর্তমান বিশ্বায়নের এই যুগে মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুডের সামনে এগিয়ে যাওয়ার ভয়ানক ব্যর্থতা টের পেয়েছেন। এর ফলে বিভিন্ন ইসলামিক রাজনৈতিক কর্মীদের জন্য তিনি পুনরায় চিন্তা করার রসদ যুগিয়েছেন। তারা দেখতে পান- নারী অধিকার, ধর্মীয় সহনশীলতা এবং অন্যান্য গণতান্ত্রিক আদর্শ একসাথে মিলে একটি জয় জয়কার পরিস্থিতি তৈরী করে।

তথাপি এই গল্প এমন একটি সূত্রের শেকড়ের দিকে আমাদেরকে ধাবিত করে যা শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মেরই প্রশ্ন নয় বরং উল্লেখযোগ্য বিভিন্ন ধর্ম যেমন- খ্রিস্টানিটি, জুড়াইজম, হিন্দুইজমের একটি বৈশ্বিক প্রশ্ন। আর সেই প্রশ্ন হচ্ছে- শতাব্দীরও অধিক কাল পুরনো ধর্মীয় ঐতিহ্য এবং নিয়মনীতি কিভাবে বর্তমান সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে? সময়ের পরিবর্তনের সাথে এই পুরনো ধর্মীয় বিশ্বাসের সঠিক ভারসাম্য রক্ষা করা বলতে কি বুঝায়?

বেশীরভাগ পাঠক হয়ত সময়ের সাথে সাথে ইসলাম ধর্ম পরিবর্তিত হচ্ছে ভেবে খুশি হবেন। মানুষের উন্নতির জন্য সবচাইতে প্রধান দুটি বিষয় হচ্ছে নারী অধিকার এবং নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করা। কিন্তু পরিবর্তন এখনো আমাদের দৃষ্টিসীমারও বাহিরে অবস্থান করছে। বিভিন্ন সংস্কৃতিকে গ্রহণ করার মানুষিকতার যে পরিবর্তন হচ্ছে তা এখনো ধরাছোঁয়ার বাহিরে।

যদি আধুনিক সংস্কৃতি ইসলামের আলোকিত চর্চাগুলোকে স্বাগতই জানায় তবে কেন কোন কোন ঐতিহ্যবাহী স্থানে এসব ধর্মীয় চর্চা হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে?

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে হয়তোবা ধর্ম নিরপেক্ষতা এবং ধর্মীয় ঐতিহ্য পাশাপাশি চলছে। মধ্যপ্রাচ্য এক্ষেত্রে একটি ঐতিহ্যগত জায়গা এবং এখানে ধর্ম-নিরপেক্ষতার কোনো স্থান নেই। অন্যদিকে উত্তর ইউরোপ অনেকটা ধর্ম নিরপেক্ষতার কাছাকাছি অবস্থান করছে।

ইউরোপে আমাদেরকে এই অভিজ্ঞতা দেয় যে, এখানকার চার্চগুলো রাষ্ট্রের নীতি অনুযায়ী চলে। এখানকার চার্চগুলো তার ধর্মীয় ঐতিহ্যকে ধর্ম নিরপেক্ষতায় রূপান্তরিত করেছে।

বিভিন্ন দেশে ধর্মীয় আলাপচারিতাকে রাজনৈতিক রূপ দেয়া হয়। টেইলর লাকের মতে, ‘আরব বিশ্বে উন্মুক্ত গণতন্ত্রের নামে মূলত একটি কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হয় এবং এর মাধ্যমে তারা তাদের ক্ষমতাকে পাকা পোক্ত করে।’ বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রেও এরকমটি ঘটে চলেছে। নতুন ধ্যান ধারণা ধর্মীয় মূল্যবোধের জন্য হুমকি স্বরূপ। সুতরাং এগুলো সেই পিছিয়ে পড়া মূল্যবোধের কাতারেই পড়ে থাকে। এই দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র এবং তিউনিসিয়া একই রকম যুদ্ধক্ষেত্রে অবস্থান করছে, এদের মধ্যে শুধুমাত্র স্থানের ভিন্নতা রয়েছে।

কিন্তু সামনে এগিয়ে চলা কি ধর্মীয় গোড়া বিশ্বাস সমূহের জন্য থেমে থাকবে? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে অগণিত চিন্তাবিদ এগিয়ে এসেছেন। তাদের মতে- বর্তমান সময়ে ধর্ম সমূহের উচিত এগুলো অতীতে কেমন ছিল তা বিবেচনা না করে বরং একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য এর সত্যিকারের ব্যবহারকে সবার সামনে তুলে ধরতে সচেষ্ট হওয়া।

এ প্রসঙ্গে ডাবলিনের রোমান ক্যাথলিক চার্চের আর্চবিশপ আমেরিকার জেসুইত ম্যাগাজিনকে বলেন, ‘আমাদের এমন একটি চার্চ দরকার যা শাসন করার বদলে মানানসই হতে সচেষ্ট থাকবে। আইরিশ চার্চ সমূহকে পরিবর্তনের জন্য আরো সচেষ্ট হতে হবে এবং সবাইকে এই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষিত করতে হবে যে, পুরনো ধ্যান ধারণার পরিবর্তন হয়েছে।’  সিএস মনিটর ডট কম।

captcha