IQNA

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন স্থগিত করতে বলল জাতিসংঘ

23:43 - November 14, 2018
সংবাদ: 2607228
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন স্থগিত করতে এবার বাংলাদেশকে আহ্বান জানালেন খোদ জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক দপ্তরের প্রধান মিশেল ব্ল্যাশেলেট। আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর প্রাক্কালে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জেনেভা থেকে এক বিবৃতিতে তিনি এ আহ্বান জানান।

বার্তা সংস্থা ইকনা:  এর আগে গত সোমবার জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ফেরার মতো অনুকূল পরিবেশ এখনো সৃষ্টি হয়নি। গত সপ্তাহে মিয়ানমারে মানবাধিকারবিষয়ক জাতিসংঘের স্পেশাল সপোর্টিয়ার (বিশেষ দূত) ইয়াংহি লিও একই কারণ দেখিয়ে প্রত্যাবাসন উদ্যোগ স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। সর্বশেষ গতকাল সন্ধ্যায় প্রত্যাবাসন উদ্যোগ স্থগিত করার আহ্বানটি এলো জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক দপ্তরের প্রধানের কাছ থেকে।

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্ল্যাশেলেট বিবৃতিতে সতর্ক করে বলেছেন, এই প্রত্যাবাসনে রোহিঙ্গাদের জীবন ও স্বাধীনতা চরম ঝুঁকিতে পড়বে। প্রত্যাবাসন উদ্যোগটিই আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হতে পারে।

মিয়ানমারে নাজুক পরিস্থিতির তথ্য তুলে ধরে মিশেল ব্ল্যাশেলেট বলেন, তাঁর দপ্তর এখনো রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের হত্যা, গুম ও গ্রেপ্তারের মতো গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ পাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের ওপর চলাফেরা ও অন্যান্য বিধিনিষেধ অব্যাহত আছে। এক লাখ ৩০ হাজারের মতো রোহিঙ্গা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বাস্তুচ্যুত শিবিরে আছে। এ ছাড়া শূন্য রেখায় প্রায় পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা আছে। তাদের স্বাধীনতা ও চলাফেরার ওপর ব্যাপক বিধিনিষেধ আছে।

আগামীকাল (১৫ নভেম্বর) বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু হচ্ছে। প্রথম ধাপে দুই হাজার ২৬০ জন রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন ১৫০ জন করে ১৫ দিনে এসব রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানো হবে।

কিন্তু প্রত্যাবাসনের তালিকায় থাকা রোহিঙ্গারা ফিরতে চাচ্ছে না। তাদের বেশির ভাগই মিয়ানমারে তাদের স্বজনদের হত্যা ও বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া দেখেছে। অনেকে মিয়ানমারে না ফিরে আত্মহত্যা করার হুমকি দিচ্ছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক দপ্তরের প্রধান বাংলাদেশকে সতর্ক করে বলেন, রোহিঙ্গাদের ওপর নিকৃষ্টতম নৃশংসতা মানবতাবিরোধী অপরাধ এমনকি গণহত্যা বলেও আশঙ্কা করা হয়। এমন প্রেক্ষাপটে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর অর্থ তাদের আবার সহিংসতা ও নিপীড়নের মধ্যে ঠেলে দেওয়া। তিনি মিয়ানমার সরকারকে রোহিঙ্গাদের ফেরার পরিবেশ সৃষ্টি, বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের ওপর ধারাবাহিক নিপীড়ন বন্ধ করার মাধ্যমে আন্তরিকতা দেখানোর আহ্বান জানান।

iqna

captcha