পার্সটুডের উদ্ধৃতি দিয়ে বার্তা সংস্থা ইকনা'র রিপোর্ট: তিনি তেহরানে আন্তর্জাতিক আন্ত:সংসদীয় ইউনিয়নের প্রধান গ্যাব্রিয়েল কোয়েভ্স ব্রাউনকে দেয়া সাক্ষাতকারে এ কথা বলেছেন। এ সাক্ষাতে প্রেসিডেন্ট রুহানি আরো বলেছেন, আমেরিকার সামরিক উপস্থিতি ও হস্তক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যে বিরাজমান নানা সংকট ও নিরাপত্তাহীনতার প্রধান উৎস।
বাস্তবতা হচ্ছে, বিশ্বে নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজন বহু মেরুকেন্দ্রীক বিশ্বব্যবস্থা। কিন্তু আমেরিকা কেবল তার নেতৃত্বে এক মেরুকেন্দ্রীক বিশ্বব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আঞ্চলিক দেশগুলোর মধ্যে নিরাপত্তাগত সহযোগিতার উদ্যোগকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। আন্তর্জাতিক আন্ত:সংসদীয় ইউনিয়নের প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাতে প্রেসিডেন্ট রুহানি গত ১৭ বছর ধরে আফগানিস্তান ও ইরাক এবং এরপর সিরিয়া ও ইয়েমেনে মার্কিন হস্তক্ষেপের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, পারস্য উপসাগরীয় এলাকাসহ সারা বিশ্বে নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করতে হলে আঞ্চলিক দেশগুলোর সমন্বিত প্রচেষ্টা জরুরি।
আন্তর্জাতিক আন্ত:সংসদীয় ইউনিয়নের প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাতে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাওয়াদ জারিফও আঞ্চলিক উত্তেজনা হ্রাস, বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদারের জন্য বিশ্বের দেশগুলোর সংসদের ভূমিকা পালনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলো গত দুই দশক ধরে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করে আসছে। এসব বিপর্যয়, দুর্যোগ ও সংকট বৃহৎ শক্তিগুলোর পক্ষ থেকে চাপিয়ে দেয়া হয়েছে।
এ দেশগুলোর বিপর্যয়কর পরিস্থিতি এবং এ অবস্থা চলতে থাকলে আমেরিকার এক মেরুকেন্দ্রীক বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজ সহজ হবে। আমেরিকা পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর বিশ্বে শান্তি ও নিরাপত্তাহীনতা বিরাট হুমকির মুখে পড়েছে। এ অবস্থায় আরো বেপরোয়া আচরণ করছে আমেরিকা। দুঃখজনকভাবে আমেরিকা ও দখলদার ইসরাইলের ওপর নির্ভরশীল হওয়ার কারণে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলো এ অঞ্চলে তাদের ষড়যন্ত্রমূলক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছে।
আন্তর্জাতিক আন্ত:সংসদীয় ইউনিয়নের প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাতে ইরানের প্রেসিডেন্ট এ বিষয়টির প্রতিই ইঙ্গিত করেছেন। তিনি মার্কিন ড্রোনের অবৈধভাবে ইরানের আকাশসীমা লঙ্ঘনের কথা উল্লেখ করে একে আমেরিকার পক্ষ থেকে এ অঞ্চলে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টির চেষ্টা হিসেবে অভিহিত করেন। প্রেসিডেন্ট রুহানি আমেরিকার এ পদক্ষেপকে পারস্য উপসাগর ও ওমান সাগরের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করে এর বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য আন্তর্জাতিক সমাজের প্রতি আহ্বান জানান।
এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক আন্ত:সংসদীয় ইউনিয়ন এ ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। এ ব্যাপারে ইরানের সংসদ মজলিশে শূরায়ে ইসলামির সদস্য ও এই ইউনিয়নে ইরানের প্রতিনিধি কাজেম জালালি বলেছেন, বর্তমানে আন্তর্জাতিক আন্ত:সংসদীয় ইউনিয়নের গুরুত্ব অনেক বেড়েছে। সাধারণত জাতিগুলোর ইচ্ছা আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটে সংসদে। তাই সংসদ আঞ্চলিক উত্তেজনা নিরসনে ভূমিকা রাখতে পারে। iqna