IQNA

করোনায় কাঁপছে যুক্তরাষ্ট্র, চীনে শোক পালন

20:26 - April 05, 2020
সংবাদ: 2610541
তেহরান (ইকনা)- চীন থেকে শুরু করেই সারা বিশ্বে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে নোভেল করোনাভাইরাস। তিন মাস ধরে চলা জীবন-যুদ্ধে দেশটিতে তিন হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যুর পরে এখন পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে। আজ মৃতদের স্মৃতির উদ্দেশে তিন মিনিটের জন্য নীরবতা পালন করল চীন। এক সঙ্গে বেজে ওঠে গাড়ি, ট্রেন, জাহাজের হর্ন। অর্ধনমিত ছিল জাতীয় পতাকা। তবে বিপরীত চিত্র যুক্তরাষ্ট্রে। সংক্রমণের দিক থেকে তারা বিশ্বের মধ্যে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে।

বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে ১৪ জন স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে এদিন ‘শহিদ’ ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন সেই চিকিৎসকও, যিনি প্রথম মারণ ভাইরাসটিকে চিহ্নিত করে বিপদবার্তা দিয়েছিলেন বিশ্বকে। তার জন্যে চীন সরকারের শাস্তির মুখেও পড়তে হয়েছিল তাকে। পরে নিজেই সংক্রমিত হয়ে মারা যান।

তবে চীন যখন স্বাভাবিক জীবনে ফিরছে, বাকি বিশ্বে তখন প্রবল লড়াই চলছে। ‘মানুষ বনাম ভাইরাস’ যুদ্ধের কেন্দ্র এখন আমেরিকা। সাত হাজারেরও বেশি লোক মারা গিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশে। গত ২৪ ঘণ্টাতেই শুধু মৃত্যু হয়েছে দেড় হাজার মার্কিন নাগরিকের। গোটা বিশ্বে ১১ লাখেরও বেশি মানুষ সংক্রমিত। মারা গিয়েছেন ৬২ হাজারের উপর। সব চেয়ে বেশি মৃত্যু ইতালিতে। সেখানে প্রাণ হারিয়েছেন সাড়ে ১৪ হাজারেরও বেশি।

দ্বিতীয় স্থানে ইউরোপের আর এক দেশ স্পেন। ১১ হাজার ৭৪৪ জন মারা গিয়েছেন সেখানে। কিন্তু আমেরিকায় যে গতিতে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, তাতে তারা সব রেকর্ড ছাপিয়ে যাবে বলে ভয় পাচ্ছে প্রশাসন। এই মুহূর্তে ২ লাখ ৭৮ হাজার সংক্রমিত আমেরিকায়। সংক্রমণ কমারও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ট্রাম্পের সরকার গত কাল থেকে ঘোষণা করছে, অবশ্যই মাস্ক পরুন। না থাকলে মুখে স্কার্ফ জড়ান।

এ বিষয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেল্‌থ-এর প্রধান অ্যান্থনি ফাউচি বলেন, ‘সম্প্রতি যা তথ্য এসেছে আমাদের হাতে, তাতে শোনা যাচ্ছে, হাঁচি-কাশিও নয়, কথা বললেই ভাইরাস ছড়াতে পারে।’ তবে বাতাসে ছড়ানোর যুক্তি নিয়ে এখনও সন্দিহান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

ইউরোপে সব চেয়ে খারাপ অবস্থা ইতালি ও স্পেনের। আইসিইউয়ে ভর্তি ছিলেন স্পেনের ২৯ বছর বয়সি অ্যাথলিট জেভিয়ার লারা। বেঁচে ফিরেছেন কোনও মতে, কিন্তু আতঙ্ক কাটছে না। বললেন, ‘আমি ধূমপান করি না। সুস্থ শরীর। আমার এই অবস্থায় সব চেয়ে বেশি ভয় পেয়েছিলাম সদ্যোজাত মেয়ের কথা ভেবে। ওর আট সপ্তাহ বয়স। সামান্য উপসর্গ দেখা দিতেই মেয়ের কাছে যাচ্ছিলাম না।’ লারার মতো আরও বহু অল্পবয়সি মৃত্যুমুখে ছিলেন বা রয়েছেন। ফলে প্রবীণ ও ছোটদের প্রাণের ঝুঁকি বেশি, এ তথ্যও আর ধোপে টিকছে না। ইটালিতে গত কাল মৃত্যু হয়েছে ৭৬৬ জনের। সাম্প্রতিক কালে এটাই সব চেয়ে কম দৈনিক মৃত্যু। জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের কথায়, ‘কিছুটা হলেও সংক্রমণ কমেছে, সেটুকুই আশার।’

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস অবশ্য সিরিয়া, লিবিয়া, ইয়েমেনের মতো দেশের কথা মনে করিয়ে দিয়ে বলেছেন, ‘আরও খারাপ সময় আসছে।’ তার কথায়, ‘ঝড় এ বার এই সব দেশে মঞ্চস্থ হবে।’
সূত্র: রয়টার্স, আল-জাজিরা/dailyinqilab

 

captcha