IQNA

সাবরা ও শাতিলা গণহত্যার ৩৮ তম বার্ষিকী

ইসরাইলি যুদ্ধ-অপরাধ ও পাশবিকতার বিচার হয়নি আজও

0:01 - June 07, 2020
সংবাদ: 2610916
তেহরান (ইকনা): বর্বর ইহুদিবাদী ইসরাইলি সেনাদের হাতে সাবরা ও শাতিলা নামক ফিলিস্তিনিদের দু’টি শরণার্থী শিবিরে গণহত্যার ৩৮তম বার্ষিকী ছিল গতকাল।

১৯৮২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর লেবাননে ফিলিস্তিনিদের ওই দু’টি শরণার্থী শিবিরে বিংশ শতাব্দীর অন্যতম এ ভয়াবহ গণহত্যা চালানো হয়েছিল। পরপর তিনদিন ধরে চালানো ওই গণহত্যায় বহু ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয় যাদের বেশিরভাগই ছিল নিরীহ নারী, শিশু ও বয়স্ক মানুষ। নিহতদের মধ্যে ততকালীন যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবাননের অনেক নাগরিকও ছিল।

১৯৮২ সালে লেবাননে ইসরাইলি হামলা এবং তারা বৈরুত দখল করে নেয়ার পর সাবরা ও শাতিলা ফিলিস্তিন শরণার্থী শিবিরে ওই গণহত্যা চালানো হয়। সে সময় এরিয়েল শ্যারন ইসরাইলের যুদ্ধমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিল। শ্যারন লেবাননের সামির জাজা ও ইয়ালি হাবিকের নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসী খ্রিস্টান ফ্যালাঞ্জিস্ট আধা সামরিক বাহিনীর সহায়তায় সাবরা ও শাতিলা শরণার্থী শিবির দু’টিতে গণহত্যা চালিয়েছিল। এ গণহত্যায় নিহত হয় অন্ততঃ ৫ হাজার ফিলিস্তিনি নারী, পুরুষ ও শিশু। নিহতদের মধ্যে ১৪০ জন ছিল লেবাননের নাগরিক।

ওই গণহত্যার পর তৎকালীন যুদ্ধমন্ত্রী এরিয়েল শ্যারন মানুষের কাছে সাবরা ও শাতিলার কষাই হিসেবে কুখ্যাতি অর্জন করে। অবশ্য ওই গণহত্যার ঘটনা ইহুদিবাদী ইসরাইলের প্রথম কিংবা শেষ অপরাধযজ্ঞ ছিল না। সাবরা ও শাতিলা শরণার্থী শিবিরে গণহত্যার আগেও ইহুদিবাদী ইসরাইল দেইর ইয়াসিন ও গ্বাফ্‌ফর কাসেম এলাকায়ও ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্মম গণহত্যা চালিয়েছিল। সাবরা ও শাতিলার ঘটনার পরও ইসরাইলের অপরাধযজ্ঞ অব্যাহত থাকে। ইসরাইলি সেনারা লেবাননের কানা এলাকার নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করা ছাড়াও ফিলিস্তিনে জেনিন ও রাফা এলাকায়ও ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছিল।

লেবাননের সাবরা ও শাতিলা ফিলিস্তিন শরণার্থী শিবিরে মাত্র তিনদিনে প্রায় ৫০০০ লোককে হত্যা করা হলেও এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সমাজের নীরবতার তীব্র প্রতিবাদ জানায় বিশ্বের সাধারণ জনগণ। জনগণের ব্যাপক প্রতিবাদ সমাবেশের পরিপ্রেক্ষিতে পাশ্চাত্যসহ বিভিন্ন দেশের আইন বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি তাদের তদন্ত প্রতিবেদনে সাবরা ও শাতিলা শরণার্থী শিবিরে গণহত্যার জন্য তারা ইহুদিবাদী ইসরাইলকে দায়ী করে। প্রতিবেদনে এ ঘটনাকে মানবতা বিরোধী ও যুদ্ধাপরাধ হিসেবে অভিহিত করে বলা হয় এটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

আন্তর্জাতিক সমাজ ইসরাইল ও তার অনুচরদের শাস্তির দাবি জানালেও আন্তর্জাতিক কোনো সংস্থা বা পাশ্চাত্যের দেশগুলো আজ পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এ কারণে দখলদার ইসরাইল আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে এবং ফিলিস্তিনসহ এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশের বিরুদ্ধে একই ধরনের অপরাধযজ্ঞের পুনরাবৃত্তি করে।

সূত্র: পার্সটুডে

captcha