IQNA

সইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ;

আমিরাত-ইসরাইলের চুক্তি ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণার কাজ করেছে

18:06 - August 15, 2020
সংবাদ: 2611322
তেহরান (ইকনা):লেবাননের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহর মহাসচিব সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ ৩৩ দিনের যুদ্ধে লেবাননের ঐতিহাসিক বিজয় বার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার মূল্যবান ভাষণ দিয়েছেন। এই ভাষণে তিনি সম্প্রতি বৈরুতে বিস্ফোরণ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাথে ইহুদিবাদী ইসরাইলের চুক্তির প্রসঙ্গে আলোকপাত করেছেন।

ইসরাইলি আগ্রাসনকারীদের বিরুদ্ধে লেবাননের ৩৩ দিনের যুদ্ধে ঐতিহাসিক বিজয়ের চৌদ্দতম বার্ষিকীতে হিজবুল্লাহর মহাসচিব সাইয়্যেদ হাসান নাসরাল্লাহ গত রাতে এই ইস্যুসহ অন্যান্য আঞ্চলিক ঘটনাবলী নিয়ে বক্তব্য পেশ করেন।


সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ বক্তব্যের শুরুতে বলেন: মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করি এবং যে সকল যোদ্ধাগণ এই জয়ে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন তাদের ধন্যবাদ জানাই। আপনাদের সকলকে (লেবাননের জনগণ) এবং বিশ্বের সকল স্বাধীনচেতা মানুষকে অভিনন্দন জানাই।

হিজবুল্লাহর মহাসচিব বলেন: তেমুয (জুলাই) মাসে লেবাননের ওপর জায়নিস্ট সরকার যে যুদ্ধ চালিয়েছিল তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তে হয়েছিল। মধ্যপ্রাচ্য এবং বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী সেনাবাহিনী হিসেবে দাবি করা সেই ইহুদিবাদী ইসরাইলের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লেবানন একাই লড়াই করেছে।

নাসরুল্লাহ গুরুত্বারোপ করে বলেন: এই যুদ্ধের মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে যে পরিকল্পনা করেছিল তা ব্যর্থ হয়েছে। প্রতিরোধের অক্ষ এবং লেবাননের জনগণ ৩৩ দিন ধরে প্রতিরোধ করেছিল। যতক্ষণ না জায়নিস্ট সরকার তাদের আগ্রাসন বন্ধ করেছে ততক্ষণ লেবাননের জনগণ শত্রুপক্ষের আগ্রাসনের প্রতিরোধ করেছে।

সাইয়্যেদ নাসরুল্লাহ বলেন, ২০০৬ সালের ৩৩ দিনের যুদ্ধে অবৈধ ও দখলদার ইসরাইল প্রথমবারের মতো নিজের অস্তিত্বকে বিপদের মুখোমুখি দেখতে পায়। তিনি ওই যুদ্ধে হিজবুল্লাহর প্রতি ইরান ও সিরিয়ার সহযোগিতার কথা স্মরণ করে বলেন, লেবাননের জনগণ কখনো এই সাহায্যের কথা ভুলে যাবে না।

হিজবুল্লাহর মহাসচিব বলেন: প্রতিরোধ জীবন ও মৃত্যুর বিষয়, প্রতিরোধ হল বাতাসের মতো যা দ্বারা আমরা শ্বাস নেই এবং পানির মতো যা পান করে আমরা বেচে থাকি।

তিনি বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে ইসরাইলের সম্পর্ক স্বাভাবিক করে দিয়ে ইহুদিবাদী ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সেবা করেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

এই চুক্তি সম্পর্কে তিনি বলেন: আমরা এই চুক্তি দেখে অবাক হয়নি।; এটি একটি প্রাকৃতিক পথ যা তারা ইতিমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছিল। এই চুক্তির মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে যে, মধ্যপ্রাচ্যের কিছু আরব শাসক আমেরিকার ‘কেনা ভৃত্যের’ মতো আচরণ করছে। শুধুমাত্র ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর সেবা জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাত এই কাজ করেছে।

হাসান নাসরুল্লাহ আরও বলেন: এখন থেকে আমাদের দেখা উচিত যে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগ পর্যন্ত ইসরাইলি সরকারের সাথে কোন কোন আরব দেশ কথিত শান্তিচুক্তিতে স্বাক্ষর করে। নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত ট্রাম্প উপসাগরীয় দেশগুলো থেকে অর্থ চুষে খেয়ে যাবে।

হিজবুল্লাহর মহাসচিব গুরুত্বারোপ করে বলেন: মানবিক, ধর্মীয়, জিহাদী ও জাতীয় দৃষ্টিকোণ থেকে প্রত্যেকের উচিত এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানানো এবং এটিকে ইসলাম, আরব বিশ্ব, কুদস এবং ইসলামিক পবিত্র স্থানগুলোর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে বলে ঘোষণা করা।

বৈরুতের বিস্ফোরণ সম্পর্কে তিনি বলেন: এই বন্দরে বিস্ফোরণ সম্পর্কে আমাদের ধারণা নেই। এই বিস্ফোরণ সম্পর্কে সাধারণত দুটি তত্ত্ব রয়েছে। একটি দুর্ঘটনাজনিত কারণে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে এবং অপরটি নাশকতার কারণে এই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। আমরা গবেষণার ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছি। যদি প্রমাণ হয় যে, এটি দুর্ঘটনাজনিত করণে হয়েছে, তাহলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিচার করা হবে এবং যদি এটা নাশকতা প্রমাণিত হয়, তাহলে এরসাথে জড়িত শত্রুদের বিচারের আওতায় আনা হবে।

সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ বলেন: যদি এই বিস্ফোরণের ক্ষেত্রে ইসরাইলের কোন হাত থাকে এবং মার্কিন এফবিআই এর তদন্তে প্রবেশ করে, তাহলে তদন্তটি সফল হবে না। ইসরাইল যদি এই মহা অপরাধের সাথে জড়িত থাকে, তাহলে হিজবুল্লাহ এ বিষয়ে চুপ করে থাকবে না এবং এ জন্য ইসরাইলকে ভারী মূল্য পরিশোধ করতে হবে। iqna

captcha