বিশ্বে করোনা মহামারি দেখার পর থেকেই ভ্যাকসিন বের করতে তৎপর হয়ে ওঠে বিভিন্ন দেশ। শুরু হয় গবেষণা। স্মরণকালের কম সময়ের মধ্যে মঙ্গলবার প্রথম দেশ হিসেবে ভ্যাকসিন প্রয়োগে অনুমোদন দেয় ব্রিটেন। এদিকে ব্রিটেন অনুমোদন দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই, রাশিয়াও আগামী সপ্তাহে টিকা কর্মসূচি শুরুর ঘোষণা দেয়।
রুশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিখাইল মুরাশকো জানান, ইতোমধ্যে এক লাখ মানুষকে তারা স্পুটনিক ফাইভ টিকা দিয়েছেন। এবার গণহারে ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু করবেন তারা।
করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে যখন নানামুখী আশার আলো, ঠিক সে সময় সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের নিশানা হয়ে উঠেছে এটি, যা নিয়ে সতর্ক করেছে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোল। সংস্থাটি বলছে, বাজারে নকল টিকা বিক্রি শুরু হতে পারে।
ইন্টারপোলের মহাসচিব জুরগেন স্টক বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার যেমন প্রস্তুতি নিচ্ছে, ঠিক তেমনি অপরাধীরাও প্রস্তুতি নিয়েছে। অপরাধী চক্র ভুয়া ওয়েবসাইট ও মিথ্যা রোগ নিরাময়ের কথা বলে সাধারণ মানুষকে তাদের প্রতারণার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করতে পারে। এমন ফাঁদ থেকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি। বিভিন্ন দেশের হ্যাকাররাও ভ্যাকসিনসংক্রান্ত তথ্য হাতিয়ে নিতে কার্যক্রম চালাচ্ছে। এ জন্য ইন্টারপোল তাদের ১৯৪টি সদস্য রাষ্ট্রের জন্য বৈশ্বিক সতর্কতা জারি করেছে
এদিকে আগামী সপ্তাহ থেকে ব্রিটেনে টিকাদান কর্মসূচি শুরু করা উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। পাশাপাশি ভ্যাকসিনের ডোজ একটি করা যায় কিনা তা নিয়ে গবেষণা চালু রাখার পরামর্শ সংস্থাটির।
এ বিষয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের আশাবাদ, ভ্যাকসিন গ্রহণ করে মানুষ কাজে মন দেবে আর অর্থনীতি গতিশীল হবে।
ব্রিটেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, মাইনাস ৭০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় রাখতে হবে এই ভ্যাকসিনকে। তিন সপ্তাহের মধ্যে প্রতিজন দুটি করে ভ্যাকসিন নেবেন। তাই এটি সংরক্ষণই মূল চ্যালেঞ্জ আমাদের। টিকা প্রয়োগের মতো বড় কাজ যখন শুরু হচ্ছে, আশা করছি এই সমস্যাও কাটিয়ে উঠব আমরা।
এদিকে ফাইজারের আশাবাদ, ২০২১ সালের মধ্যে বিশ্বের অধিকাংশ মানুষের জন্যই ভ্যাকসিন নিয়ে আসতে পারবেন তারা। আরেক মার্কিন প্রতিষ্ঠান মডার্নাও করোনার টিকায় সাফল্য দেখিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে শিগগির জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন মিলবে। আশা করা হচ্ছে আগামী বছরের শুরুতে বিশ্বজুড়ে করোনার টিকা পৌঁছে যাবে। টিকা পরিবহন ও গ্রহণ নিয়ে দেশগুলোও প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। তবে কম তাপমাত্রায় টিকার সংরক্ষণ ব্যবস্থাকে এখন সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জ মনে করা হচ্ছে।
সূত্র:somoynews