পেন্টাগন বলেছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে ইরান-সমর্থিত এইসব বাহিনীর ব্যবহৃত অবকাঠামোগুলোর ওপর কয়েক দফা বিমান হামলা চালানো হয়েছে। ইরাক-সীমান্ত সংলগ্ন এইসব অবকাঠামো ব্যবহার করে ইরাকের পপুলার মবিলাইজেশন ইউনিট বা হাশদ্ আশ শাবির যোদ্ধারা এবং কাতাইব হিজবুল্লাহ ও কাতাইব সাইয়্যিদুশ শুহাদা নামের সশস্ত্র গ্রুপের যোদ্ধারা। সম্প্রতি ইরাকে মার্কিন বাহিনী ও তার মিত্রদের অবস্থানে রকেট হামলার জবাবে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে পেন্টাগনের মুখপাত্র দাবি করেছেন।
রাশিয়া এই হামলার নিন্দা জানিয়ে একে অবৈধ ও বিপজ্জনক বলে মন্তব্য করেছে এবং এর ফলে উত্তেজনা বৃদ্ধি ছাড়াও এ অঞ্চলে বড় ধরনের সংঘাত সৃষ্টি হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
ইরবিলে মার্কিন বিমান ঘাঁটিতে সম্প্রতি যে রকেট হামলা হয়েছে তা ইরান সমর্থিত ইরাকি গোষ্ঠীগুলোর কাজ বলে মার্কিন সরকার দাবি করে এবং এর কঠোর জবাব দেয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছিল ওয়াশিংটন। অথচ ইরান ওই হামলার নিন্দা জানিয়েছিল এবং ইরাকে মার্কিন সেনা উপস্থিতি অব্যাহত রাখার অজুহাত তৈরি করতেই সন্দেহজনক ওই হামলা চালানো হয়েছে বলে তেহরান উল্লেখ করেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ইরাকে আইএস বা দায়েশ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর প্রতি মার্কিন সামরিক সহায়তাও বাড়তে দেখা গেছে।
আসলে নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইরাক ও সিরিয়ায় আবারও সন্ত্রাস-বান্ধব ও অশান্তি বিস্তার জোরদারের নীতি গ্রহণ করেছেন বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। গত বছরের জানুয়ারি মাসে ইরাকে মার্কিন হামলায় ইরানের কুদ্স্ ব্রিগেডের তৎকালীন প্রধান জেনারেল কাসেম সুলায়মানি ও ইরাকি হাশদ্ আশ শাবির উপপ্রধান আবু মাহদি আল মুহানদিস শহীদ হলে ইরাকি সংসদ সেদেশ থেকে সব মার্কিন সেনা বের করার আইন পাস করে। কিন্তু মার্কিন সরকার এই আইন উপেক্ষা করে ইরাকে এখনও আড়াই হাজার সেনা মোতায়েন রেখেছে।
সিরিয়ার ইরাক-সীমান্তবর্তী অঞ্চলে হামলা চালিয়ে জো বাইডেনের মার্কিন সরকার ইহুদিবাদী ইসরাইলকেও সহায়তা দিতে চাচ্ছে। কারণ ইসরাইলও প্রায়ই সিরিয়ার নানা অঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা চালিয়ে আসছে।
বাইডেন সরকার ট্রাম্পের নীতির বিরোধী বলে দাবি করে আসলেও এখন বাস্তবে ট্রাম্পের যুদ্ধকামী ও অশান্তি বিস্তার নীতিরই অনুসরণ করছে। সিরিয়ার বৈধ সরকারের অনুমতি না নিয়েই ও এই সরকারের বিরোধিতা সত্ত্বেও মার্কিন সরকার ২০১৪ সাল থেকে সিরিয়ায় সেনা মোতায়েন রেখেছে যা সিরিয়ার সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন ছাড়াও আন্তর্জাতিক আইনেরও লঙ্ঘন। সিরিয়ার বিশেষ অঞ্চল থেকে জ্বালানী তেল লুট ও পাচার করার কাজেও জড়িত রয়েছে মার্কিন বাহিনী।
বাইডেনের সিরিয়া ও ইরাক-নীতি থেকে এটাই বোঝা যাচ্ছে যে হোয়াইট হাউজের ক্ষমতার কেন্দ্রে ব্যক্তি বদল হলেও দেশটির হঠকারী পররাষ্ট্রনীতিতে কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। পার্সটুডে