ফ্রান্সিস যে গির্জা চত্বরে প্রার্থনা সভা পরিচালনা করবেন সেটি ২০১৭ সালে মসুল থেকে আইএস তাড়ানোর লড়াইয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। ইরাকে প্রথম সফরে পোপ সকল সম্প্রদায়ের সহাবস্থান ও ধর্মের নামে সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছেন।
ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হাতে আংশিক ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রাচীন আল–তাহেরা গির্জার সামনে দাঁড়িয়ে হাজারো অনুসারীসহ প্রার্থনায় অংশ নিয়ে পোপ বলেন, ‘যুদ্ধ ও ধ্বংসের নামে ইরাক ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়কে উচ্ছেদের ঘটনা দুঃখজনক। এর মধ্য দিয়ে শুধু তাদের ব্যক্তিজীবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বরং পুরো সমাজে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।’
৮৪ বছর বয়সী এ ধর্মগুরু নিকটবর্তী শহর ইরবিল থেকে হেলিকপ্টারযোগে মসুল পৌঁছান। সেখানে তাকে স্বাগত জানান ইরাকি যাজক ও পাদ্রিরা। পোপের আগমন উপলক্ষে মসুলের কেন্দ্রস্থলে ইরাক ও ভ্যাটিকানের পতাকা উড়তে দেখা গেছে।
শুক্রবার আলইতালিয়ার একটি উড়োজাহাজে চেপে বাগদাদে নামেন পোপ । ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা আল-কাধিমি বিমানবন্দরে পোপকে স্বাগত জানান। কোভিড-১৯ মহামারী শুরুর পর এটাই পোপের প্রথম বিদেশ সফর।
বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, আইএসের উত্থানে ইরাকের খ্রিষ্টান সম্প্রদায় বড় ধরনের ক্ষতির শিকার হয়। নিজ আবাস থেকে উচ্ছেদ হন অনেকেই। ২০০৩ সালে মার্কিন আগ্রাসনের সময় ইরাকে ১৫ লাখের বেশি খ্রিষ্টান ছিলেন। বর্তমানে এ সংখ্যা ৪ লাখের নিচে নেমে এসেছে। এ জন্য আইএসের উত্থান ও দমন–পীড়নকে দায়ী করা হয়।
মসুলের ক্যাথলিক যাজক বুট্রোস চিটো বলেন, প্রাচীন ঐতিহ্যসমৃদ্ধ এ শহরটির জৌলুশ এখন বিলীন হতে বসেছে। চারপাশে যুদ্ধ আর ধ্বংসের চিহ্ন। পোপ ফ্রান্সিসের সফরের মধ্য দিয়ে শহরটি নিয়ে মানুষের মনোভাব বদলাতে পারে। শান্তি ও ভালোবাসাপূর্ণ মনোভাবের কথা তিনি বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে পারেন।
ইরাক সফরকালে দেশটিতে আন্তধর্মীয় সংলাপে গুরুত্ব দেবেন পোপ ফ্রান্সিস। এর অংশ হিসেবে ইরাকে শিয়া ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী আল-সিস্তানির সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। শনিবার নাজাফ শহরে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর এটিই পোপ ফ্রান্সিসের প্রথম বিদেশ সফর। এ ছাড়া এই প্রথম কোনো পোপ ইরাক সফরে গেলেন। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এবং নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ বিবেচনায় নিয়ে এটিকে এ যাবৎ পোপের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সফর বলে মনে করা হচ্ছে। iqna