IQNA

দেশে ক্রমশে প্রখর হচ্ছে মোদিবিরোধী বিক্ষোভ

20:06 - March 26, 2021
সংবাদ: 2612519
তেহরান (ইকনা): বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা আগমনের বিরোধিতার জের হিসেবে আজ চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছেন।

নরেন্দ্র মোদির আগমনের প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভে হামলায় নেতাকর্মী হতাহত হওয়ার প্রতিবাদে আগামীকাল (শনিবার) সারাদেশে বিক্ষোভ এবং রোববার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে হেফাজেত ইসলাম।
 
আজ (শুক্রবার) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এ সময় হেফাজতে যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব, কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হকসহ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
 
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুর রব ইউসুফী বলেন, ‘হেফাজতে ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরীর পক্ষে আমি এ কর্মসূচি ঘোষণা করছি।’
 
তিনি বলেন, ঢাকার বায়তুল মোকাররম, চট্টগ্রামের হাটহাজারী, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদী মুসল্লিদের ওপর পুলিশ ও সরকারদলীয় ক্যাডার বাহিনী হামলা করে পাঁচজনকে শহীদ করেছে। অসংখ্য মুসল্লিকে আহত করেছে ও গ্রেপ্তার করেছে। এর প্রতিবাদে এ কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে।
 
আব্দুর রব ইউসুফী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বিলম্বে নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশ থেকে চলে যেতে হবে। নেতাকর্মীদের ওপর হামলাকারী পুলিশ ও সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
 
তিনি অভিযোগ করেন, হেফাজত নেতাকর্মীসহ সাধারণ মুসল্লিরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলেও সরকারি দলের সন্ত্রাসীরা হামলা ও বাধা দিচ্ছে।
 
সংবাদ সম্মেলনে মামুনুল হক বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এই দিনে পুলিশ ও সরকারি দলের সন্ত্রাসী বাহিনী যেভাবে প্রতিবাদী মুসল্লিদের ওপর হামলা করেছে, তাতে স্বাধীনতা দিবসের ইতিহাসে এটি একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।
 
এদিকে হেফাজতে ইসলামের আমীর মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে অবস্থান করছেন। সেখান থেকে হেফাজতের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি দাবি করেন, হেফাজতের মোট ৫ জন কর্মী শহীদ হয়েছেন। এর মধ্যে চারজন হাটহাজারীতে এবং একজন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়।
 
তিনি আরও বলেন, 'আমাদের এ কর্মসূচি সরকারের বিরুদ্ধে ছিল না। এটি ছিল নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে। মোদি সে দেশে মুসলিমদের নির্যাতন করছেন। এর প্রতিবাদ স্বরূপ এ কর্মসূচি দিয়েছিলাম।‘
 
পুলিশ সদস্য ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীর দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার ছাত্ররা জানান, আজ জুমার নামাজের পর ঢাকার বাইতুল মোকাররম মসজিদ এলাকায় মুসল্লিদের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী ও পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদে দুপুর আড়াইটার দিকে দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসা থেকে মিছিল বের করেন ছাত্ররা। এটি কিছুদূর যাওয়ার পর পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় ছাত্ররা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ তা নিয়ন্ত্রণের জন্য রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। এতে মাদ্রাসার ছাত্ররা হতাহত হন। এ সময় হাটহাজারী সদর এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বিক্ষুব্ধ কর্মীরা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) একটি পিকআপ গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়কে অবরোধ সৃষ্টি হলে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
 
নিহত চারজনের মধ্যে তিনজন হাটহাজারী মাদ্রাসার ছাত্র, একজন পথচারী। নিহত ছাত্ররা হলেন- কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের মো. রবিউল আলম, মাদারীপুরের মেহেরাজুল ইসলাম ও হাটহাজারীর মো. জামিল উদ্দীন। পথচারীর নাম মো. আবদুল্লাহ।
 
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিহতদের দেখতে যান হেফাজতে ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী। তিনি নিহতদের জন্য দোয়া পরিচালনা করেন।  iqna
captcha