এএপিপি তাদের প্রতিবেদনে জানায়, প্রকৃত নিহতের সংখ্যা হয়তো আরো অনেক বেশি। এর আগে শনিবার মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী দিবসের দিন দেশটির বিভিন্ন শহরে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ১১৪ জন নিহত হয়। ১ ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থানের পর একদিনে এটিই সর্বোচ্চ নিহতের ঘটনা।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে অন্তত দুই হাজার ৫৭৪ জনকে আটক করা হয়। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, সোমবার সামরিক অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে অন্তত ১৪ জন নিহত হন। এর মধ্যে আটজন দেশটির বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনের দক্ষিণ দাগোন ডিস্ট্রিক্টে নিহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নিরাপত্তা বাহিনী ওই এলাকায় বিক্ষোভে সাধারণ অবস্থার চেয়ে ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া না গেলে মনে করা হচ্ছে, কোনো একপ্রকার গ্রেনেড লঞ্চার নিয়ে নিরাপত্তা বাহিনী বালুর বস্তা দিয়ে প্রস্তুত ব্যারিকেডের পেছনে লুকিয়ে থাকা বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালায়।
দক্ষিণ দাগোনের এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করে মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, নিরাপত্তা বাহিনী সারারাত ওই স্থানে দমন অভিযান চালিয়েছে, যাতে আরো বেশি লোক হতাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি বলেন, 'সারারাত গোলাগুলি হয়েছে'। পুলিশ ও জান্তা মুখপাত্রের সাথে যোগাযোগ করা হলেও সাড়া মেলেনি।
বিক্ষোভের অন্যতম প্রধান সংগঠক দল জেনারেল স্ট্রাইক কমিটি অব ন্যাশনালিটি সোমবার দেশটির জাতিগত সংখ্যালঘুদেরও সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে সহায়তার আহ্বান জানান। এ দিকে মিয়ানমারের স্বায়ত্তশাসনপন্থী তিনটি সংগঠন মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি, দি আরাকান আর্মি ও তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি এক যুক্ত বিবৃতিতে মঙ্গলবার মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে বিক্ষোভকারীদের হত্যা বন্ধ করে রাজনৈতিকভাবে সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানায়। তা না হলে সকল জাতিগত নৃ-গোষ্ঠীর সাথে মিলে 'মিয়ানমারের বসন্ত বিপ্লব'-এ অংশগ্রহণকারীদের রক্ষায় তারা পদক্ষেপ নেবে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়।
এ ছাড়া থাই সীমান্তে স্বায়ত্তশাসনপন্থী অপর দল কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়নের (কেএনইউ) সাথে মিয়ানমারেরর সামরিক বাহিনীর প্রচণ্ড সংঘর্ষ চলছে। সামরিক জান্তার আগ্রাসন থেকে বাঁচতে মিয়ানমারের বিভিন্ন স্থান থেকে নাগরিকরা অভ্যুত্থানকে প্রত্যাখ্যান করা দলটির নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছে। রয়টার্স