IQNA

চিকিৎসাশাস্ত্রে আল রাজির অবদান

0:01 - January 18, 2022
সংবাদ: 3471300
তেহরান (ইকনা): ইসলামের ইতিহাসে পূর্ণিমার চাঁদের মতো উজ্জ্বল এক নাম আল রাজি। চিকিৎসাবিজ্ঞানে আল রাজির অবদান অবিস্মরণীয়।
চিকিৎসাশাস্ত্রে মুসলমান বিজ্ঞানীদের অবদানের কথা বলতে গেলে প্রথমেই তাঁর কথা বলতে হয়। তবে তিনি শুধু চিকিৎসকই ছিলেন না, ছিলেন একাধারে গণিতবিদ, রসায়নবিদ ও দার্শনিক। তাঁর পুরো নাম আবু বকর মুহাম্মদ ইবনে জাকারিয়া আল রাজি। তাঁর নামের আল রাজি অংশটি এসেছে তাঁর জন্মস্থল থেকে। এর অর্থ ‘রে এর অধিবাসী’। ইউরোপে অবশ্য তিনি আল রাজেস নামে পরিচিত।
 
অনেক বিশেষজ্ঞ আল রাজিকে মধ্যযুগের সেরা চিকিৎসক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তাঁকে সে সময়ের সবচেয়ে সৃজনশীল লেখক বলেও মানা হয়। তিনি পেডিয়াট্রিকস, অপথ্যালমোলজি, নিউরোসার্জারি, সংক্রামক রোগসহ চিকিৎসাবিদ্যার অনেক শাখার গোড়াপত্তন করেন।
 
তিনিই প্রথম চিকিৎসক, যিনি হাম ও গুটি বসন্তকে আলাদা রোগ হিসেবে চিহ্নিত করেন। এর আগে দুটি রোগকে একই ভাবা হতো।
 
আল রাজির সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ অবদান ছিল চিকিৎসাশাস্ত্রে। তিনি কমবেশি ২০০ কিতাব রচনা করেন। এর মধ্যে চিকিৎসাশাস্ত্রেই তাঁর গ্রন্থের সংখ্যা ১০০। আল রাজির সবচেয়ে বড় কীর্তি হচ্ছে বসন্ত ও হাম সম্পর্কে ‘আল জুদারি ওয়াল হাসবাহ’ নামক পুস্তক রচনা। এতে গুটি বসন্ত ও হাম রোগের লক্ষণের সঠিক বিবরণ ও পার্থক্য লিপিবদ্ধ করেন, যা তাঁর প্রতিভার স্বাক্ষর বহন করে। ওই পুস্তক ইংরেজি, লাতিন ও ইউরোপীয় অন্য ভাষায় অনূদিত হয়। তাঁর চিকিৎসাবিষয়ক গ্রন্থের মধ্যে ‘এল হাওয়াই’ সবচেয়ে বেশি উল্লেখযোগ্য। ওই গ্রন্থ ‘লিবার কন্টিনেন্স’ নামে লাতিন ভাষায় অনূদিত হয়েছিল। আল রাজির চিকিৎসাবিষয়ক আরেকটি ছোট গ্রন্থ ‘মানসুরি’ বা ‘লবার আলমানসোরিস’। এটি তিনি মানসুর ইবনে ইসহাক নামের জনৈক শাসককে উৎসর্গ করেছিলেন। ওই গ্রন্থে ভ্রমণকারীর জন্য চিকিৎসা উপদেশ, বিষাক্ত প্রাণীর দংশনের প্রতিকারসহ অন্যান্য বিষয় আলোচিত হয়েছে।
 
আল রাজি চিকিৎসা ও দর্শন ছাড়াও জ্যোতির্বিদ্যা, জ্যামিতি, খনিজবিদ্যা, ব্যাকরণ প্রভৃতি বিষয়ে গ্রন্থ রচনা করেন। শেষ বয়সে এসে আল রাজি অন্ধ হয়ে পড়েন। ৯২৫ সালে এই মহান বিজ্ঞানী আফগানিস্তানের হেরাত নামক স্থানে ইন্তেকাল করেন।
captcha