IQNA

নিজের কুয়া নিজে খুঁড়ছেন এরদোগান

ফিলিস্তিনকে পাশ কাটিয়ে আরো ঘনিষ্ঠ হচ্ছে ইসরাইল-তুরস্ক সম্পর্ক

20:49 - January 20, 2022
সংবাদ: 3471313
তেহরান (ইকনা): বেশ ক'বছর আগ থেকেই দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলের সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে গত কয়েক বছরে কয়েকটি আরব দেশের সঙ্গে ইসরাইলের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে। তবে, এ অঞ্চলের জনগণ ইসরাইলের সঙ্গে এসব দেশের সরকারের সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
এতে  কোনো সন্দেহ নেই এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে তুরস্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী একটি দেশ। এমন একটি দেশের সাথে ইসরাইলের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক অনেক আগে থেকেই বজায় রয়েছে। তবে সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ করার জন্য এরদোগান সরকার প্রথমে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরবের সঙ্গে বিরাজমান বিরোধ মিটিয়ে ফেলার পদক্ষেপ নিয়েছে। অথচ তুরস্ক সরকারের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার সাথে আমিরাত ও সৌদি আরব জড়িত ছিল বলে আঙ্কারা কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করে আসছিল। এসব কারণে তুরস্ক সরকার গত দুই মাসে ব্যাপক চেষ্টা চালিয়েও আবুধাবি ও রিয়াদের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তুলতে পারেনি।
 
ধারণা করা হচ্ছে আরব সরকারগুলো তুরস্কের প্রেসিডেন্টসহ দেশটির অন্যান্য কর্মকর্তাদেরকে ইসরাইলের সঙ্গে অতিমাত্রায় সম্পর্ক ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য ব্যাপক চাপ দিয়ে আসছিল। তবে তুরস্ক সরকার ইসরাইল ও আরব দেশগুলোর সঙ্গে আরো ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য হচ্ছে কিনা সে বিতর্কে না গিয়ে বলা যায় তুরস্কে অর্থনৈতিক সংকট তীব্রতর আকার ধারণ করায় এবং জনগণের জীবন মান পড়ে যাওয়ায় এ থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য এরদোগান সরকার ইসরাইলের মতো একটি দখলদার শক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়ে অনেক বড় ভুল করতে যাচ্ছে। কেননা এতে করে প্রেসিডেন্ট এরদোগান নিজেই ইসরাইলের ফাঁদে পড়বেন এবং তিনি নিজের কুয়া নিজে খুঁড়ছেন।
 
প্রকৃতপক্ষে, যখনই কোনো ঘটনা তুরস্কের স্বার্থের অনুকূলে থাকে তখনই মুসলমানদের পক্ষ হয়ে সেই ঘটনাকে সমর্থন দেয় আঙ্কারা কর্তৃপক্ষ কিন্তু যখনই কোনো কিছু তুরস্কের স্বার্থের অনুকূলে থাকে না তখনই তারা সে বিষয়টিকে পাশ কাটিয়ে যায় এমনকি তা মুসলিম উম্মাহর জন্য ক্ষতিকর হলেও। এ কারণে দেখা যাচ্ছে, তুরস্ক সরকার সবসময়ই কেবল নিজের সামাজিক ও রাজনৈতিক স্বার্থের আলোকে ফিলিস্তিন বিষয়টিকে মূল্যায়ন করে থাকে। অথচ ফিলিস্তিন সমস্যা মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমস্যা এবং মুসলিম বিশ্বের নেতা সেজে কোনো কোনো প্রভাবশালী দেশ এ সংকট সমাধানের কথা বললেও বাস্তবে কোনো পদক্ষেপ তারা নিচ্ছে না। তুরস্কের কর্মকর্তারা সবসময়ই ফিলিস্তিনসহ এ অঞ্চলের যে কোনো সংকটকে নিজের স্বার্থে ব্যবহারের চেষ্টা চালান। যেহেতু এরদোগান সরকার বিপদে পড়েছে তাই তারা ফিলিস্তিন সমস্যার কথা বেমালুম ভুলে গিয়ে মুসলিম বিশ্বের এক নম্বর শত্রু ইসরাইলের সাথে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে যা অত্যন্ত ঘৃণিত ও ন্যক্কারজনক কাজ। তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান জানিয়েছেন, 'ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট আইজেক হারজগ শিগগিরই তুরস্ক সফর করবেন'।
 
এদিকে, মুসলমানদের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান মসজিদুল আকসা দখলকারী ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট আইজেক হারজগ তুরস্ক সফরের আমন্ত্রণ পেয়েছেন- এমন খবরে অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন। তুরস্কের এরদোগান সরকার এর আগে বহুবার ফিলিস্তিনিদের অধিকার রক্ষার কথা বলেছে। তবে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, তুর্কি সরকার মুখে ইসরাইলের সমালোচনা করলেও বাস্তবে সব সময় দখলদারদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখেছে এবং ইসরাইলের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। পার্সটুডে
captcha