IQNA

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডকে রাজনৈতিক হাতিয়ার বানানোর অভিযোগ জাতিসংঘের

0:02 - December 05, 2022
সংবাদ: 3472939
তেহরান (ইকনা): জাতিসংঘ বলেছে, গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভ দমনের কৌশল হিসেবে মৃত্যুদণ্ডকে ব্যবহার করছে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা। দেশটিতে এ সপ্তাহেই সাতজনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার তথ্য উল্লেখ করে এ মন্তব্য করেছে বিশ্বসংস্থাটি। জাতিসংঘ বলেছে, মিয়ানমারের জান্তা সরকার এ পর্যন্ত ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে।
জাতিসংঘের এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জান্তা কর্তৃপক্ষ কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
 
জাতিসংঘ বলেছে, বিরোধিতা নির্মূল করতে সর্বোচ্চ শাস্তিকে ব্যবহার করছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। এ ছাড়া গত বৃহস্পতিবার আরো চারটি মৃত্যুদণ্ডের ঘটনার তথ্য পেতে অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে জাতিসংঘ।  
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) নেত্রী অং সান সুচির বেসামরিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে। এর পর থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশে গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভকারীদের ওপর নিপীড়ন শুরু হয়। এখনো বিপুলসংখ্যক মানুষ কারাবন্দি। এখন জান্তা প্রশাসন গুরুত্বপূর্ণ কিছু কারাবন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করছে। জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত দুই হাজার ২৮০ জনের মতো বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছে।
 
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কমিশনার ভলকার টার্ক শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানান, মিয়ানমারে গত বুধবার গোপন সামরিক আদালতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কমপক্ষে সাতজন ছাত্রকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ভলকার টার্ক বলেন, মৃত্যুদণ্ডকে বিরোধিতা দমনের রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার মধ্য দিয়ে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর জোট আসিয়ান এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রচেষ্টার প্রতি তার বিদ্বেষ প্রকাশ করেছে।
 
মিয়ানমারের স্থানীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, ইয়াঙ্গুন শহরভিত্তিক ডাগন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে গত এপ্রিলে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে ব্যাংকে গোলাগুলিতে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়। ডাগন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসংসদ বিবৃতির মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়েছে। এতে বলা হয়, ‘শিক্ষার্থীদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া সামরিক বাহিনীর প্রতিশোধমূলক আচরণ। ’ 
 
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনার ভলকার টার্ক অভিযোগ করেন, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর এসব গোপন ট্রাইব্যুনাল অনেক ক্ষেত্রে শুনানির জন্য মাত্র কয়েক মিনিট সময় নেন। আটক ব্যক্তিদের কোনো আইনজীবী কিংবা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতেও দেওয়া হয় না।  
 
সর্বশেষ মৃত্যুদণ্ডের ঘটনায় ফেসবুক ও টুইটার পোস্টে প্রতিবাদ জানিয়েছে মিয়ানমারের অনেক মানুষ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে হ্যাশট্যাগের সঙ্গে ‘স্টপএক্সিকিউটআওয়ারস্টুডেন্টস’ লিখে প্রতিবাদ করছে তারা।  
 
এর আগে গত জুলাই মাসে চারজন কারাবন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন সাবেক আইন প্রণেতা ফাইও জেয়া থ এবং জিমি নামের পরিচিত গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনকর্মী কিয়া মিন ইউ। মিয়ানমারে বিগত ৩০ বছরের মধ্যে এটাই ছিল প্রথম মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনা। সূত্র : এএফপি
captcha