IQNA

কুরআনের সূরাসমূহ / ৪৪

সূরা দোখানে সত্য অস্বীকারকারীদের পরিণতি

9:05 - December 07, 2022
সংবাদ: 3472955
তেহরান (ইকনা): যদিও সত্যটি স্পষ্ট, কেউ কেউ তাদের ব্যক্তিগত বা গোষ্ঠীগত স্বার্থ বিপন্ন করা সহ বিভিন্ন কারণে তা অস্বীকার করে। অত্যাচারী ও নিপীড়কদের ইতিহাস জুড়ে, তারা তাদের শাসন ও অনুসারীদের বজায় রাখার জন্য মহান আল্লাহর প্রেরিত রসূলদের অস্বীকার করার চেষ্টা করেছে। আল্লাহ তাদেরকে কঠিন ও সুনির্দিষ্ট শাস্তির হুমকি দিয়েছেন।

পবিত্র কুরআনের ৪৪তম সূরাকে "দোখান" বলা হয়। ৫৯টি আয়াত সহ এই সূরাটি পঁচিশতম পারায় অবস্থিত। এই মাক্কী সূরাটি নাযিলের ক্রমানুসারে ৬৪তম সূরা যা প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)এর উপর নাযিল হয়েছে।

এই সূরাটিকে দোখান বলা হয় কারণ ১০ নম্বর আয়তে কাফেরদের জন্য দুখান নামক একটি শাস্তি এবং পুনরুত্থানের অন্যতম লক্ষণ সম্পর্কে কথা বলা হয়েছে। দোখান বলতে ধোঁয়ার অনুরূপ একটি গ্যাসীয় পদার্থ যা পৃথিবীর শেষ প্রান্তে এবং বিচার দিবসের প্রাক্কালে সমগ্র আকাশকে ঢেকে রাখে। 

তাফসিরে আল-মিজানের মতে, সূরা দোখানের মূল উদ্দেশ্য হল দুনিয়া ও আখেরাতে শাস্তির হুমকি এবং এই হুমকি সেই কাফেরদের প্রতি নির্দেশিত যারা কুরআনের সত্যতা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করে। সূরা দোখানে মানুষকে হেদায়েত কারার জন্য আল্লাহ কর্তৃক শাবে কদরে কুরআন নাযিলের বিষয়ে ইঙ্গিত করা হয়েছে।

এই সূরাটি সর্বপ্রথম কুরআনের মাহাত্ম্য বর্ণনা করে এবং কদরের রাতে কুরআন নাযিল হয়েছে সেই বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। সূরার অন্য অংশে মহান আল্লাহর একত্ববাদ এবং মহাবিশ্বে তাঁর মহত্ত্বের কিছু নিদর্শন সম্পর্কে কথা বলা হয়েছে এবং কাফেরদের ভাগ্য এবং বিচার দিবসে তাদের শাস্তির ধরণ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

এই সূরায় গুরুত্বারোপ করে বলা হয়েছে যে, কাফেরগণ শীঘ্রই এই পৃথিবীতে একটি বেদনাদায়ক শাস্তি দ্বারা পরিবেষ্টিত হবে, তারপর তারা তাদের প্রভুর কাছে ফিরে আসবে এবং তাদের কৃতকর্মের সতর্কতার পরে আল্লাহ তাদের চিরস্থায়ী শাস্তির মুখোমুখি করবেন।

এই সূরায় হযরত মূসা (আ.) এবং বানী ইসরাইল এবং ফেরাউনের অনুসারীদের সাথে তাদের সংঘর্ষ এবং তাদের কঠোর পরিণতির গল্পও তুলে ধরা হয়েছে।

হযরত মূসা (আ.) যখন ইসরাইলদের বাঁচাতে ফেরাউনের কাছে গেলেন, ফেরাউন ও তার অনুসারীরা তাকে প্রত্যাখ্যান করে এবং মহান আল্লাহ তাদেরকে সমুদ্রে ডুবিয়ে দিলেন। সত্য অস্বীকারকারী অজ্ঞদের জাগানোর জন্যই এই গল্প।

পার্থিব যন্ত্রণার পাশাপাশি, এই সূরায় পুনরুত্থান এবং জাহান্নামীদের বেদনাদায়ক যন্ত্রণার বিষয়েও আলোচনা করা হয়েছে। প্রথমত, তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে কিয়ামত অবশ্যই সংগঠিত হবে, তারা তা চায় বা না চায়। এই সূরার শেষে, কেয়ামতের কিছু খবর এবং অপরাধীদের কী ঘটবে ও তাদের কী ধরনের শাস্তি হবে এবং মুমিন ও ধার্মিকদের জন্য যে পুরস্কার রয়েছে তার কিছু বর্ণনা করা হয়েছে।

সৃষ্টির উদ্দেশ্য এবং আসমান ও জমিনের সৃষ্টি যে নিরর্থক নয় তা এই সূরার আয়াতে উত্থাপিত আরেকটি বিষয়। পবিত্র কুরআনের মহিমা বর্ণনা করে এই সূরার সূচনা এবং সর্বশেষ এই কুরআনের মহিমা বর্ণনা করার মাধ্যমে সূরাটি শেষ করা হয়।

 
সংশ্লিষ্ট খবর
ট্যাগ্সসমূহ: কুরআনের সূরাসমূহ
captcha