IQNA

কুরআনে বর্ণিত বিভিন্ন ব্যক্তিদের চরিত্র – ২৮

আসিয়া; মুসা (আ.) এর রক্ষাকারী এবং ঈমানদার নারীদের জন্য আদর্শ

0:02 - February 09, 2023
সংবাদ: 3473317
তেহরান (ইকনা): পবিত্র কুরআনে হযরত মারইয়ামের নাম ছাড়া অন্য কোনো নারীর নাম সরাসরি উল্লেখ নেই, তবে আমরা ঈমানী বা কাফের নারীর চিহ্ন দেখতে পাই। উদাহরণ হিসেবে হযরত নূহ (আঃ) ও হযরত লুত (আঃ)-এর স্ত্রীদের কাফের নারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে এবং অন্যদিকে ঈমানদার নারীদের জন্য একটি আদর্শ হিসেবে হযরত আসিয়াকে উল্লেখ করা হয়েছে। হযরত আসিয়া ছিলেন মিশরের অত্যাচারী রাজার স্ত্রী। 
হযরত আসিয়া হযরত মুসা (আঃ)-এর জীবদ্দশায় প্রাচীন মিশরের রাজা ফেরাউনের স্ত্রী ছিলেন। কিছু মুফাস্সির ও ঐতিহাসিকগণ তাকে বনী ইসরাইলের বংশধর মনে করেন এবং কেউ কেউ তাকে হযরত মূসা (আ.)-এর খালা বলে পরিচয় করিয়ে দেন। আসিয়া হযরত মূসা (আ.)-কে নীল নদ থেকে উদ্ধারে ভূমিকা রেখেছিলেন এবং তাঁর প্রতি ঈমান বা বিশ্বাস স্থাপন করেছিলেন।
পবিত্র কুরআনে হযরত আসিয়ার নাম নেই; কিন্তু মুফাসসিরগণ " امْرَأَتَ فِرْعَوْن: ফেরাউনের স্ত্রী" এর অর্থ যা কুরআনে দুবার এসেছে এবং তার নাম হযরত আসিয়া বলে উল্লেখ করা করেছেন। সূরা কাসাসের ৯ নম্বর আয়াত অনুসারে, যখন মূসাকে পানি থেকে তুলে নেওয়া হয়েছিল, আসিয়া ফেরাউনকে মূসাকে জীবিত রাখার জন্য রাজি করিয়েছিল। এছাড়াও, সূরা তাহরিমের ১১ নম্বর আয়াতে, নূহ এবং লূতের স্ত্রীদের মতো যারা কাফের বা অবিশ্বাসী ছিল তাদের বিপরীতে ঈমানদার নারীদের জন্য একটি উদাহরণ এবং মডেল হিসাবে আসিয়াকে উল্লেখ করা হয়েছে।
এই আয়াতে বলা হয়েছে যে, আসিয়া আল্লাহকে তার জন্য বেহেস্তে একটি ঘর স্থাপন করতে এবং ফেরাউন ও নিষ্ঠুর লোকদের হাত থেকে রক্ষা করতে বলেছিল:
وَضَرَبَ اللَّهُ مَثَلًا لِلَّذِينَ آمَنُوا امْرَأَتَ فِرْعَوْنَ إِذْ قَالَتْ رَبِّ ابْنِ لِي عِنْدَكَ بَيْتًا فِي الْجَنَّةِ وَنَجِّنِي مِنْ فِرْعَوْنَ وَعَمَلِهِ وَنَجِّنِي مِنَ الْقَوْمِ الظَّالِمِينَ
আল্লাহ বিশ্বাসীদের জন্য ফিরআউন-পত্মীর দৃষ্টান্ত বর্ণনা করছেন, যে বলেছিল (প্রার্থনা করেছিল), ‘হে আমার প্রতিপালক! তোমার সন্নিকটে জান্নাতে আমার জন্য একটি গৃহ নির্মাণ কর এবং আমাকে ফিরআউন ও তার ক্রিয়াকলাপ হতে উদ্ধার কর এবং অবিচারক সম্প্রদায় হতে আমাকে মুক্তি দান কর।’
সূরা তাহরীম, আয়াত: ১১। 
আসিয়া যখন মূসার অলৌকিক কাজগুলো দেখেছিল, তখন সে তাকে বিশ্বাস করেছিল। ফেরাউন যখন তার বিশ্বাসের কথা জানতে পেরেছিল, তখন সে তাকে আল্লাহর উপাসনা বন্ধ করতে বলেছিল, কিন্তু আসিয়া প্রত্যাখ্যান করেছিল এবং ফেরাউন তার উপর অত্যাচার করেছিল। ফেরাউন তার হাত-পা মাটিতে পেরেক দিয়ে বেঁধে তার শরীরকে সূর্যের আলোতে উন্মুক্ত করার নির্দেশ দেয়। এসব অত্যাচারের ফলে হযরত আসিয়ার মৃত্যু হয়।
কিছু রেওয়ায়ত অনুযায়ী সর্বকালের শ্রেষ্ঠ চার নারীর মধ্যে হযরত আসিয়ার নাম রয়েছে। এই শ্রেষ্ঠ চার নারী হচ্ছেন: হযরত মারইয়াম (সা. আ.), হযরত খাদিজা (সা. আ.), হযরত আসিয়া (সা. আ.) এবং হযরত ফতিমা জাহরা (সা. আ.।  এই শ্রেষ্ঠ চার নারীর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হচ্ছেন হযরত নবী কন্যা ফাতিমা জাহরা (সা. আ.)।

 

captcha