রমজানে মুসলমানদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ্যের মধ্যে রয়েছে অভাবীদেরকে সাহায্য করা। ইসলামী গ্রন্থে এর বিভিন্ন দিকের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। যার কয়েকটি আমরা জানব:
১) হালাল সম্পদ থেকে দান করা: কুরআনে কারীমে বলা হয়েছে: یَا أَیُّهَا الَّذِینَ آمَنُواْ أَنفِقُواْ مِن طَیِّبَاتِ مَا کَسَبْتُمْ ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমাদের উপার্জিত পাক সম্পদ থেকে ব্যায় কর।
২) ব্যক্তির মর্যাদা রক্ষা করে দান করা: রমজান মাসে গোপনে দান-খয়রাত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে বলা হয়েছে صَدَقَهُ الِّسرِّ تُطْفِئُ غَضَبَ الرَّبِّ গোপনে আদায়কৃত দান-সদকা আল্লাহর গজবের আগুনকে নিভিয়ে দেয়।
৩) সর্বোত্তম দান: পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে: لَن تَنَالُواْ الْبِرَّ حَتَّی تُنفِقُواْ مِمَّا تُحِبُّون তোমরা কখনোই ধর্মনিষ্ঠ হতে পারবে না যতক্ষন না তোমরা ব্যয় করো যা তোমরা ভালোবাস তা থেকে।
৪) গরীবকে সহায়তা চাইবার আগেই দান করা: হাদিসে উল্লেখ আছে যে, ব্যক্তি মর্যাদা রক্ষার জন্য অভাবগ্রস্তদের হাজির হওয়ার আগেই তাদেরকে সাহায্য করা উত্তম।
৫) তাচ্ছিল্যতা না করে দান: পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে: یَا أَیُّهَا الَّذِینَ آمَنُواْ لاَ تُبْطِلُواْ صَدَقَاتِکُم بِالْمَنِّ وَالأذَی হে ঈমানদারগণ! তোমরা অনুগ্রহের কথা প্রকাশ করে এবং কষ্ট দিয়ে নিজেদের দান খয়রাত বরবাদ করো না
৬) দরিদ্র আত্মীয়দের সাহায্য করা
নবী (সা.)-কে জিজ্ঞেস করা হয়, কোন দান সর্বোত্তম? তিনি বললেনঃ عَلی ذِی الرَّحِمِ الْکاشِحِ দরিদ্র আত্মীয়দের প্রতি দান। এখানে উভয় অর্থই বোঝানো হয়েছে, যদি কারো আত্মীয় অভাবগ্রস্থ থাকে, অবশ্যই সাহায্য করার ক্ষেত্রে তাকে প্রাধান্য দিতে হবে। যদি তার সাথে ব্যক্তিগত বা পারিবারিক সমস্যা থাকে তাহলে সমঝোতার মাধ্যমে দূর করতে হবে।
হাদীস শরীফে উল্লেখ আছে যে: لا صَدَقَهَ وَذُو رَحِمٍ مُحْتاج যতক্ষণ কোন আত্মীয় অভাবগ্রস্ত থাকবে ততক্ষণ অন্য কাউকে দান করা জায়েয নয়।
৭) স্থান ও সময়ের দিকে খেয়াল রাখা:
দান-সদাকা সহ অন্যান্য ইবাদতের ক্ষেত্রে সময় ও স্থানের কারণে সওয়াবে তারতম্য পাওয়া যায়। আর তাই এই রমজান মাসের অতিক্রমকারীগন যেন এর দিনে ও রাতে মানুষের সেবা, মুমিনদের সমস্যা সমাধান ও গরীব-দুখীদের দান-খয়রাত করার ব্যাপারে অবহেলা না করে।
*কানযুল মারাম ফি আমালী শাহরিস সিয়াম গ্রন্থ হতে গৃহীত