আমিরুল মু’মিনিন হযরত আলী বলেছেন, আমি তোমাদের বায়তুলমাল থেকে দুটি গামছা ছাড়া আর কিছুই ব্যবহার করি নি। তিনি মুসলিম বিশ্বের খলিফা হওয়া স্বত্বেও নিজের জুতা নিজে সেলাই করতেন এবং তাই পরতেন।
মুসলিম জাহানের খলিফা হযরত আলীর ছোটভাই আকীল একদিন তার কাছে এসে নিজের অনেক অভাব অভিযোগের কথা জানালেন এবং তাকে কিছু সাহায্য দেয়ার অনুরোধ করলেন। হযরত আলী বললেন, জনগণের সম্পদের কোষাগার বায়তুল মাল থেকে আমি তোমাকে এক কপর্দকও দিতে পারবো না। মাসের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা কর।
আমি বেতন পেলে তা থেকে তোমাকে কিছু দেয়া হবে। হযরত আকীল বললেন, আপনি নিজের বেতন অগ্রিম নিয়ে নিন। হযরত আলী(আ.) বললেন, আমার বেতন অন্য সকলের বেতনের সাথে আসবে। অগ্রিম নেয়ার কোনো অধিকার আমার নেই। হযরত আকীল নাছোড়বান্দা। তিনি বললেন, একটা কিছু করুন। আমার সংসার চলছে না। যেভাবেই হোক আমাকে কিছু সাহায্য দিন।
ইমাম আলী(আ.) বললেন, বাজারের কোনো দোকান থেকে তালা ভেঙ্গে কিছু নিয়ে নাও। আকীল বললেন, ওটাতো চুরি বা ডাকাতি বলে গণ্য হবে। হযরত আলী(রা) বললেন, এই মুহূর্তে আমি যদি বায়তুল মাল থেকে তোমাকে কিছু দেই তবে তাও চুরি বা ডাকাতি বলে গণ্য হবে।
কেননা ওটা জনগণের সম্পদ এবং জনগণ আমাকে ওখান থেকে নেয়ার অনুমতি দেয় নি। এই বলে তিনি একটি গরম লোহা তার ভাইয়ের হাতের কাছে নিলেন, তখন তিনি তাপ অনুভব করে বললেন, আমাকে পোড়াতে চাও। ইমাম আলী(আ.) বললেন, তুমি কি আমাকে জাহান্নামের আগুনে পোড়াতে চাও।
এরপর হযরত আকীল মুয়াবিয়ার নিকট গেলে সে তাকে একশো দিরহাম দিয়ে বলে, তুমি মসজিদে দাঁড়িয়ে সকলকে জানাবে যে, আলীর কাছে সাহায্য চেয়ে পাইনি, কিন্তু মুয়াবিয়ার কাছে চেয়ে পেয়েছি।
ইত্যবসরে হযরত আকীল ইমাম আলীর(আ.) বক্তব্যের যৌক্তিকতা বুঝতে পেরে মসজিদে দাঁড়িয়ে বললেন, আমি আলীর(আ.) কাছে অন্যায়ভাবে সাহায্য চেয়েছিলাম। কিন্তু তিনি খোদাভীতিকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন।
আর মুয়াবিয়ার কাছে সাহায্য চাইলে সে খোদাভীতির পরিবর্তে নিজের নামযশ ও বড়াইকে অগ্রাধিকার দিয়েছে।