ইসলাম গ্রহণের পর রুকসানা নিজের নাম রাখেন শায়মা। ইসলাম গ্রহণকালে নানা প্রতিকূল পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হলেও একজন মুসলিম হিসেবে তিনি অত্যন্ত সুখী জীবন পার করছেন। পারিবারিক জীবনে আট সন্তানের মধ্যে ছয় সন্তানই যমজ হয়ে জন্ম নেয়। তাই সন্তানদের দেখাশোনায় অনেক দুঃখ-কষ্ট পোহাতে হয় তাকে।
শৈশবে পোল্যান্ড থেকে সপরিবারে জার্মানির রাজধানী বার্লিনে পাড়ি জমান রুকসানা। সেখানে এক তুর্কি যুবকের সঙ্গে রুকসানার বিয়ে হয়। বর্তমানে স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে রুকসানা বার্লিনে বসবাস করছেন।
পারিবারিকভাবে একজন খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী হিসেবে বেড়ে ওঠেন রুকসানা। তাই মহান আল্লাহর প্রতি আগে থেকেই বিশ্বাস ছিল। কিন্তু এ বিশ্বাস এখনকার মতো গভীর ছিল না। মুসলিম হওয়ার পর ননদের কাছে ইসলাম সম্পর্কিত নানা বিষয় শেখার চেষ্টা করেন।
রুকসানা বলেন, মুসলিম হওয়ার পর আমি দীর্ঘ পাঁচ মাস শুধু বই পড়েছি। অভিজ্ঞ ও জ্ঞানী ব্যক্তিদের দেখলে বেশি বেশি প্রশ্ন করতাম। তাদের কাছ থেকে পাওয়া প্রশ্নের উত্তর আমার অন্তরে গভীরভাবে রেখাপাত করে। নিজের বিশ্বাস ও চিন্তা-চেতনায় আমূল পরিবর্তন ঘটায়। এরপর হিজাব পরা শুরু করি। বাবা-মা, বন্ধু-বান্ধবরা কী বলবে, তা না ভেবে নিজের ভেতর ও বাইরে ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে আসি। হিজাব পরে নিজেকে আকাশে ওড়া স্বাধীন পাখির মতো মনে হয়েছে। নিজের মধ্যে ব্যাপক আনন্দও উপলব্ধি করি।
২০০৪ সালে প্রথম সন্তান হয় রুকসানার। এরপর দ্বিতীয়বার গর্ভবতী হয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে প্রথমে তিনি চার যমজ সন্তানের কথা জানান। এরপর চিকিৎসক ছয় যমজ সন্তানের কথা জানান। চিকিৎসকের কথা শুনে রুকসানা বেশ অবাক হোন। পাশাপাশি সন্তানদের জীবন নিয়েও চিন্তিত হয়ে পড়েন।
যমজ সন্তানদের সুস্থতা নিয়ে চিকিৎসকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন। হয়তো তারা জন্মের পর মারা যাবে কিংবা প্রতিবন্ধী হয়ে থাকবে বলে জানান চিকিৎসকরা। কিন্তু রুকসানা মনে মনে বলেন, জীবন ও মৃত্যুর ওপর কারো হাত নেই।
ছয় যমজ সন্তান জন্মের পর রুকসানাকে দীর্ঘ তিন মাস হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়। আর সন্তানরা সুস্থভাবে বড় হয়। তবে একসঙ্গে সন্তানদের দেখাশোনা করতে গিয়ে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয় তাকে। সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি।