IQNA

৭ ঘণ্টা পর ফিলিস্তিনি শিশুর কণ্ঠে শোনা গেল ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনি

0:02 - May 19, 2021
সংবাদ: 2612811
তেহরান (ইকনা): রোববার ইসরাইল থেকে উড়ে আসা রকেটের আঘাতে বারবার সশব্দে কাঁপছে গাজার এলাকাটি। রিয়াদ এশকুন্তানা আর তার স্ত্রী নিজেদের সন্তানদের একটা ঘরে রেখে এলেন। তাদের মনে হয়েছিল সেই ঘরটিই সবচেয়ে নিরাপদ, রকেটের আওতার সবচেয়ে বাইরে।

অন্য ভাইবোনদের সঙ্গে সুজিও ছিল সেখানে। কিন্তু এত করেও সন্তানদের নিরাপত্তা দিতে পারেননি রিয়াদ এশকুন্তানা। রকেটের আঘাতে প্রথমে দুটি দেওয়াল, তারপর ছাদও ধসে পড়ে। ও ঘর থেকে স্পষ্ট শোনা যায় ছেলে জাইনের চিৎকার, ‘আব্বা! আব্বা!’ সুজিও ডাকে। কিন্তু মাঝে দেওয়াল ভেঙে পড়ে ধ্বংসস্তূপের আড়ালে থাকা সন্তানদের উদ্ধার করতে যেতে পারেননি রিয়াদ। ভবনটি ধসে পড়ার পর প্রতিবেশীরা এসে ইট-সুরকির নিচ থেকে চেনা মানুষগুলোকে উদ্ধারের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।

রিয়াদ খুব চেষ্টা করেও নিজের বেঁচে থাকার খবরটা তাদের জানাতে পারেননি। প্রায় ত্রিশ মিনিট পর প্রতিবেশীদের উদ্যোগেই পুলিশ আসে, উদ্ধারকর্মীরা আসে। ততক্ষণে কিছুটা শক্তি ফিরে পেয়েছেন রিয়াদ। ফলে তার কাতর আর্তনাদ শুনতে পান উদ্ধারকর্মীরা। বেঁচে যান রিয়াদ৷

উদ্ধার করে শিফা হাসপাতালে নেওয়া হয় রিয়াদকে। সেখানে তখন স্বজনদের ভিড়। এক শিশুকে আনতে দেখে নারীরা সেদিকে ছুটে যান, ‘ইয়াহিয়া নাকি? ইয়াহিয়া!’ চার বছরের ইয়াহিয়া তখন আর বেঁচে নেই। শুনে দুজন নারী সেখানেই অজ্ঞান৷

তারপর জাইনের খবর, মেয়ে ডানার খবর, স্ত্রীর খবরও জেনে রিয়াদের মনে হলো আর কেউ বেঁচে নেই। মনে হলো, সবাইকে হারিয়ে একা একা বেঁচে থাকার কী দরকার! বাড়ির সবাইকে চিনতেন বলে প্রতিবেশীরা জানতেন এখনও সুজি আছে ইট-সুরকির নিচে। তাই ভবন ধসে পড়ার সাত ঘণ্টা পরও চলছিল তাকে উদ্ধারের চেষ্টা।

উদ্ধারকর্মীরা ধংসস্তূপের ফাঁকফোকরে মুখ রেখে ‘আল্লাহু আকবর’ বলছেন। এখানে ওখানে খুঁজে খুঁজে হঠাৎ এক জায়গা থেকে শোনা গেল শিশুর দুর্বল কণ্ঠের মৃদু চিৎকার, ‘আল্লাহু আকবর!’

captcha