IQNA

ফিরোজ মিনার

বাংলার গৌরবময় মুসলিম শাসনের সাক্ষী

0:41 - March 22, 2023
সংবাদ: 3473506
তেহরান (ইকনা): ফিরোজ মিনার অখণ্ড বাংলায় মুসলিম শাসনামলের অন্যতম স্মৃতিনিদর্শক। মুসলিম বাংলার রাজধানী গৌড়ে (পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলা) অবস্থিত মিনারটি তৈরি করেন সুলতান সাইফুদ্দিন ফিরোজ শাহ (১৪৮৮-৯০ খ্রি.)। তিনি ছিলেন ইলিয়াস শাহি বংশের শেষ শাসক। এই শাসক পরিবারকে হাবশি দাস বংশও বলা হয়। ধারণা করা হয়, সুলতান ফিরোজ শাহের কোনো বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে ২৬ মিটার উঁচু মিনারটি তৈরি করা হয়। দিল্লির বিখ্যাত কুতুব মিনারের আদলেই ফিরোজ মিনার নির্মিত। মিনারটি নির্মাণে চিত্তাকর্ষক লাল বেলে পাথর ব্যবহার করা হয়েছে।
টাওয়ারটি তিনটি অনন্য অংশে বিভক্ত। নিচের বর্গাকার ভিত্তি অংশকে শোভিত করা হয়েছে ফুলেল নকশায়। অষ্টভুজাকার মধ্যভাগের নকশা করা হয়েছে কোরআনের আয়াত ও ক্যালিগ্রাফি দিয়ে। ওপরের গোলাকৃতির অংশে আছে একটি ব্যালকনি ও প্যারাপেট। মিনারটি গৌড়ের নগর দুর্গের বাইরে অবস্থিত। ধারণা করা হয়, মিনারের সন্নিটকে একটি মসজিদও ছিল এবং মিনারটি আজান দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হতো। কেননা মিনারের দক্ষিণ-পশ্চিম ঢিবির মধ্যে একটি দেয়াল পাওয়া যায়।
 
 
মিনারের নিম্নাংশ একসময় মর্মর পাথর দ্বারা আচ্ছাদিত ছিল। কিন্তু বর্তমানে তা মাটির ফলক দ্বারা পূর্ণ করা হয়েছে। নির্মাণকালে মিনারের প্রবেশ পথে একটি শাল কাঠের দরজা ছিল। মিনারটি উচ্চতায় পাঁচতলা। নিচের দিক থেকে তিনটি তলায় ১২টি পার্শ্বদেশ আছে। ওপরের শেষ তলাটি, যার অস্তিত্ব বর্তমানে নেই তা ছিল একটি উন্মুক্ত প্যাভিলিয়ন এবং তা গম্বুজ দ্বারা আচ্ছাদিত ছিল। মিনারের ভেতরের দিকে সর্পিল সিঁড়ি ওপরে উঠে গিয়েছে।
 
মিনারের দেয়ালগুলো খোপকৃত এবং এ খোপগুলো খাঁজবিশিষ্ট খিলান নকশায় অলংকৃত। এর সঙ্গে আছে ঝুলন্ত শিকল ও ঘণ্টার অলংকরণ। পাথরের দড়ি নকশার বন্ধনীতে আছে জাফরি নকশা, পাতা, গোলাপ নকশা এবং দন্ত নকশা। প্রবেশ দরজার খিলানে আছে তিনটি বড় আকারের গোলাপ। নীল টালির কাজ করা বলে মিনারটিকে ফিরোজা মিনারও বলা হয়। এ ছাড়া স্থানীয়রা মিনারটি পিরাসা মিনা ও চেরাগ মিনার নামেও চেনে।
 
বাংলা পিডিয়া অবলম্বনে
 
captcha