IQNA

কুরআনের সূরাসমূহ/৬৮

আল্লাহর কলমের শপথ

0:03 - March 25, 2023
সংবাদ: 3473517
কলম এবং যা কিছু লেখার কাজে ব্যবহৃত হয় তা মানুষের জন্য আল্লাহ কর্তৃক প্রদত্ত নিয়ামত সমূহের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ কলমের শপথ করেছেন যাতে আমরা সহজেই এর গুরুত্ব নির্ণয় করেতে পারি।

পবিত্র কুরআনের ৬৮তম সূরা’র নাম “কালাম”। ৫২টি আয়াত বিশিষ্ট এই সূরাটি পবিত্র কুরআনের ২৯তম পারায় অবস্থিত। এই সূরাটি মক্কী সূরা এবং নাযিলের ক্রমানুসারে এই সূরাটি দ্বিতীয় সূরা যা প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)এর উপর নাযিল হয়েছে।
সূরাটিকে “কালাম” নামকরণের পিছে কারণ হচ্ছে সূরাটির প্রথম আয়াতে শব্দটির উপস্থিতি আর আল্লাহ তায়ালা এই লেখার কলমের শপথ গ্রহণ করে উক্ত সূরাটির সূচনা করেছেন।
আল্লামা তাবাতাবাঈ তাফসীরে আল-মীযানে এই আয়াতে বর্ণিত কলম বলতে বিশেষ কোন কলমকে বোঝান নি বরং যে কোন বস্তু যা দিয়ে লেখনীর কাজ করা যায় বুঝিয়েছেন। সুতরাং কলম এবং কলম দিয়ে যা লিখিত হয় তা আল্লাহর সবচেয়ে বড় নেয়ামতের একটি এবং কলমের প্রতি আল্লাহর শপথ মূলত তার নেয়ামতের প্রতি শপথ। যেমনটা পবিত্র কোরানে বিভিন্ন জায়গায় আল্লাহ তার নেয়ামতের শপথ করেছেন যেমন: সূর্য, চন্দ্র, রাত ও দিন এমনকি ডুমুর ও জলপাইয়ের শপথ।
এই সূরাটির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, আল্লাহর রসুলের বিশেষ বৈশিষ্ট্যসমূহ বিশেষ করে তাঁর উত্তম চারিত্রিক গুণাবলীগুলোর প্রচার করা, নবীর দুষমন ও মুশরিকদের খারাপ বৈশিষ্ট্যগুলো বর্ণনা করা, আসহাবে জান্নাতের ঘটনা বর্ণনাকরা , মুশরিকদেরকে হুশিয়ার করা, কিয়ামতের স্মরণ করা, মুশরিকদের আযাব বর্ণনা করা, নবীকে মুশরিকদের কার্যক্রমে ধৈর্য ধারণ করতে বলা ও তাদের অনুসরণে নিষেধ করা।
মুশরিক কর্তৃক নবী (সা.)-কে পাগল অপবাদ দেয়ায় মহান আল্লাহ এই সূরাটিতে আয়াত নাযিলের মাধ্যমে তাঁকে সান্ত্বনা দেন এবং তাঁকে সুন্দর ওয়াদা দান করেন। পাশাপাশি মুশরিকদের অনুসরণ ও তাদের সাথে কথা বলতে নিষেধ করেন।
সূরাটি আল্লাহ কলম যা লেখনীর বস্তু তার শপথ গ্রহণের মাধ্যমে শুরু করেন এবং দ্বিতীয় আয়াতে রসুলের প্রতি আরোপিত দুষমনদের মিথ্যা অপবাদ প্রত্যাখ্যান করেন। অতঃপর আল্লাহ নবীর বৈশিষ্ট্যগুলোর প্রতি ইশারা করেন। বেশ কিছু স্থানে তিনি কাফের ও অত্যাচারীদের অবকাশ দেওয়ার বিষয়ে কথা বলেছেন, যা শেষ পর্যন্ত তাদের ক্ষতির কারণ হবে। তখন তিনি আসহাবুল জান্নাতের ঘটনা এবং তাদের গোনাহ, অপরাধ ও আল্লাহর স্মরণে অবহেলার কারণে পতিত বিপদগুলো উল্লেখ করেন।
“আসহাবুল জান্নাত”-র ঘটনা মূলত ইয়েমেনীয় একদল ধনী ব্যক্তিদের ঘটনা যাদের সবুজ শ্যামল বাগান ছিল। সেই বাগানটির মালিক ছিল একজন বৃদ্ধ। বাগানের উৎপাদিত ফসল থেকে যিনি তার প্রয়োজনমত ব্যবহার করতেন এবং বাকিটা অভাবগ্রস্তদের দান করে দিতেন। তার মৃত্যুর পর, তার সন্তানেরা সিদ্ধান্ত নেয় যে, বাগান থেকে উৎপন্ন সব ফসল তারাই ব্যবহার করবে এবং অভাবগ্রস্তদের বঞ্চিত করবে। তাদের এই হিংসার কারণে একরাতে বজ্রপাতের ম্যাধমে তাদের সমস্ত বাগান পুড়ে ছাই হয়ে যায়। তাদের মধ্য একভাই তাদেরকে আল্লাহর প্রতি আহবান করলে তারা তাদের কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হয় এবং তওবা করে।

ট্যাগ্সসমূহ: কুরআনের সূরাসমূহ
captcha