IQNA

মার্কিন গবেষণা

সঠিক নিয়মে নামাজ পড়লে মেরুদণ্ডের ব্যথা কমে

19:28 - May 19, 2023
সংবাদ: 3473773
তেহরান (ইকনা): সুন্নত নিয়মে নামাজ আদায় করলে মানুষের মেরুদণ্ডের নিম্নাংশের (কোমরের সঙ্গে সংযুক্ত) ব্যথা কমে বলে দাবি করেছেন একদল মার্কিন গবেষক।
তারা বলছেন, প্রতিদিন বিশ্বের প্রায় ১.৬ মিলিয়ন মুসলিম পাঁচবার পবিত্র নগরী মক্কার দিকে ফিরে তাদের হাঁটু ও কপাল মাটিতে নত করে (সিজদা)। মুসলিম পরিভাষায় যাকে সালাত বলে। ধর্মগ্রন্থে মুসলিমদের যেভাবে বলা হয়েছে, ঠিক সেভাবে নিয়মিত নামাজ আদায় করলে মেরুদণ্ডের নিম্নাংশের ব্যথা কমতে পারে। আমেরিকার বিংগহামটোন ইউনিভার্সিটি ও স্টেট ইউনিভার্সিটি অব নিউ ইয়র্কের যৌথ গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে। বিংগহামটোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে নামাজ বিষয়ক এই গবেষণার ফলাফল বিষয়ক এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য দেওয়া হয়েছে।
 
‘অ্যান অ্যার্গোনমি স্টাডি অব বডি মোশানস ডিউরিং মুসলিম প্রেয়ার ইউজিং ডিজিটাল হিউম্যান মডেলিং’ শীর্ষক গবেষণাপত্রের অন্যতম লেখক প্রফেসর মুহাম্মদ খুশনাভি বলেন, ‘ভেবে দেখার একটি দিক হলো, নামাজে শারীরিক অবস্থার পরিবর্তনের সঙ্গে ইয়োগা বা শরীরচর্চার পদ্ধতিগুলোর সঙ্গে মিল রয়েছে, যা মেরুদণ্ডের নিম্নাংশের ব্যথা কমার জন্য ব্যবহৃত হয়।’ তিনি বিংগহামটোন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিস্টেম সায়েন্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
 
তিনি আরো বলেন, ‘শারীরিক স্বাস্থ্য সামাজিক-অর্থনীতি, জীবনপ্রণালী ও ধর্মীয় বিষয়াবলি দ্বারা প্রভাবিত। এই গবেষণায় স্পষ্ট হয়েছে যে জীবনপ্রণালী ও শারীরিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং ধর্মীয় প্রার্থনার মধ্যে জোরালো সম্পর্ক রয়েছে। প্রার্থনা শারীরিক চাপ ও মানসিক উদ্বেগ কমাতে পারে। গবেষণায় এমনও দেখা গেছে, নিয়মতান্ত্রিক প্রার্থনা নিউরো-মাস্কুলস্কেটেলের কার্যকর প্রাতিষ্ঠানিক চিকিৎসা হিসেবে গণ্য হতে পারে।’
 
গবেষণায় বিশেষভাবে সেসব মুসলিম ইবাদতের ওপর আলোচনা করা হয়েছে যার সঙ্গে খ্রিস্ট ও ইহুদি ধর্মের প্রার্থনার সঙ্গে মিল রয়েছে এবং যা ইয়োগা ও ফিজিক্যাল থেরাপির অনুরূপ।
 
গবেষণাপত্রটি ‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল এবং সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ারিং’-এর সর্বশেষ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে। এই গবেষণা প্রকল্পে প্রফেসর খুশনভির সঙ্গে আরো কাজ করেছেন পেন স্টেট বেহরেন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক প্রফেসর ফয়সাল আকলান, ইউনিভার্সিটি অব মিনিসোটা ক্রুকস্টনের বিজনেস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবদুল আজিজ আহমেদ।
 
গবেষণাটি ভারতীয়, এশীয় ও আমেরিকান যেসব সুঠাম নারী-পুরুষের মেরুদণ্ডের ব্যথা রয়েছে তাদের ডিজিটাল মডেলের ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয়েছে।
 
গবেষকরা প্রমাণ করেছেন, ‘নত হওয়ার ফলে মেরুদণ্ডের নিম্নাংশে অবশ্যই চাপ সৃষ্টি হয়। তবে ব্যথা প্রশমনের জন্য হাঁটু ও মেরুদণ্ডের মধ্যে যতটা কোণ তৈরি হওয়া প্রয়োজন তা সেজদায় পাওয়া যায়। কেননা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর অকুপেশনাল সেফটি অ্যান্ড হেলথ (এনআইওএসএইচ) মেরুদণ্ডে চাপ সৃষ্টির যে নিরাপদ সীমা নির্ধারণ করেছে সেজদার সময় শরীর সংকোচনের ফলে তার চেয়ে কম চাপ সৃষ্টি হয়।’ তবে তারা সতর্ক করে বলেন, ভুল পদ্ধতি ও ভুল নড়াচড়া মেরুদণ্ডের ব্যথা বাড়াতে পারে।
 
প্রফেসর খুশনভি বলেন, ‘সেজদার কারণে শরীরের জোড়াগুলোর স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি পায়। সুতরাং সেজদায় দীর্ঘ সময় ব্যয় করা উত্তম।’
 
সূত্র : বিংগহামটোন ডটএডু
captcha