IQNA

কুরআন কি? / ১

আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত গ্রন্থ

21:33 - May 24, 2023
সংবাদ: 3473789
তেহরান (ইকনা): কোন বই নিয়ে যখন আমরা ভাবি, সর্বপ্রথম আমাদের মনে যে প্রশ্নটি আসে, এই বইটির লেখক কে এবং কার?
কুরআন হল মুসলমানদের পবিত্র ধর্মীয় গ্রন্থ, যা দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর নিকট অবতীর্ণ হয়েছিল। 
পবিত্র কুরআনের বিষয়বস্তু এবং শব্দ সবকিছুই আল্লাহর ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল। এই গ্রন্থে কারো হস্তক্ষেপ বা পরিবর্তন করার অধিকার নেই, এমনকি নবীরও নেই। যেরূপ সূরা হাক্বার ৪৪ থেকে ৪৬নং আয়াতে পাঠ করে থাকি: وَلَوْ تَقَوَّلَ عَلَيْنَا بَعْضَ الْأَقَاوِيلِ لَأَخَذْنَا مِنْهُ بِالْيَمِينِ ثُمَّ لَقَطَعْنَا مِنْهُ الْوَتِينَ 
(আর তিনি যদি আমাদের নামে কোন বাণী রচনা করতে চাইতেন, --তাহলে আমরা নিশ্চয়ই তাকে ডানহাতে পাকড়াও করতাম, তারপর নিশ্চয়ই তার কন্ঠশিরা কেটে ফেলতাম,।)
পবিত্র কুরআনের আয়াতসমূহের বিশেষ কতিপয় বৈশিষ্ট্য রয়েছে; যা থেকে বুঝা যায় যে, আয়াতের বক্তা স্বয়ং আল্লাহ এবং এতে সন্দেহের অবকাশ নেই। যেমন-
১) আল্লাহ এই বইয়ের প্রেরক নির্দিষ্ট করেছেন: «إِنَّا نَحْنُ نَزَّلْنَا الذِّكْرَ؛ ما این قرآن را نازل کردیم» (সূরা হিজর: ৯)
২) কিছু ক্ষেত্রে, আল্লাহ সরাসরি নবীর হৃদয়ে কুরআন নাজিল করেছেন - কিছু ক্ষেত্রে, একজন মধ্যস্থতাকারীর (জিবরাইল আমিন) মাধ্যমে কুরআন নাজিল করেছেন। এবং এই মধ্যস্থতাকারী যে কুরআনের মধ্যে কোন কিছু যোগ বা বিয়োগ ছাড়াই পৌঁছেছেন তা নিশ্চিত করার জন্য তিনি সূরা বাকারায় বলেছেন: বলো -- “যে কেউ জিবরীলের শত্রু” -- কারণ নিঃসন্দেহ সে-ই আল্লাহ্‌র আদেশে উহা তোমার হৃদয়ে অবতীর্ণ করেছে" অবতীর্ণ হয়েছে" (বাকারা: ৯৭)।  এই আয়াতটি আল্লাহর পক্ষ থেকে জিবরাইলের অনুমোদন দেখায়।
৩) কোরান নাযিলের স্থান হল নবী (সা.) এর পবিত্র হৃদয়: আল্লাহ এটি স্পষ্ট করার জন্য সূরা নাজমের ৩ এবং ৪ নং আয়াতে বলেছেন, নবী (সা.) নিজের থেকে কিছু বলেন না এবং যে তিনি যা বলেন তা ওহীর বাক্য। وَمَا يَنْطِقُ عَنِ الْهَوَى إِنْ هُوَ إِلَّا وَحْيٌ يُوحَى؛
কিন্তু কোরান নাজিল বলতে কি বুঝায়? বিষয়টি মনোযোগ দিয়ে বুঝতে পারলে তা কুরআনের সারমর্ম আরও ভালভাবে বুঝতে সাহায্য করবে।
যখন নুযূল শব্দটি ব্যবহার করি, তখন অবশ্যই একটি উঁচু স্থান বা অবস্থান থাকতে হবে যেখান থেকে বস্তুটি তার চেয়ে নিচু স্থানে নেমে আসে এবং সেখানে স্থায়ী হয়।
এটা সত্য যে কুরআন এই পৃথিবীর ঊর্ধ্ব জগত থেকে অবতীর্ণ হয়েছে, কিন্তু এর মানে এই নয় যে, আল্লাহ আকাশে একটি স্থান আছে এবং সেই স্থান থেকে কুরআন নাজিল করেছেন।
"নুযূল" সম্পর্কে আরেকটি বিষয় হচ্ছে, কুরআনের নুযূল কি আকাশ থেকে নাজিল আল্লাহর অন্যান্য নেয়ামতের মত? অর্থাৎ আকাশ থেকে পৃথিবীতে যে বৃষ্টি বর্ষিত হয় তা কি কুরআনের মত? না। কুরআনের অবতরণ অন্যান্য বস্তুর অবতারণের মতো নয়। আল্লাহ পৃথিবীতে বৃষ্টি পাঠান, অর্থাৎ আকাশ থেকে যা পাঠানো হয় তার পাঠানোর পর পর আকাশের সাথে আর কোন সম্পর্ক থাকেনা। অর্থাৎ এই পানির বিন্দু আকাশে থাকে না। কিন্তু কুরআন সম্পর্কে বলতে হয় যে, আল্লাহ কুরআনকে পাঠিয়েই শেষ করে দেননি বরং  মুসলমানদের হাতে থাকা সত্ত্বেও আসমান ও জমিনের চেয়ে উচ্চতর ও মহান আল্লাহর সাথে এই গ্রন্থের সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে।
captcha