IQNA

 অতিথি নিবন্ধ

মাহদিয়ত বিষয়ে প্রথম পশ্চিমা লেখক

0:11 - June 12, 2025
সংবাদ: 3477547
ইকনা- আখেরি যামান ও এক ত্রাণকর্তার আবির্ভাবের ধারণা মানব ইতিহাসে সর্বদা এক অনন্য ও মহৎ স্থান দখল করে এসেছে—বিশ্বের নানা প্রান্তের চিন্তাশীল মন ও বুদ্ধিজীবীদের হৃদয়ে এটি এক গভীর বিশ্বাস ও ভাবনার বিষয় হয়ে বিরাজমান।

 

 

আখেরি যামান ও এক ত্রাণকর্তার আবির্ভাবের ধারণা মানব ইতিহাসে সর্বদা এক অনন্য ও মহৎ স্থান দখল করে এসেছে—বিশ্বের নানা প্রান্তের চিন্তাশীল মন ও বুদ্ধিজীবীদের হৃদয়ে এটি এক গভীর বিশ্বাস ও ভাবনার বিষয় হয়ে বিরাজমান। এই ধারণার মাহাত্ম্য কেবলমাত্র এর অন্তর্নিহিত তাৎপর্যেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি আব্রাহামীয় তিনটি ধর্মের মাঝে এক সেতুবন্ধন রচনা করেছে—যা বিশ্বাসের স্তরে তাদের ঐক্য প্রকাশ করে।

 

খ্রিষ্টধর্মে যিশু খ্রিষ্টের প্রতিশ্রুত প্রত্যাবর্তন, ইহুদি বিশ্বাসে মাশিয়াহর আগমন, আর ইসলামে ইমাম মাহদির আবির্ভাব—এইসবই এমন গভীর আকাঙ্ক্ষা, যা যুগে যুগে ধর্মপ্রাণ মানুষের হৃদয়ে আশার দীপ্তি জ্বালিয়ে রেখেছে।

 

সাম্প্রতিক কালে, ইসলামের প্রতি ক্রমবর্ধমান ঝোঁক এবং কিছু ঘটনাপ্রবাহ—যেমন মাহদির দাবিদারদের উত্থান (যেমন সুদানের মাহদি), ইরানে ইমাম খোমেনি(র) নেতৃত্বে ইসলামি বিপ্লব, কিয়ামতকেন্দ্রিক তাকফিরি গোষ্ঠীর আবির্ভাব ও বিস্তার, কিংবা জাতিসংঘে ইরানের রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের মতো রাজনৈতিক-ধর্মীয় মুহূর্ত—এসবই পশ্চিমা দুনিয়ার দৃষ্টিকে শিয়া তথা ইসলামি মেসিয়ানিজমের দিকে গভীরভাবে আকৃষ্ট করেছে।

 

এই প্রেক্ষাপটে, প্রায় ১৪০ বছর পূর্বে, ফ্রান্সের সোরবোন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, ইহুদি-জন্মগ্রহণকারী বিশিষ্ট পণ্ডিত জেমস ডারমেস্টেটার ইতিহাসে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। তিনি তাঁর রচিত গ্রন্থ “Mahdi: Past and Present”-এর মাধ্যমে হয়ে ওঠেন মাহদিয়ত বিষয়ে একটি স্বতন্ত্র গ্রন্থ রচনাকারী প্রথম ওরিয়েন্টালিস্ট ও পশ্চিমা চিন্তাবিদ।

 

তাঁর দেখানো পথ অনুসরণ করে, ইগ্নাজ গোল্ডজিহার, হেনরি করবিন, উইলফ্রেড মাডেলুং, ইটান কোলবার্গ এবং ডেভিড কুক-এর মতো গবেষকরা মাহদাভিয়াত ও প্রতিশ্রুত ত্রাণকর্তা বিষয়ক ইসলামি দর্শনের গভীরে প্রবেশ করেন।

 

তবে লক্ষণীয় যে, অধিকাংশ পশ্চিমা গবেষক মাহদিয়তকে বিশ্লেষণ করেছেন ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে, অভিজ্ঞতালব্ধ (phenomenological) বা আধ্যাত্মিক-ধর্মতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে নয়।

এর পেছনে একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ নিহিত: বহু ওরিয়েন্টালিস্টই ইহুদি বা খ্রিষ্টান সায়োনিস্ট ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আগত, ফলে তাঁরা ইসলামি মাহদিকে তাঁদের নিজস্ব ধর্মীয় মসিহর প্রতিচ্ছবি নয়, বরং এক প্রতিদ্বন্দ্বী চরিত্র হিসেবে উপস্থাপন করতে আগ্রহী।

অথচ শিয়া দর্শনে, যিশু খ্রিষ্ট ফিরে আসবেন ইমাম মাহদির (আ.) সমর্থক ও অনুগত হিসেবে—যেখানে সংঘাত নয়, বরং সামঞ্জস্য ও ঐক্যের এক পরিপূর্ণ চিত্র ফুটে ওঠে।

 

সম্পর্কিত প্রবন্ধ:

আমরা কি ইমাম মাহদির জন্য আমাদের কর্তব্য পালন করেছি?

@ASRZOHUR110

 @rahyafte_en

captcha