
বর্তমানে স্থানীয় ও অভিবাসী মিলে ইতালিতে প্রায় ১৫ লাখ মুসলিম বসবাস করে। জনসংখ্যার ২.৩ শতাংশ মুসলিম। ইতালিতে ছোট-বড় ৪৫০টি মসজিদ আছে।
ইতালি গোঁড়া ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের প্রাণকেন্দ্র ভ্যাটিকানের দেশ হলেও সেখানে মুসলমানের আগমন হয়েছিল খুব সহজেই।
সেটা সামরিক বিজয়ের মাধ্যমে হোক, যেমন সিসিলিতে অথবা ইসলাম প্রচারকদের মাধ্যমে হোক, যেমন দেশের অন্য অঞ্চলের মানুষের মধ্যে। বর্তমানে ইতালিতে ইসলাম প্রচারে ‘ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ইতালি’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ইসলাম প্রচারে তাদের অভাবনীয় সাফল্যের কারণেই তারা কয়েকবার চরমপন্থীদের হামলার শিকার হয়েছে। তারা ধৈর্য ও সহনশীলতার সঙ্গে ইসলাম প্রচার করে যাচ্ছে।
যেসব ইতালীয় ইসলামের বিরুদ্ধে অযৌক্তিক অভিযোগ উত্থাপন করে, ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র যুক্তির সঙ্গে তা খণ্ডন করে। পাল্টা আক্রমণের পরিবর্তে তারা চরমপন্থীদের সামনে ইসলামের সৌন্দর্য তুলে ধরে। এ ছাড়া ইসলামী শিক্ষার বিস্তারে ইতালিতে কয়েকটি ইসলামিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও কাজ করে যাচ্ছে।
ইতালিতে মুসলিম সোসাইটির সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, ইসলাম সম্পর্কে ইতালির শাসক ও রাজনীতিকদের স্বচ্ছ ধারণার অভাব। ফলে তারা ইসলাম বিষয়ে বেসরকারি টিভি চ্যানেল করার অনুমতি দেয় না।
ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র তাই একটি অনলাইন টিভি চ্যানেলের অনুমতি লাভের চেষ্টা করছে। তবে রমজানে কোথাও কোথাও প্রশাসন কিছুটা নমনীয়তা দেখায়। ফলে মুসলিমরা ইফতার তাঁবু করার অনুমতি পায়। কোনো জায়গায় তাঁবু করে তারাবির নামাজ আদায়ের অনুমতিও পাওয়া যায়।
রমজান মাসকে ইতালির মুসলিম ধর্মচর্চা ও ইবাদতের সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করে। এ সময় তারা মুসলিম দেশে তৈরি পণ্য ও খাবার গ্রহণ করে। শহরের মুসলিম হোটেল ও রেস্তোরাঁয় ইফতার ও সাহরি খায়। রমজান মাসে ইতালির মুসলিমদের আরবীয় খাবারগুলো বিশেষভাবে জনপ্রিয়। রমজান মাসে আরব দেশগুলো থেকে প্রচুর ইফতারসামগ্রী ইতালিতে যায়। যার উল্লেখযোগ্য অংশ যায় উপহার হিসেবে। ইতালির মুসলিম কমিউনিটিগুলো রমজানে ইসলামী বিষয়ে পাঠদানের ব্যবস্থা করে। সেখানে সাধারণত আরব আলেমদেরই আমন্ত্রণ জানানো হয়।
রমজান মাসে ইতালির মুসলিম অধিবাসীরা এবং বিভিন্ন দেশের মুসলিম অভিবাসীরা পরস্পরের কাছে আসার সুযোগ লাভ করে। সাধারণত তারা সবাই সপরিবারে মসজিদে ইফতারি করে। ইফতার অনুষ্ঠানে অভিবাসীরা নিজ নিজ দেশের ঐতিহ্যবাহী খাবার তৈরি করে নিয়ে আসে। মসজিদে তারাবির নামাজ আদায় করে ঘরে ফেরে। রমজান মাসে ইতালীয় মুসলিমরা দুই হাত খুলে দান করে। তারা অনুন্নত ও দুর্দশাগ্রস্ত মুসলিম অঞ্চলের জন্য দান করতে বেশি পছন্দ করে। ফিলিস্তিন ও আফ্রিকার দরিদ্র্য অঞ্চলের জন্য মোটা অঙ্কের অর্থ প্রদান করে তারা।
সূত্র : অ্যারাব নিউজ ও ইসলাম ওয়েব ডটনেট