IQNA

আমেরিকা সন্ত্রাসবাদ দমনে মোটেও আন্তরিক নয়: ইরানের সর্বোচ্চ নেতা

18:40 - April 12, 2016
সংবাদ: 2600597
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হযরত আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ি বলেছেন, বৃহৎ শক্তিগুলো বিশেষ করে আমেরিকা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বড় বড় কথা বললেও বাস্তবে তারা মোটেও আন্তরিক নয়। কিন্তু মুসলিম দেশগুলো পারস্পরিক আন্তরিক সহযোগিতার মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদের হুমকি মোকাবেলা করতে পারে। তিনি তেহরান সফরকারী কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট নুর সুলতান নাজার বায়েভকে দেয়া সাক্ষাতে এসব কথা বলেছেন। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা সন্ত্রাসবাদসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইরান ও কাজাখস্তানের মধ্যে সহযোগিতা বিস্তারের ওপর বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করেন।

বার্তা সংস্থা ইকনা: সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমেরিকা যে মোটেও আন্তরিক নয় তার প্রমাণ হিসেবে ইরাকে তৎপর আইএসআইএল বা দায়েশ সন্ত্রাসীদের হাতে মার্কিন অস্ত্র তুলে দেয়ার কথা উল্লেখ করেন আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ি। তিনি বলেন, আমেরিকা সন্ত্রাসবাদ বিষয়ে দ্বিমুখী নীতির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সন্ত্রাসবাদকে ভালো ও খারাপ এ দুই ভাগে ভাগ করেছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা ইউরোপীয় দেশগুলোতে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলা এবং ইরাক ও সিরিয়ায় তৎপর সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোতে ইউরোপীয় নাগরিকদের উপস্থিতির কথা উল্লেখ করে বলেছেন, এ থেকে বোঝা যায়, পাশ্চাত্য বিশেষ করে আমেরিকা সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় মোটেও আন্তরিক নয়।

 

বিশ্লেষকরা বলছেন, সন্ত্রাসবাদ বিষয়ে দ্বিমুখী নীতির কারণে মধ্যপ্রাচ্যসহ সারা বিশ্বে নিরাপত্তাহীনতা ও অস্থিরতা বেড়েছে। বর্তমানে বিশ্বের বহু দেশ সন্ত্রাসীদের হুমকির মুখে রয়েছে এবং সন্ত্রাসবাদের এখন আর কোনো সীমানা নেই। অর্থাৎ তাদের কর্মকাণ্ড বিশ্বব্যাপী। তবে সন্ত্রাসবাদ কিংবা উগ্রপন্থা বিস্তারের পেছনে অনেক কারণ রয়েছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্টকে দেয়া সাক্ষাতে বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসবাদ বিস্তারের কিছু কারণ তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, আইএসআইএল বা দায়েশের মতো সন্ত্রাসীদের বিষয়ে পাশ্চাত্যের দ্বিমুখী নীতি এবং নিজ অশুভ লক্ষ্য বাস্তবায়নে তাদের ব্যবহারের কারণে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে পড়েছে।

 

বিশ্লেষকরা বলছেন, সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, ইসলাম ধর্মের নামে সন্ত্রাসী বা জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো মুসলিম দেশগুলোতে তৎপর রয়েছে যা সবচেয়ে বিপদজনক। অথচ এ গোষ্ঠীই ইসলাম ও মুসলমানদের সবচেয়ে ক্ষতি করছে এবং বিভেদ সৃষ্টি করছে। অন্যদিকে পাশ্চাত্যের কয়েকটি বৃহৎ শক্তি চায় না মুসলিম দেশগুলো ঐক্যবদ্ধ থাকুক। এ অবস্থায় বিরাজমান হুমকি ও ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করা এবং উগ্রপন্থা বা জঙ্গিবাদের উৎস বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া জরুরী। কিন্তু অভিন্ন এ লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন পারস্পরিক সহযোগিতা ও আন্তরিকতা। এ ক্ষেত্রে সব দেশ যদি এগিয়ে আসে তাহলে সন্ত্রাসীদের মোকাবেলা করা সম্ভব। সব দেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ইরান পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়টিকে সবচেয়ে অগ্রাধিকার দেয়। এরই আলোকে ইরান ও কাজাখস্তানের সম্পর্কের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। ইরানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কাজাখ প্রেসিডেন্ট নুর সুলতান নাজার বায়েভের সঙ্গে সাক্ষাতে সম্পর্ক বিস্তারের নানা দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং তারা সবাই সহযোগিতার ওপর বিশেষভাবে জোর দিয়েছেন।

 

ইরান মনে করে, বর্তমানে সারা বিশ্বে ধর্মের নামে উগ্রবাদ নিপদজনক রূপ নিয়েছে। এ অবস্থায় আমরা যদি পরস্পরকে সহযোগিতা না করি তাহলে আমরা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হব। এ প্রসঙ্গে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা যৌক্তিক পন্থায় সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলার জন্য মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতার ওপর জোর দিয়েছেন। সূত্র: আইআরআইবি#

iqna


captcha