ইমাম জয়নুল আবেদীন (আ.) ইমামতিধারার ৪র্থ ইমাম; তিনি তৃতীয় ইমাম হযরত ইমাম হুসাইনের (আ.) সন্তান। তার প্রকৃত নাম আলী ইবনে হুসাইন (আ.)। তার অন্যতম উপাধি সাজ্জাদ অর্থাৎ অধিক সেজদাকারী এবং আরও একটি উপাধি হচ্ছে জয়নুল আবেদীন অর্থাৎ ইবাদতকারীদের অলংকার। কাজেই তার নাম ও উপাধি থেকে এটা সহজেই বুঝা যায় যে, তিনি ইবাদত-বন্দেগী এবং দোয়া-মুনাযাতের ক্ষেত্রে নজিরবিহীন স্বাক্ষর রেখেছেন।

বার্তা সংস্থা ইকনা: ইমাম সাজ্জাদ (আ.) হিজরি ৩৮ সনের ৫ই শাবান মদিনায় জন্মগ্রহণ করেন। এবং ৯৪ সনের ২৫শে মুহররম তৎকালীন জালিম শাসক ওয়ালিদ বিন আব্দুল মালেকের নির্দেশে বিষ প্রয়োগে শাহাদত বরণ করে এবং তাকে মদিনার জান্নাতুল বাকীতে সমাধিস্থ করা হয়।
ইমাম সাজ্জাদ (আ.) আল্লাহর দরবারে ইবাদত-বন্দেগী এবং দোয়া ও মুনাযাতের ক্ষেত্রে ছিলেন অতুলনীয়। তিনি গভীর রজনীতে ইবাদতে মগ্ন এবং দিনে রোজা পালনে ব্যস্ত থাকতেন। তিনি নামাযে যখন সেজদাবনত হলেন তখন অধিক সময় ধরে আল্লাহর হামদ ও জিকির পাঠ করতেন। যখন তিনি নামাযের জন্য দাঁড়াতেন তখন তার সারা শরীর কম্পিত হত; জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলতেন যে, তোমরা কি জান না যে, আমি এমন মহান প্রতিপালকের সম্মুখে নামাযের জন্য দাঁড়িয়েছি, সৃষ্টি জগতের সব কিছুই তার হস্তগত।
দয়া, মহানুভবতা, পরহেজগারীতা, তাকওয়া, ন্যায়নিষ্ঠা প্রভৃতি ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন তার যুগে সর্ব শীর্ষে। তিনি এমনই এক সময় জীবন যাপন করছিলেন যখন বনি উমাইয়ার শাসন ছিল এবং আহলে বাইতের (আ.) জন্য এ যুগই ছিল অত্যন্ত শ্বাসরুদ্ধকর। বনি উমাইয়া সব সময় নবী পরিবারের সাথে শত্রুতা ও দুশমনিতে সিদ্ধহস্ত ছিল। ফলে ইমাম সাজ্জাদের (আ.) জন্য প্রকাশ্যে মানুষকে দিকনির্দেশনার দায়িত্ব পালন করা আদৌ সম্ভব ছিল না। তাই তিনি একাগ্রে দোয়া ও মুনাযাতের মাধ্যমে মানুষকে হেদায়েত ও দিকনির্দেশনার দায়িত্ব পালন করতেন। যদি তার দোয়াসমূহ বিশ্লেষণ করা হয়, তাহলে দেখা যাবে যে, তার দোয়ার ভাষাগুলো অত্যন্ত গভীর ও দিকনির্দেশনামূলক। দিবে যে তুমি যা করেছো সব আল্লাহর জন্যে করেছো আর তার কাছ থেকে যা শিখেছ তা মানুষের দেখানোর জন্য নয়। সূত্র: shabestan