IQNA

ইসরাইলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবিতে জর্দানে ব্যাপক বিক্ষোভ

20:14 - August 05, 2017
সংবাদ: 2603574
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: জর্দানের বিক্ষোভকারী জনতা ইসরাইলি দূতাবাস বন্ধ এবং আম্মান-তেলআবিবের মধ্যকার কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক পুরোপুরি ছিন্ন করার দাবি জানিয়েছে।

ইসরাইলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবিতে জর্দানে ব্যাপক বিক্ষোভ
বার্তা সংস্থা ইকনা: রাজধানী আম্মানে হাজার হাজার মানুষ গতকাল (শুক্রবার) ইসরাইলি দূতাবাস ভবনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে দূতাবাসের নিরাপত্তা রক্ষীদের গুলিতে জর্দানের দুই নাগরিক হত্যা এবং আল আকসা মসজিদে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি দমন পীড়নের নিন্দা জানিয়েছে। বিক্ষুব্ধ জনতা ইসরাইলের সঙ্গে জর্দানের গ্যাস চুক্তিরও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। তাদের হাতে যেসব প্ল্যাকার্ড ছিল তাতে লেখা ছিল "ইসরাইলি গ্যাস মানেই ইসরাইলি আগ্রাসন।" তারা অভিযোগ করেছে, দখলদার ইসরাইল থেকে গ্যাস আমদানি করার অর্থই হচ্ছে আগ্রাসী এই শক্তির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়া এবং ফিলিস্তিনিদের সম্পদ জবর দখলে ইসরাইলের সঙ্গে শরীক হওয়া।

জর্দানে ইসরাইল বিরোধী এই প্রতিবাদ বিক্ষোভের পাশাপাশি ৮২ জন পার্লামেন্ট সদস্যও সরকারের কাছে লেখা এক চিঠিতে সেদেশ থেকে ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন। গত ২৩ শে জুলাই আম্মানে অবস্থিত ইসরাইলি দূতাবাসের নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে জর্দানের দুই নাগরিক নিহত হয়। জর্দানের জনগণ গতকাল ইসরাইল বিরোধী বিক্ষোভ করে দখলদার এই শক্তির প্রতি তাদের ঘৃণা এবং ইসরাইলের সাথে জর্দানের কর্মকর্তাদের আপোষকামী মনোভাবের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। মিশরের পর জর্দান হচ্ছে দ্বিতীয় আরব দেশ যারা কিনা ইসরাইলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক স্থাপন করে রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রেখেছে। জর্দানের জনগণ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন পতাকা পুড়িয়ে বহুবার ইসরাইল বিরোধী বিক্ষোভ করে তেলআবিবের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, জর্দানের জনগণের প্রতিবাদ বিক্ষোভ থেকে বোঝা যায়, ইসরাইল আরব দেশগুলোর সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখলেও এ সম্পর্ক কেবল সরকারের গণ্ডির মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে এবং জনগণ এটাকে কখনই স্বাগত জানায়নি। এমনকি কোনো কোনো দেশের সংসদেও ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ হয়েছে। আম্মান থেকে ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত বহিষ্কারে জর্দানের সংসদের আহবানকে এরই আলোকে মূল্যায়ন করা যায়।

ইসরাইলের সাথে জর্দানের সম্পর্কের ফল হচ্ছে এতে করে ইসরাইল অপরাধযজ্ঞ চালানোর ক্ষেত্রে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। দূতাবাসে ইসরাইলি নিরাপত্তা রক্ষীর গুলিতে জর্দানের দুই নাগরিক নিহত হওয়ার ঘটনাই এর প্রমাণ। এ ছাড়া, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও এর কুফল লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ১৯৯৪ সালে জর্দান ও ইসরাইলের মধ্যে আপোষ হওয়ার পর রাজনৈতিক সম্পর্ক ছাড়াও দু'পক্ষের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতার ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে। বর্তমানে জর্দান হচ্ছে ইসরাইলি পণ্যের অন্যতম বড় ক্রেতা। এ কারণে দেশটির জনগণ ইসরাইলের ওপর প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়ে আছে।

মধ্যপ্রাচ্যের ঘটনাবলী থেকে বোঝা যায়, এ অঞ্চলে ইসরাইলি গণজাগরণ শুরু হওয়ার পর দখলদার ইসরাইলের মোকাবেলায় মুসলিম বিশ্বের নিজস্ব শক্তি সামর্থ্য কাজে লাগানোর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া, মুসলিম দেশগুলোর জনগণের পক্ষ থেকে ইসরাইলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপেরও দাবি উঠেছে। পার্সটুডে
captcha