IQNA

যে কারণে আগের নাম বহাল রাখলেন বেলারুশ নওমুসলিম নারী

0:02 - July 08, 2021
সংবাদ: 3470275
তেহরান (ইকনা): ইমাম রেজা (আ)'র পবিত্র মাজার জিয়ারতের দিবসে (২৩ জিলকদ, রোববার) এই মাজারে এসে বেলারাশিয়ার একজন খ্রিস্টান যুবতী ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। ওই মাজারের তথ্য বিভাগ এই খবর দিয়েছে।

'আনাস্তাসিয়া শোরসোভা' (Anastasia Shorsova) নামের বেলারুশ এই নারী পবিত্র মাশহাদ সফরে এই মাজারে এসে ইসলাম ধর্মের প্রধান ও অপ্রধান নানা দিক ও এই ধর্ম গ্রহণের বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের কাছে জানতে চান। রুশ ভাষায় তার প্রশ্নগুলোর জবাব দেন ধর্ম বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা।

বেলারুশ এই নারী বলেছেন, আমি অনেক পড়াশুনা ও গবেষণার পর বুঝতে পেরেছি যে ইসলাম ধর্মই শ্রেষ্ঠ ও পরিপূর্ণতম ধর্ম। এ ছাড়াও তিনি মাজহাব হিসেবে ১২ ইমামি শিয়া মুসলিম মাজহাবকে বেছে নেয়ার কথাও জানান। তিনি ৫ মাস আগে প্রথমবারের মত মাশহাদে এসেছিলেন।

দ্বিতীয় বার মাশহাদে আসতে পেরে তিনি তার গভীর আনন্দের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, এমন আসমানি বা ঐশী স্থানে দ্বিতীয় বার আসতে পেরে আমি খুবই খুশি, আমি যেন আমার হারানো সত্ত্বাকেই ফিরে পেয়েছি!

বেলারুশ এই নারী মুসলমান হওয়ার পর নতুন কোনো নাম বেছে নেননি। কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, তার ওই বেলারুশ নামের অর্থ হল দ্বিতীয় জন্ম বা পুনর্জন্ম এবং এই নামটি তার মা রেখেছিলেন; আর মুসলমান হওয়ার বিষয়টি তার কাছে এই নামটিরই সমার্থক তথা পুনর্জন্ম হওয়ার সমতুল্য।

ইসলাম ধর্ম গ্রহণের ওই অনুষ্ঠানে ইমাম রেজার মাজার কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এই নওমুসলিমকে কয়েকটি তবাররুক উপহার দেয়া হয়। এসবের মধ্যে রয়েছে: রুশ ভাষায় নামাজ শিক্ষা, 'চল্লিশটি হাদিসে কুদসি' নামক বই, পরিবার সম্পর্কে ইমাম রেজার হাদিস (ইংরেজি), ইমাম খোমেনীর (র.) জীবনী, ইমাম রেজার মাজারের বিভিন্ন দিকের দৃশ্যের ছবি ইত্যাদি।

মহানবীর (সা) পবিত্র বংশধারায় তথা আহলে বাইতের ধারায় জন্ম নেয়া সদস্য হযরত ইমাম রেজার পবিত্র মাজারে প্রতি বছর অনেক অমুসলিম ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করছেন। খ্রিস্টিয় অষ্টম ও নবম শতকের এই মহান ইমাম আব্বাসিয় খলিফা হারুন আর রশিদের পুত্র মামুন-এর সমসাময়িক। মামুন তাঁকে রাজনৈতিক স্বার্থে নিজের উত্তরাধিকারী ঘোষণা করলেও পরে তাঁকে গোপনে বিষ প্রয়োগে শহীদ করে।

প্রায় হাজার বছর আগে লিখিত 'শাওয়াহেদুন্নবুওয়াত' নামক বইয়ে বর্ণিত এক হাদিসে এসেছে, যারা ইমাম রেজা (আ.)'র মাজার জিয়ারত করবে তারা বেহেশতবাসী হবে। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) ইরানের খোরাসানে তাঁর শরীরের একটি অংশকে তথা তাঁর পবিত্র বংশধারার একজন সদস্যকে দাফন করা হবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করে গেছেন। একই বইয়ে ইরানের কোম শহরে হযরত ফাতিমা মাসুমা (সা.)’র পবিত্র মাজার জিয়ারতকারীও বেহেশতবাসী হবেন বলে হাদিস রয়েছে। এই ফাতিমা মাসুমা ছিলেন ইমাম রেজা-আ.’র ছোট বোন। মাসুমা বা নিষ্পাপ ছিল তাঁর উপাধি।

বিশিষ্ট কবি ও আধ্যাত্মিক সাধক মাওলানা আবদুর রহমান জামির লিখিত ওই বইটি বহু বছর আগে বাংলা ভাষায়ও অনূদিত হয়েছে ( মরহুম মাওলানা মহিউদ্দিনের মাধ্যমে) (পৃ.১৪৩-১৪৪)। [এ বইয়ের ২৭২ পৃষ্ঠায় ইরানের পবিত্র কোম শহরে অবস্থিত হযরত ফাতিমা মাসুমা (সা.)’র পবিত্র মাজার জিয়ারত সম্পর্কিত বক্তব্য দ্রষ্টব্য।] পার্সটুডে

captcha