জাকার্তার গভর্নরের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ পুলিশের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: প্রাথমিক তদন্ত শেষে পুলিশ বলেছে, গভর্নর জাহাজা বাসুকি পুরনামার বিরুদ্ধে ওঠা ইসলাম অবমাননার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
যুগান্তরের উদ্ধৃতি দিয়ে বার্তা সংস্থা ইকনা: কোরআন অবমাননার অভিযোগে জার্কার্তার খ্রিস্টান গর্ভনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনেছে ইন্দোনেশীয় পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্ত শেষে পুলিশ বলেছে, গভর্নর জাহাজা বাসুকি পুরনামার বিরুদ্ধে ওঠা ইসলাম অবমাননার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এজন্য তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।
বিচারে দোষী প্রমাণিত হলে চীনা বংশোদ্ভূত খ্রিস্টান গভর্নর পুরনামার পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। খবর রয়টার্স ও আল জাজিরার।
বিশ্বের সর্ববৃহৎ মুসলিম জনসংখ্যার দেশ ইন্দোনেশিয়া। এর রাজধানী জাকার্তার গভর্নর পদে আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনকে সামনে রেখে খ্রিস্টান পুরনামাকে ভোট না দিতে কুরআনের একটি আয়াতের বরাত দেন তার প্রতিদ্বন্দ্বীরা।
গত সেপ্টেম্বরে এই বরাতকে মিথ্যা বলে মন্তব্য করে বিতর্কের জন্ম দেন পুরনামা। যাকে কেন্দ্র করে গত ৪ নভেম্বর অন্তত এক লাখ মুসলিম বিক্ষোভ করে। তারা পুরনামার পদত্যাগ দাবি করেন এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে পুনর্নির্বাচিত না করার আহ্বান জানান।
ওই সময় বিক্ষোভকারীরা নগরীর ইসতিকলাল মসজিদ থেকে মিছিল বের করে প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ পর্যন্ত যান। তাদের বাধা দেয় ২০ হাজার পুলিশ। এক পর্যায়ে উভয়পক্ষে সংঘর্ষ বাঁধলে একজন বিক্ষোভকারী নিহত ও ১২ জন আহত হন।
বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দেশটির প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো তার অস্ট্রেলিয়া সফর বাতিল করেন। এ সময় গভর্নর পুরনামার বিরুদ্ধে ধর্ম অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়া হয়।
এরপর সপ্তাহব্যাপী তদন্ত চালায় ইন্দোনেশীয় পুলিশের জাতীয় অপরাধ তদন্ত বিভাগ। এ সময় গভর্নর পুরনামাকে দেশত্যাগ না করতে বলা হয়।
প্রাথমিক তদন্ত শেষে জাতীয় অপরাধ তদন্ত বিভাগের প্রধান আরি দোনো সুকমান্তো বলেছেন,
পুরনামার ধর্ম অবমাননার অভিযোগের বিচার উন্মুক্ত আদালতে হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এ বিচারের জন্য ধর্মীয় আলেম এবং মনোরোগ বিশেষজ্ঞসহ বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, গভর্নর পুরনামার ক্ষমতার পৃষ্ঠপোষক হিসেবে পরিচিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ওঠায় বিপাকে পড়েছেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো। তিনি বিচারের মাধ্যমে মুসলিমদের আশ্বস্ত করে নিজেকে বিতর্কমুক্ত রাখার চেষ্টা করছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
