IQNA

‘তাজমহলে নামাজ বন্ধ করুন, নয়তো শিব পুজার অনুমতি দিন’

14:00 - October 27, 2017
সংবাদ: 2604176
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: এবার তাজমহলে নামাজ পড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার দাবি তুলেছে ভারতের উগ্র কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন- রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)। নামাজ পড়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি না-হলে তাজমহলে শিবের পুজা করতে দিতে হবে বলেও দাবি তুলেছে তারা।

বার্তা সংস্থা ইকনা: রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের অখিল ভারতীয় ইতিহাস সংকলন সমিতির সচিব ড. বালমুকুন্দ পাণ্ডে শুক্রবার ইন্ডিয়া টুডেকে দেয়া সাক্ষাত্‍কারে বলেছেন, ‘তাজমহল হল একটি জাতীয় ঐতিহ্য। কেন সেটিকে মুসলিমদের ধর্মীয় ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হবে? আগ্রার তাজমহলে নামাজ পড়ার অনুমোদন প্রত্যাহার করে নেয়া উচিত।’

বিতর্ক আরো উসকে দিতে তিনি বলেছেন, ‘তাজমহলে নমাজ পড়া হলে, শিবের পুজাও করতে দিতে হবে।’

পাণ্ডের দাবি, ‘এমন অনেক প্রমাণ রয়েছে যে তাজমহল একটা শিবমন্দির ছিল। আর এটি তৈরি করেছিলেন এক হিন্দু রাজা। তাজমহল মোটেই ভালোবাসার প্রতীক নয়। সম্রাট শাহজাহান তার স্ত্রী মমতাজ মহলের মৃত্যুর চার মাসের মধ্যেই ফের বিয়ে করেছিলেন। আমরা সমস্ত তথ্য-প্রমাণ জোগার করছি। খুব শিগগিরই সব জড়ো করতে পারব।’

দুদিন আগেই হিন্দু যুব বাহিনীর সমর্থকরা তাজমহলের ভেতরে দাঁড়িয়ে শিব চালিসা পড়তে গেলে তাদের বাধা দিয়ে বের করে দেন নিরাপত্তারক্ষীরা। হিন্দু বাহিনীর সমর্থকদের দাবি ছিল, তাজমহল সমাধিক্ষেত্রে পরিণত হওয়ার আগে শিব মন্দিরই ছিল।

তাজমহলকে শিব মন্দির বানানোর চেষ্টা

এর আগে তাজমহলকে শিব মন্দির দাবি করে আদালতেরও দ্বারস্থ হয়েছেন কেউ কেউ।

হিন্দুত্ববাদীদের প্রশ্ন- স্ত্রী মমতাজের স্মৃতির উদ্দেশ্যে কি সত্যিই তাজমহল বানিয়েছিলেন সম্রাট শাহজাহান? নাকি বিশ্বের এই অন্যতম আশ্চর্য আসলে একটি শিব মন্দির? এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে তার অবস্থান স্পষ্ট করার নির্দেশ দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশন।

ইতিহাসে এই বিতর্কের সমর্থনে কোনো প্রমাণ না পাওয়া গেলেও এবার তথ্য জানার অধিকার আইনে কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনের কাছে এ বিষয়ে আবেদন জমা পড়েছে। এই বিতর্কের মীমাংসা চেয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে এ বিষয়ে বক্তব্য স্পষ্ট করার কথা বলেন তথ্য কমিশনার শ্রীধর আচারিয়ালু।

সম্প্রতি বিকেএসআর আয়ানগর নামে এক ব্যক্তি আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ায় আরটিআই করে জানতে চায় যে তাজমহলের আসল নাম তেজো মহালয়া কিনা, যা সম্রাট শাহজাাহানকে রাজপুত রাজা মান সিং উপহার দিয়েছিলেন। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার কাছে এ বিষয়ে যা তথ্য আছে এবং এই সংক্রান্ত যত মামলা হয়েছে, তার এফিডেফিটও জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশন। এ বিষয়ে ১৭ শতকের নির্মাণ শিল্পের বিস্তারিত রিপোর্টও চাওয়া হয়েছে। তবে এর জন্য তাজমহলের যে ঘরগুলো বন্ধ অবস্থায় রয়েছে তা খোলা হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন তথ্য কমিশনার শ্রীধর আচারিয়ালু।

তাজ মহলের সুরক্ষিত অংশে অতীতে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে কোনো খনন কার্য হয়ে থাকলে তার বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশন। আরটিএনএন
captcha