তুর্কি প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেসব দেশ ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ও ঘৃণা ছড়াচ্ছে সেসব দেশকেও একদিন মুসলমানদের ভালোবাসা ও ন্যায়কামিতার মুখাপেক্ষী হতে হবে।
তুরস্ক ও ইসলামের বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে ইউরোপ: এরদোগান
তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান বলেছেন, তুরস্ক এবং ইসলামকে ভয় পেয়েই তুর্কিবিরোধী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে ইউরোপ।’
‘ইউরোপের ভয়, তারা ক্রমেই কর্তৃত্ব হারাচ্ছে, তাই তারা ভীত এবং যা কিছু তাদের থেকে ভিন্ন সেটার প্রতি তারা ক্রমেই শত্রুভাবাপন্ন হয়ে উঠছে, বলেও যোগ করেন তিনি। সম্প্রতি সেন্ট্রাল আনাতুলিয়ান প্রদেশে আয়োজিত এক জনসভায় এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বসনিয়ার স্রেব্রেনিচা গণহত্যায় নেদারল্যান্ডস কুকর্মের সহকারিতা সম্পর্কে তার অভিযোগ পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ডাচরা সেই ইহুদী, রোমান এবং এমনকি অতীতে খ্রিস্টধর্মের বিভিন্ন শাখার সম্প্রদায়দের অনুরূপ কুকর্ম করেছে।
‘গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার ও আইনের পাঠ কোন অধিকার ইউরোপের নেই। কেননা, তারা এখনো ফ্যাসিবাদের আত্মা ইউরোপের রাস্তায় ছড়াচ্ছে।’ উল্লেখ করেন এরদোগান।
‘আমরাই ইউরোপের ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার ও আইনের শাসনের সুরক্ষা বজায় রাখবো। যা ঐ মূল্যবোধ এখন আমাদের থেকে তাদের বেশি দরকার।’
তিনি জার্মান-স্যুইচ সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত ‘এগাইনস্ট এরদোগান’স ডিক্টেটরসীপ’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ প্রত্যাখ্যান করে এরদোগান বলেন, এখানে আমার কোনো ব্যক্তিগত বিষয় জড়িত নেই। এখানে যা হচ্ছে তার সরকার ব্যবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বর্তমান বিশ্বে যে কয়টি দেশ উদীয়মান প্রভাবশালী দেশের তালিকায় রয়েছে, এর মধ্যে তুরস্ক অন্যতম। তুরস্ক ক্রমেই পরাশক্তিতে পরিণত হচ্ছে। বিশেষ করে ইসলামপন্থী বলে পরিচিত একে পার্টি রাষ্ট্র ক্ষমতা গ্রহণের একের পর এক সংস্কারে দেশটি রাজনীতি ও অর্থনীতির দিক থেকে দেশটি অভুতপূর্ব উন্নতি লাভ করে। এমন কী একাধিক বার সেনা অভ্যুত্থানের ব্যর্থ প্রচেষ্টাও দেশটি অগ্রযাত্রাকে থামাতে পারেনি। ফলে দেশটি এখন পূর্ব-পশ্চিমা বিশ্বের পরাশক্তির জন্য অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখা দিয়েছে।
ইউরোপ-এশিয়াসহ বিশ্বের নানা ইস্যুতে তুরস্কের নাক গলানোর বিষয়টিও তারা ভাল চোখে দেখেনি। এতে অনেকটাই নাখোশ পরাশক্তিধর রাষ্ট্রগুলো। এর ফলে তারা তুরস্কের রাষ্ট্র ক্ষমতার পরিবর্তনে নানাভাবে কাজ করে আসছে। এমন অভিযোগ খোদ তুরস্কের বর্তমান ক্ষমতাসীনদের। গত বছরের ১৫ জুলাই ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার পেছনে পশ্চিমাদের যে হাত ছিল তা প্রকাশ্যে আনে ক্ষমতাসীনরা।
১৫ জুলাই
ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার পর সেভাবে সহযোগিতা কিংবা সমর্থন পায়নি
তুরস্কের ক্ষমতাসীনরা। তাই তারা প্রকাশ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং
ইউরোপের রাষ্ট্রগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছিল। সেই সঙ্গে তুরস্ক পশ্চিমা
বিশ্ব থেকে ক্রমেই মুখ ফিরিয়ে নিয়ে পূর্বের দিকে ঝুঁকছে। রাশিয়ার সঙ্গে
নানামুখী সম্পর্কের উন্নতি ঘটাতে মগ্ন। এরই মধ্যে নতুন করে ইউরোপের
রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। আরটিএনএন