যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি ধর্মীয় আদমশুমারি অনুসারে ২০০০-২০১০ সালে ইসলাম গ্রহণের হার শতকরা ৬৭ ভাগ বেড়েছে। সবচেয়ে দ্রুত বিকাশমান ধর্ম হিসেবে সেখানে মুসলিমদের সংখ্যা এক মিলিয়ন থেকে বেড়ে ২.৬ মিলিয়নে পৌঁছে। পিউ রিসার্চের পরিসংখ্যান মতে, ২০১৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমদের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পায়। এ সময় মুসলিমদের সংখ্যা বেড়ে ৩.৪৫ মিলিয়নে পৌঁছে।
মুসলিমদের সংখ্যা সবচেয়ে দ্রুত বিকাশমান হলেও ২০২০ সালের সরকারি পরিসংখ্যান মতে আমেরিকার মাত্র ১ শতাংশ মুসলিম। অন্যদিকে খ্রিস্টানদের সংখ্যা শতকরা ৭০ ভাগ। আর আমেরিকানদের ২৩ শতাংশ নিজেদের কোনো ধর্ম-বিশ্বাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত মনে করেন না। বরং তাঁরা নিজেদের নাস্তিক বা অবিশ্বাসী হিসেবে ভাবেন।
ওহাইও অঙ্গরাজ্যের কর্মী ডেমোক্রেটিক ন্যাশনালের প্রতিনিধি সিনথিয়া কোক্স উবালডো ১১ সেপ্টেম্বরের ঘটনার পর ইসলাম গ্রহণ করেন। ২০২০ সালে নির্বাচনের সময় মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিজিটিএন-কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে সিনথিয়া বলেন, ‘উগ্রবাদী মুসলিম সন্ত্রাসীরা আমেরিকায় হামলার পর আমি তা নিয়ে গবেষণা শুরু করি। তখন আমি এই ধর্মের মূলনীতি সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারি। আমি উপলব্ধি করি, যারা ১১ সেপ্টেম্বরের হামলায় অংশ নিয়েছে তাদের ইসলাম ধর্ম সমর্থন করে না।’
ইসলাম গ্রহণের পর শুধু মুসলিম হওয়ার কারণে উবালডো নানা রকম বৈষম্য ও মানহানিকর আচরণের মুখোমুখি হন। এমনকি পরিসংখ্যানেও জানা যায়, আমেরিকান মুসলিমদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের মাত্রা অনেক বেশি। ২০১৯ সালের পিউ রিসার্চের তথ্য অনুসারে, আমেরিকার বেশির ভাগ প্রাপ্তবয়স্ক মনে করেন যে মুসলিমরা অনেক বেশি বৈষম্যের মুখোমুখি হয়েছে। আর ৮২ শতাংশ মনে করেন যে মুসলিমরা কিছুটা বৈষম্যের মুুখোমুখি হন।
নিউ ইয়র্ক ডেইলি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইউনিভার্সিটি অব কেন্টাকির সহযোগী অধ্যাপক ইহসান বাগবি বলেন, ‘এই বৈষম্য মুসলিমদের মধ্যে সহনশীলতা তৈরি করেছে। আপনি আরো সুদৃঢ় প্রতিরোধ গড়তে পারবেন। আমি মনে করি, বিভিন্ন স্থানে মুসলিমবিরোধী পরিবেশ প্রকৃতপক্ষে মুসলিমদের আরো ধার্মিক করেছে।’ এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ধর্ম পরিসংখ্যানের বিশ্লেষক ডে জোন্স বলেন, ‘একটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের জন্য নিপীড়ন অনেক সময় কল্যাণকর। কারণ এতে করে আরো বেশি লোক তা গ্রহণ করে। এ ধরনের প্রক্রিয়া একটি আন্দোলন প্রতিরোধে খুবই কার্যকর হয়।’ সূত্র : সিজিটিএন