IQNA

কারবালার ব্যক্তিত্ব – ১

কারবালার পেক্ষাপটে মা’য়জুরিন

16:39 - September 19, 2022
সংবাদ: 3472495
তেহরান (ইকনা): কারবালার ঘটনায় অনেক শিক্ষা রয়েছে। ন্যায়-অন্যায়ের মধ্যকার এই ফ্রন্টে এমন একটি পরিস্থিতি ছিল যেখানে মানুষের ব্যক্তিত্ব তাদের পছন্দ ও আচরণের নিরিখে প্রকাশ পায়।

এখানে মা’য়জুরিন ব্যক্তিবর্গ বলতে, তাদের বোঝানো হয়েছে, যারা বিভিন্ন সমস্যা থাকার কারণে কারবালার প্রান্তে ইমাম হুাসইন (আ.)এর দলে যোগদান করতে পারেননি। উদাহরণস্বরূপ, মুখতার! তিনি কুফায় মুসলিম ইবনে আকিলকে স্বাগত জানিয়েছিলেন, কিন্তু ইমামের বিদ্রোহের সময় তিনি ইবনে জিয়াদের দ্বারা বন্দী হন। আর একারণে তিনি কারবালার বিপ্লবে অংশগ্রহণ করতে পারেননি। কিন্তু সুলাইমান বিন সারদের মত একজন ব্যক্তি কারবালার বিপ্লবকে ততটা গুরুত্বরে সাথে দেখেনি। তিনি বিশ্লেষণে ভুল করেছেন এবং পরবর্তীতে তিনি তাবেইনদের সাথে যোগ দিয়েছিলেন। ইমাম হুসাইন (আ.)-এর কিছু সমর্থকও ছিল যাদের পথ রুদ্ধ ছিল এবং তারা তাঁর সাহায্যে এগিয়ে আসতে পারেনি এবং কারবালার যুদ্ধ যে এতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেই খবর তাদের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছায়নি।
বনি হাশিমের মধ্যে এমন কিছু লোক ছিল, যাদের কারবালায় যাওয়ার কথা ছিল। এই ব্যক্তিদের মধ্যে আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রয়েছেন, যিনি বনি হাশিমের একজন সুনামধন্য ও বিশিষ্ট ব্যক্তি। তিনি ইমাম আলী (আ.)-এর অন্যতম সঙ্গী ছিলেন। হযরত যায়নাব (সা. আ.)-এর স্বামী আবদুল্লাহ ইবনে জাফরেরও কারবালায় উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি অসুস্থ থাকার কারণে কারবালায় উপস্থিত হতে পারেননি। মুহাম্মদ ইবনে হানাফিয়াও এই ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন, যদিও ইতিহাসে তাদের সম্পর্কে অভিন্ন কোনো মতামত নেই।
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাসের ক্ষেত্রে শিয়া মতবাদ ও বিতর্ক এবং আহলে বাইত (আ.)-এর প্রতি তার প্রতিরক্ষা অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশিত হয়েছে। অবশ্য কল্যাণের কারণে তিনি ইমামকে কুফায় যেতে নিরুৎসাহিত করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু ইমাম তাকে খবর পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব দেন। অবশ্য আবদুল্লাহ ইবনে জাফর এবং ইবনে হানাফিয়া সম্পর্কে বিশ্লেষণ করা হয়েছে, তবে মনে হয় তাদের উভয়েরই ইমাম হুসাইন (আ.)-এর সাথে যাওয়ার প্রয়োজনীয় বাসিরাত বা অন্তর্দৃষ্টি ছিল না।
যখন আবদুল্লাহ ইবনে জাফরকে জিজ্ঞেস করা হলো, কারবালা সম্পর্কে আপনার মতামত কি? তখন তিনি বললেন: আমি যদি নিজে উপস্থিত থাকতাম, ইমাম হুসাইন (আ.)-এর জন্য আমি আমার জীবন উৎসর্গ করতাম এবং এখন আমি খুশি যে আমার দুই সন্তান আউন ও মোহাম্মদ শহীদ হয়েছে। তিনি একজন শিয়া ছিলেন, কিন্তু তিনি ইমাম (আ.)-এর আদেশের প্রতি অনুগত ছিলেন না এবং মদীনা ও মক্কায় তৎকালীন সরকারের কাছ থেকে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর সুরক্ষার আমান-নামা’র আবেদন করেছিলেন।
মারিয়া বিনতে সা’য়দ ছিলেন কারবালার একজন প্রভাবশালী নারী। বসরায় তার বাড়ি ছিল এবং তার বাড়িতে আহলে বাইত (আ.) এর সমর্থকদের জমায়েতের স্থান ছিল এবং যখন ইমাম (আ.)এর দূত বসরায় আসেন এবং সেখানে ইমামের বাণী পৌঁছে দেন। মারিয়া ইমামকে সমর্থন করার জন্য যোদ্ধাদের প্রস্তুত করে কারবালার পথে রওয়ানা দেন, কিন্তু পথে ইমামের শাহাদাতের খবর শুনতে পান।


* "আশুরা অভ্যুত্থানের মুখে মানুষের পরিস্থিতি” শীর্ষক বৈঠকে হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন মোহাম্মদ রেজা জাবারির বক্তব্য থেকে নেওয়া।

captcha