IQNA

ইরানি ক্বারির স্মরণে বাংলাদেশী ক্বারি

23:56 - May 20, 2016
সংবাদ: 2600819
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কুরআনের অধ্যাপক 'আহমেদ নাসের' বলেছেন: ইরানে অনুষ্ঠিত এক কুরআন প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠানের সূত্র ধরে সেদেশের প্রসিদ্ধ ক্বারি 'হাসান দানেশের' সাথে আমার বন্ধুত্ব হয়। এই প্রতিযোগিতায় সর্বক্ষণ আমি তাকে খুঁজে বেড়াচ্ছিলাম।

হাসান দানেশের স্মরণে বাংলাদেশী ক্বারি

ইরানে অনুষ্ঠিত ৩৩তম আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ও কুরআনের হাফেজ তানভীর হোসাইনের সাথে তার শিক্ষক ও কুরআনের অধ্যাপক আহমেদ নাসের উপস্থিত হয়েছিলেন। ইরানে অবস্থানকালে বার্তা সংস্থা ইকনা'র সাথে এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন: ইরানে অনুষ্ঠিত এক কুরআন প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠানের সূত্র ধরে সেদেশের প্রসিদ্ধ ক্বারি 'হাসান দানেশের' সাথে আমার বন্ধুত্ব হয়। এই প্রতিযোগিতায় সর্বক্ষণ আমি তাকে খুঁজে বেড়াচ্ছিলাম। তার খবর জানতে চাইলে এক ব্যক্তি আমাকে বলে যে, সে শহীদ হয়েছে। এখবর শুনে আমি অনেক দুঃখ পেয়েছি এবং এখনোও বিশ্বাস করতে পারছি না যে, সে আর এ দুনিয়ায় নেই।
কুরআনের অধ্যাপক আহমেদ নাসের বলেন: ইরানে এক কুরআন প্রতিযোগিতার সময় সেদেশের এনডাউমেন্টের এক কর্মকর্তা ইরানের ইসলামী বিপ্লবের প্রতিষ্ঠাতা ইমাম খোমিনীর (রহ.) বাড়ী পরিদর্শন করার জন্য আমাদেরকে জামারানে নিয়ে যায়; তখন আমি হাসান দানেশের সাথে পরিচিত হয়। সেখানে আমরা অনেক কথা বলেছি এবং ঐ খানেই আমাদের বন্ধুত্ব হয়। আমি তার কপালে চুম্বন করেছি। তিনি অনেক জ্ঞানী এবং ভালো ছিলেন। মিনা দুর্ঘটনায় তার শহীদ হওয়ার বিষয়টি আমার নিকট অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন: এই প্রতিযোগিতায় আমি তাকে খুজছিলাম। তার খবর জানতে চাইলে এক ব্যক্তি আমাকে বলে যে, সে শহীদ হয়েছে। এখবর শুনে অনেক দুঃখ পেয়েছি এবং আমি এখনোও বিশ্বাস করতে পারছি না যে, সে আর এ দুনিয়ায় নেই। যদি মিন দুর্ঘটনা, সৌদি কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে হয়ে থাকে, তাহলে এটা অনেক বড় অত্যাচার করা হয়েছে।
অধ্যাপক নাসের আরও বলেন: এই প্রতিযোগিতায় আমার শিক্ষার্থী তানভীর হোসাইনের সাথে আমি অংশগ্রহণ করেছি। তানভীর হোসাইন ৫ বছর বয়স থেকে কুরআন হেফজ করতে শুরু করেন। তিনি এই প্রতিযোগিতায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য অনুষ্ঠিত কুরআন হেফজ বিভাগে অংশগ্রহণ করেছেন।

১২ বছর বয়স থেকে কুরআন হেফজ করতে শুরু করেছি
কুরআনের অধ্যাপক নাসের ১২ বছর বয়স থেকে কুরআন হেফজ করতে শুরু করেন। বর্তমানে তার ৪০ বছর বয়স। দীর্ঘ দিন যাবত তিনি দেশের যুবকদের কুরআন শিক্ষা প্রদান করছেন।
তিনি বলেন: দৃষ্টি হীনতার কারণে তানভীর হোসাইনের এমন একজনের প্রয়োজন ছিল, যে তার জন্য কুরআন তিলাওয়াত করবে। আমি প্রথম বার তার জন্য এই (নীচের) আয়াতটি পাঠ করি:
«إنّا نحنُ نَزّلنا الذِّكرَ و انّا له لَحافِظون»
নিশ্চয়ই আমরা যিকর (কুরআন) অবতীর্ণ করেছি এবং নিশ্চয় আমরাই এর সংরক্ষণকারী (সূরা হিজর/ ৯)
এই আয়াতটি পাঠ করার পর তাকে সাহায্য করার জন্য আমার নিকট আহ্বান জানিয়ে বলেন, যদিও আমি দৃশ্যমান চোখ দিয়ে দেখতে পারি না, তবে আমি আমার অভ্যন্তরীণ চোখ দিয়ে কুরআন হেফজ (মুখস্থ) করব এবং সেই অনুযায়ী আমল করব।

আমার শিক্ষার্থী সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থানের অধিকারী হয়েছেন
অধ্যাপক 'আহমেদ নাসের' তার শিক্ষার্থী সম্পর্কে বলেন: আমার অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও মালয়েশিয়া ও সৌদি আরব সহ অন্যান্য দেশে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন। তাদের মধ্যে একজন তানভীর হোসেন। তিনি অনেক ভালো। তানভীর হোসেন সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতার হেফজ বিভাগে প্রথম স্থানের অধিকারী হয়েছেন।
অধ্যাপক 'আহমেদ নাসের' ঢাকার আন্তর্জাতিক কুরআন হেফজ কেন্দ্রের প্রধান। সর্বশেষে তিনি বলেন: আমি এবং আমার শিক্ষার্থী বিশ্বের অনেক দেশে আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছি। মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া এবং সৌদি আরব সহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে অংশগ্রহণ করেছি; তবে ইরানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতার মান অনেক ভালো এবং আমি এ প্রতিযোগিতা অনেক ভালো ভাবে উপভোগ করেছি।
iqna


ট্যাগ্সসমূহ: বাংলাদেশী ، কুরআনের ، ইরানের
captcha