তিনি বুধবার ইরানের সামরিক বিশেষজ্ঞ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দেয়া ভাষণে এ কথা বলেছেন। অবশ্য, এ সময় সর্বোচ্চ নেতা পরিষ্কার করে বলেছেন, পরমাণু ও রাসায়নিক অস্ত্র তৈরি ইরানের জন্য নিষিদ্ধ। ইরানের সামরিক শিল্প-কারখানাগুলোর অর্জনের ওপর এক প্রদর্শনী ঘুরে দেখার পর এসব কর্মকর্তার উদ্দেশে বক্তৃতা করেন সর্বোচ্চ নেতা।
আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী বলেন, "বিশ্বের বলদর্পী শক্তিগুলো যখন ক্ষমতার ছায়া এত বেশি বিস্তৃত করেছে এবং তাদের মধ্যে বিন্দুমাত্র মায়া-মমতা দেখা যাচ্ছে না এমনকি সন্ত্রাসবাদের নাম করে প্রকাশ্যে বিয়ের অনুষ্ঠান কিংবা হাসপাতালে হামলা চালাচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক কোনো সংস্থা বা সংগঠনের কাছে জবাবদিহি করছে না তখন এইসব বলদর্পী শক্তিকে মোকাবেলার জন্য প্রতিরক্ষা ক্ষমতা এমন পর্যায়ে বাড়ানো উচিত যাতে শত্রুরা ভয় পায় এবং ইরানকে একটা হুমকি মনে করতে বাধ্য হয়।” তিনি বলেন, ইরান পরমাণু অস্ত্র ও রাসায়নিক অস্ত্র নির্মাণ নিষিদ্ধ মনে করে তার আদর্শিক বিশ্বাসের কারণে। এই সীমাবদ্ধতা ছাড়া আমাদের প্রতিরক্ষা ও সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে আর কোনো সীমাবদ্ধতা নেই বরং এই ক্ষেত্রে উন্নতি করা একটি দায়িত্ব। দেশের নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ রক্ষার জন্য প্রতিরক্ষা সক্ষমতার সঙ্গে হামলার ক্ষমতাও বাড়াতে হবে অনেক।
ইরান সম্পর্কে কথা বলার নৈতিক অধিকার আমেরিকার নেই: সামরিক বিশেষজ্ঞদের উদ্দেশ্যে দেয়া বক্তৃতায় ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আরো বলেছেন, মার্কিন সরকার নৈতিকভাবে ইরানের বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে কোনো কথা বলার অধিকার রাখে না। এ কথা আমেরিকার ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাট ও বিরোধী রিপাবলিকান -দুদলের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য।
সর্বোচ্চ নেতা বলেন, বিপদজনক সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক তৈরি ছিল মার্কিন ক্ষমতাসীন দলের সবচেয়ে বড় পাপ এবং আমেরিকার ক্ষমতাসীন সরকার দৃশ্যত একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর ওপর হামলা চালাচ্ছে আবার অন্য সন্ত্রাসীদেরকে ছেড়ে দিচ্ছে। এর অর্থ দাঁড়ায় ‘রাজনীতি দিয়ে নীতি শাসন করা হচ্ছে’।
ইরাক ও আফগানিস্তানে অপরাধ চালানোর জন্য মার্কিন সাবেক
প্রশাসনকে দায়ী করে আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী বলেন, "নৈতিকতার দিক থেকে বিচার করলে আমেরিকার প্রভাবশালী দুটি
দলের একটিকেও বেছে নেয়ার সুযোগ নেই। এ অবস্থায় মার্কিন সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে
একটি অভিন্ন সমঝোতায় পৌঁছানো যাবে বলে যদি আমরা চিন্তা করি তবে তা হবে মারাত্মক ভুল।
এজন্য আমি বার বার আমেরিকার সঙ্গে আলোচনা না করার জন্য বলি এবং অভিজ্ঞতা থেকে এটি প্রমাণিত
হয়েছে যে, আমেরিকা সমঝোতায় পৌঁছানোর
পরিবর্তে আলোচনার নামে তারা তাদের মত ও দাবিকে চাপিয়ে দিতে চায়। তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ
সাম্প্রতিক পরমাণু আলোচনা।#