IQNA

সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় সিরিয়ার পাশে থাকবে ইরান: প্রেসিডেন্ট রুহানি

22:05 - September 28, 2016
সংবাদ: 2601654
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান সিরিয়াসহ সব মুসলিম দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, ঐক্য ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা বজায় রাখার প্রতি সমর্থন দেয়ার পাশাপাশি সেসব দেশে সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা করা ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠাকে তার দায়িত্ব বলে মনে করে। ইরান মনে করে কোনো দেশের সীমানা পরিবর্তন করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়।

বার্তা সংস্থা ইকনা: ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি তেহরানে সিরিয়ার পার্লামেন্ট স্পিকার মিসেস হাদিয়ে খালাফ আব্বাসকে দেয়া সাক্ষাতে এসব কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, এমন সব সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সিরিয়ার জনগণের ওপর অন্যায় যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছে যারা সামান্যতম নীতি নৈতিকতা ও মানবিয় মূল্যবোধের ধার ধারে না। ইরানের প্রেসিডেন্ট গত পাঁচ বছর ধরে সিরিয়ায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে চলমান প্রতিরোধ যুদ্ধের ব্যাপক প্রশংসা করেন।

সিরিয়ার পার্লামেন্ট স্পিকারকে দেয়া সাক্ষাতে প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি আরো বলেছেন, দুঃখজনকভাবে এ অঞ্চলের বহু মুসলিম দেশ শত্রুদের ভয়াবহ ষড়যন্ত্রের স্বীকার। ইয়েমেন, সিরিয়া, ইরাক, আফগানিস্তান, লিবিয়ায় যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে সেসব দেশের জনগণের জীবনকে দুর্বিসহ করে তোলা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট রুহানি আরো বলেন, ইসলামী ইরান নিজের নীতি অবস্থান ঠিক রেখে মধ্যপ্রাচ্যসহ সারা বিশ্বে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। তেহরান মনে করে সন্ত্রাসীদের মোকাবেলায় সিরিয়ার জনগণকে সহযোগিতা করা উচিৎ এবং এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আসা ছাড়া অন্যদেশের আর কোনো উপায় নেই।

ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি সম্প্রতি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দেয়া ভাষণেও এ বিষয়ে কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, কোনো কোনো মহল যৌক্তিক ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে গত পাঁচ বছর ধরে চলে আসা সংকট সমাধানের পথে বাধা সৃষ্টি করছে। তিনি বলেন, বাইরের আগ্রাসী শক্তি যখন এ অঞ্চলে পা রেখেছে তখন তাদের কাছ থেকে শান্তিপূর্ণ কিছু আশা করা যায় না। এ কারণেই এ অঞ্চলে সংকট অব্যাহত রয়েছে এবং সিরিয়া যুদ্ধ একটি আঞ্চলিক সংকটে পরিণত হয়েছে।

আন্তর্জাতিক সমাজ এখন সিরিয়া সংকট সমাধানকে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিচ্ছে। কয়েকদিন আগে সিরিয়ায় সংঘর্ষরত পক্ষগুলোর মধ্যে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার জন্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু আমেরিকার একচোখা নীতি ও দায়েশ সন্ত্রাসীদের প্রতি তাদের সমর্থনের কারণে আলোচনা ব্যর্থ হয়ে গেছে। সিরিয়ার বর্তমান স্পর্শকাতর পরিস্থিতিতে সেদেশের জনগণের জন্য ত্রাণ পাঠানো এবং সন্ত্রাসীদের কবল থেকে দেশটিকে উদ্ধার করা জরুরি হয়ে পড়েছে।

সিরিয়ার এখন যে পরিস্থিতি তাতে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দেশটির সেনাবাহিনী বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। দায়েশের কাছ থেকে আলেপ্পো শহর পুনরুদ্ধারের জন্য সিরিয়ার স্থল ও বিমান বাহিনী গত সপ্তাহ থেকে ব্যাপক হামলা শুরু করেছে। তবে আলেপ্পো উদ্ধার করা অত্যন্ত কঠিন হবে বলে অনেকে মনে করছেন। কারণ আমেরিকা ও তার মিত্ররা সিরিয়ায় বিমান উড্ডয়ন নিষিদ্ধ এলাকা গঠনের যে চেষ্টা করছে তার বিরুদ্ধে সিরিয়া ও রাশিয়ার অবস্থান কি হয় সেটার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে।

যাইহোক, সিরিয়ায় বর্তমানে একটি বৈধ সরকার রয়েছে এবং দেশটির ভবিষ্যতের ব্যাপারে সেদেশের সরকার ও জনগণই সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার রাখে। এ জন্যই ইরানের প্রেসিডেন্ট সমগ্র এ অঞ্চলে নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা এবং সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলার জন্য সিরিয়ার প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। পার্সটুডে

iqna

captcha