IQNA

ইসলামের অনন্য মহানায়ক ইমাম রেজা (আ.)

0:32 - December 01, 2016
সংবাদ: 2602062
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইমাম রেজা (আ.)'র পিতা ইমাম মুসা কাজিম (আ.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন, আমার বাবা ইমাম জাফর সাদিক (আ.) আমাকে বার বার বলতেন যে, আলে মুহাম্মাদের আলেম বা জ্ঞানী হবে তোমার বংশধর। আহা! আমি যদি তাঁকে দেখতে পেতাম!তাঁর নামও হবে আমিরুল মু'মিনিন (আ.)'র নাম তথা আলী।
ইসলামের অনন্য মহানায়ক ইমাম রেজা (আ.)
শাবিস্তানের উদ্ধৃতি দিয়ে বার্তা সংস্থা ইকনা'র রিপোর্ট: প্রায় হাজার বছর আগে লিখিত 'শাওয়াহেদুন্নবুওয়াত' নামক বইয়ে বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছে, যারা ইরানের খোরাসানে অবস্থিত (যার বর্তমান নাম মাশহাদ) ইমাম রেজা (আ.)'র মাজার জিয়ারত করবে তারা বেহেশতবাসী হবে। বিশিষ্ট কবি ও আধ্যাত্মিক সাধক মাওলানা আবদুর রহমান জামির লিখিত এই বইটি বহু বছর আগে বাংলা ভাষায়ও অনূদিত হয়েছে (মাওলানা মহিউদ্দিনের মাধ্যমে) (পৃ.১৪৩-১৪৪)।

বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) ইরানের খোরাসানে তাঁর শরীরের একটি অংশকে তথা তাঁর পবিত্র বংশধারা বা আহলে বাইতের একজন সদস্যকে দাফন করা হবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করে গেছেন।

নবীবংশের প্রত্যেক ইমামের জীবনই যেন মহাসাগরের মতই মহত গুণ, জ্ঞান, আর কল্যাণের নানা ঐশ্বর্যে কুল-কিনারাহীন এবং  শাহাদাতের স্বর্গীয় মহিমায় সমুজ্জ্বল। ইরানের সর্বোচ্চ নেতার ভাষ্য অনুযায়ী ইমামদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো রাজনৈতিক সংগ্রাম। ইসলামের মধ্যে নানা বিকৃতি চাপিয়ে দেয়ার বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই সোচ্চার ছিলেন বিশ্বনবী (সা.)’র পবিত্র আহলে বাইতের ইমামগণ।

ইমাম রেজা (আ.) বিতর্কে অংশগ্রহণকারী পণ্ডিতদের ধর্ম-বিশ্বাস ও মতবাদে উল্লেখিত দলিল-প্রমাণের আলোকেই তাদের প্রশ্নের জবাব দিতেন। একবার খলিফা মামুন বিখ্যাত খ্রিস্টান পণ্ডিত জাসলিককে বললেন ইমাম রেজা (আ.)’র সঙ্গে বিতর্কে লিপ্ত হতে। জাসলিক বললেন, আমি কিভাবে তাঁর সঙ্গে বিতর্কে লিপ্ত হব যখন তাঁর ধর্মগ্রন্থ তথা কুরআন ও এর দলিল-প্রমাণের প্রতি আমার বিশ্বাস নেই এবং তিনি যেই নবীর বক্তব্যকে দলিল-প্রমাণ হিসেবে পেশ করবেন তাঁর প্রতিও আমার ঈমান নেই। ইমাম রেজা (আ.) বললেন, যদি ইঞ্জিল তথা বাইবেল থেকে দলিল-প্রমাণ তুলে ধরি তাহলে কি আপনি তা গ্রহণ করবেন? জাসলিক বললেন, হ্যাঁ। আসলে ইমাম উভয়-পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য দলিল-প্রমাণের ভিত্তিতে জাসলিকের সঙ্গে বিতর্ক করলেন। বিতর্কে জাসলিক এতটা প্রভাবিত হলেন যে তিনি বললেন: খ্রিস্ট বা ঈসার কসম, আমি কখনও ভাবিনি যে মুসলমানদের মধ্যে আপনার মত কেউ থাকতে পারেন।

১৪৮ হিজরির ১১ জিলকদমদিনায় ইমাম মুসা ইবনে জাফর সাদিক (আ.)'র ঘরে জন্ম নিয়েছিলেন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)'র পবিত্র আহলে বাইতের অন্যতম সদস্য হযরত ইমাম রেজা (আ.)।

তাঁর পবিত্র ও কল্যাণময়ী মায়ের নাম ছিল উম্মুল বানিন নাজমা। ১৮৩ হিজরিতে খলিফা হারুনের কারাগারে পিতা ইমাম কাজিম (আ.)'র শাহাদতের পর পঁয়ত্রিশ বছর বয়সে মুসলিম উম্মাহর ইমামতের ঐশী দায়িত্ব গ্রহণ করেন ইমাম রেজা (আ.)। প্রায় ১৯/২০ বছর ধরে ইমামতের মহান দায়িত্ব পালনের পর ২০৩ হিজরির সফর মাসের শেষ তারিখে তিনি শাহাদত বরণ করেন।

captcha