IQNA

রাসূল (সা.) যাকে নিজের অস্তিত্বের অংশ বিশেষ হিসেবে অভিহিত করেছেন

0:54 - March 04, 2017
সংবাদ: 2602645
সুন্নী সম্প্রদায়ের বিভিন্ন প্রসিদ্ধ গ্রন্থাবলীতে অনেক রেওয়ায়েতে উল্লেখ করা হয়েছে, রাসূল (সা.) হযরত ফাতেমা যাহরা (সা. আ.)কে উদ্দেশ্য করে বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তোমার অসন্তুষ্টিতে অসন্তুষ্ট এবং তোমার সন্তুষ্টিতে সন্তুষ্ট হন।

বার্তা সংস্থা ইকনা'র রিপোর্ট: সহীহ্ বুখারী যা সুন্নী সম্প্রদায়ের সর্বাপেক্ষা প্রসিদ্ধ হাদীসগ্রন্থ হিসেবে পরিচিত, তাতে বর্ণনা করা হয়েছে যে, রাসূল (সা.) বলেন,

فاطمة بضعة منّي فمن اغضبها فقد اغضبني

"ফাতেমা আমার অস্তিত্বের অংশবিশেষ। যে তাকে রাগান্বিত করে সে আমাকেও রাগান্বিত করে।”

এছাড়া একই গ্রন্থে অন্য একস্থানে বর্ণনা করা হয়েছে, রাসূল (সা.) বলেন, "নিশ্চয়ই ফাতেমা আমার অস্তিত্বের অংশবিশেষ। যা কিছু তাকে অসন্তুষ্ট করে তা আমাকেও অসন্তুষ্ট করে এবং যা কিছু তাকে কষ্ট দেয়, তা আমাকেও কষ্ট দেয়।”

যেমনভাবে পূর্বেই উল্লেখ করেছি, এ প্রসঙ্গে অসংখ্য হাদীস রয়েছে, যেগুলো তাঁর খোদার মা'রেফাত, ইসমাত (পাপশুন্যতা), ইখলাস্ ও  ঈমানের সর্বোচ্চ পর্যায়ের পরিচয় বহন করে। তিনি এমন এক মর্যাদায় সমাসীন যে, তাঁর সন্তুষ্টি ও  অসন্তুষ্টি মহান আল্লাহ্ ও তার রাসূল (সা.)-এর সন্তুষ্টি ও অসন্তুষ্টি কারণ হয়ে থাকে। এটা এমনই এক সর্বোত্তম মর্যাদা যা কোন কিছুর সাথেই তুলনাযোগ্য নয়।

এ আলোচনাকে সহীহ্ তিরমিজীর একটি হাদীস উল্লে¬খের মাধ্যমে ইতি করব। রাসূল (সা.) বলেন,

انّما فاطمة بضعة منّي يؤذيني ما آذاها و ينصبنى ما نصبها

"ফাতেমা আমার অস্তিত্বের অংশবিশেষ। যা কিছু তাকে কষ্ট দেয় তা আমাকেও কষ্ট দেয়। আর যা কিছূ তাকে পীড়িত করে, তা আমাকেও পীড়িত করে।”

নিঃসন্দেহে পিতা ও সন্তানের মধ্যকার পারস্পরিক ভক্তি ও ভালবাসা কখনও এরূপ অবস্থার ব্যাখ্যা দিতে পারে না। কেননা, মহানবী (সা.) "রাসূলুল্লাহ” হিসেবে আল্লাহ্র ইচ্ছা ব্যতীত অন্য কোন ইচ্ছা করতে পারেন না। আর ফাতেমা যাহরা (সা. আ.)-এর ইচ্ছার সাথে আল্লাহ্ ও তার রাসূল (সা.)-এর ইচ্ছার সম্পৃক্ততা, এটারই প্রমাণ বহন করে যে, তাঁর (ফাতেমার) আশা-আকাংখা ও ইচ্ছা কেবল মহান আল্লাহর শ্বাশ্বত ইচ্ছাতে পরিসমাপ্ত ঘটে।

এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয় হচ্ছে যে সাধারণত فاطمة بضعة مني  এ বাক্যটিকে "ফাতেমা আমার দেহের অঙ্গস্বরূপ” হিসেবে অনুবাদ ও ব্যাখ্যা করা হয়। অথচ উক্ত বাক্যে দেহের কথা উল্লেখ করা হয় নি। বরং এ হাদীসের মূল বিষয়বস্তু হচ্ছে হযরত ফাতেমা যাহরা (সা. আ.) শারীরিক ও আত্মিক উভয় দিক থেকেই রাসূল (সা.)-এর পবিত্র অস্তিত্বের অংশবিশেষ, রেওয়ায়েতেও এ বিষয়ের প্রতি ইঙ্গিত বহন করে যে, তা মহান আল্লাহর ইচ্ছাতেই সম্পন্ন হয়েছে।
captcha