
বার্তা সংস্থা ইকনা: শীর্ষ আদালত ছয় মাসের মধ্যে সংসদকে এ বিষয়ে আইন প্রণয়নের নির্দেশ দিয়েছে। ছয় মাসের মধ্যে আইন না হলে নিষেধাজ্ঞা আরো বাড়বে।
সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির মধ্যে তিনজন তিন তালাককে অসাংবিধানিক বলে মন্তব্য করেন। এরা হলেন- বিচারপতি ফলি নরিম্যান, বিচারপতি উদয় উমেশ ললিত ও বিচারপতি কুরিয়েন জোসেফ। কিন্তু প্রধান বিচারপতি জগদিশ সিং খেহর ও বিচারপতি আবদুল নাজির ভিন্নমত পোষণ করেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, 'পার্সোনাল ল'কে সাংবিধানিক বিচারব্যবস্থার আওতায় আনা যায় না। প্রধান বিচারপতি জে এস খেহর বলেন, তিন তালাক সুন্নীদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তাদের সংস্কৃতির পক্ষে জরুরি। এই প্রথা সংবিধানের ২৫,২৪ ও ২১ নম্বর ধারা লঙ্ঘন করছে না। ব্যক্তিগত আইন মেনে চলা এই প্রথাকে সাংবিধানিক নিয়মনীতি দেখিয়ে বিচারবিভাগীয় হস্তক্ষেপে বন্ধ করা যায় না।
বিচারপতি ফলি নরিম্যান, বিচারপতি উদয় উমেশ ললিত, বিচারপতি কুরিয়েন জোসেফ অবশ্য তিন তালাককে ‘অসাংবিধানিক’, ‘ইসলামবিরোধী’ এবং ‘কুরআনবিরুদ্ধ’ বলে মন্তব্য করেন। তাদের মতে, এই প্রথা ইসলামে নেই, কুরআনেও -এর কোনো উল্লেখ নেই।
তিন তালাকের বিরুদ্ধে আফরিন রহমান, সায়ারা বানু, ইসরাত জাহান, গুলশন পারভিন ও ফারহা ফয়েজ সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন।
ওই মামলার মূল আবেদনকারী সায়রা বানু বলেন, 'শীর্ষ আদালতের রায়কে স্বাগত জানাচ্ছি। মুসলিম নারীদের জন্য আজ ঐতিহাসিক দিন।' এ নিয়ে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’বোর্ড তাদের পরবর্তী কর্মপন্থা ঠিক করতে ১০ সেপ্টেম্বর বৈঠকে বসবে বলে জানা গেছে।
মুসলিম পার্সোনাল ল’বোর্ডের মহাসচিব মাওলানা ওয়ালি রহমানি আদালতের রায় সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি ল’বোর্ডের বৈঠকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান।
অন্যদিকে, শিয়া পার্সোনাল ল’বোর্ডের মুখপাত্র মাওলানা ইয়াসুফ আব্বাস আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন। এরফলে তিন তালাকের নামে মুসলিম নারীদের ওপরে অবিচার বন্ধ হবে বলে তিনি বলেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আদালতের রায়কে ‘ঐতিহাসিক’ বলে অভিহিত করে এরফলে মুসলিম নারীরা সমান অধিকার পাবেন এবং নারীদের ক্ষমতায়নের পক্ষ বড় পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেছেন। এদিকে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ একে মুসলিম নারীদের জন্য 'নয়া যুগের সূচনা' বলে মন্তব্য করেছেন।
iqna