বার্তা সংস্থা ইকনা: গত ২৫ আগস্ট রাখাইন রাজ্যে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকটি চৌকিতে হামলার জন্য রোহিঙ্গাদের দায়ী করে সেনা অভিযান শুরু করে দেশটি। অভিযানে কমপক্ষে ৪০০ রোহিঙ্গাকে হত্যা ও শত শত ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে।
মিয়ানমারে জাতিসংঘের আবাসিক কোঅর্ডিনেটরের অফিস থেকে বলা হয়, নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং সরকারি ক্ষেত্র পরিদর্শনে সীমাবদ্ধতার কারণে আমাদের সহায়তা প্রদান স্তগিত করা হয়েছে।’ প্রস্তাবিত কর্তৃপক্ষকে সেখানে কার্যক্রম চালানোর অনুমতি প্রদান করা হয় নি বলে জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পুনরায় শুরু করতে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জাতিসংঘ ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছে।’
তবে, রাখাইন রাজ্যের অন্যান্য অংশে সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে বলে এতে জানানো হয়।
গত কয়েক দশক ধরে রাখাইনের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর সামরিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে। তাদের নৃশংসভাবে হত্যাসহ তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে। বর্মি সেনাদের হাত থেকে বাঁচতে হাজার হাজার রোহিঙ্গা প্রতিবেশি বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
নিরাপত্তা ও সরকারি বাধার কারণে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর), জাতিসংঘের জনসংখ্যা ফান্ড (ইউএনএফপিএ), এবং জাতিসংঘের শিশু ফান্ড (ইউনিসেফ) এর কর্মীরা উত্তর রাখাইনে কোনো ধরনের ফিল্ড ওয়ার্কে যেতে পারেন নি।
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচী (ডাব্লিউএফপি) জানিয়েছে যে তারাও রাখাইন রাজ্যের অন্যান্য অংশে সহায়তা কার্যক্রম স্থগিত রেখেছে।
এছাড়াও, অক্সফাম এবং সেভ দ্য চিলড্রেনসহ ১৬টি প্রধান বেসরকারী সাহায্য সংস্থার কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছে যে বিরোধপূর্ণ এলাকায় তাদের প্রবেশ করতে দিচ্ছে না সরকার।
মািয়ানমারে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সমন্বয়ক কার্যালয়ের মুখপাত্র পিয়ের পেরোন বলেন, ‘উত্তর রাখাইনের চলমান সহিংসতায় হাজার হাজার মানুষের ভাগ্য নিয়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলো গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’
তিনি বলেন, ‘সহিংসতার কারণে বাস্তুচ্যুত মানুষ এবং অন্যান্য বেসামরিকদের নাগরিকদের সুরক্ষিত রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করা এবং খাদ্য, পানি, আশ্রয় এবং স্বাস্থ্য সেবাসহ মানবিক সাহায্যের জন্য সেখানে নিরাপদ প্রবেশাধিকার অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘মানবিক সহায়তা সাধারণত এই ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের জন্য দেয়া হয়ে থাকে কারণ তারা এটির উপরই নির্ভর করে।’
জাতিসংঘের এই মুখপাত্র বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যের সকল সম্প্রদায়ের ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের জন্য অত্যাবশ্যক মানবাধিকার কর্মসূচি পুনরায় চালু করার জন্য জরুরি ব্যবস্থা নেয়া উচিত।’
iqna