বার্তা সংস্থা ইকনা: রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের দ্বিপক্ষীয় উদ্যোগের বাইরে চীন কোনো ভূমিকা রাখবে কী না জানতে চাইলে চীনা রাষ্ট্রদূত ‘রোহিঙ্গা’ শব্দ উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময় দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় উভয়ভাবেই মিয়ানমারকে দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আহ্বান জানিয়েছি। যত দ্রুত সম্ভব একটি দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখাতেও আমরা মিয়ানমারকে আহ্বান জানিয়েছি।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, গত বছর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংকট শুরুর পর চীন প্রথমে সহিংসতা থামানোর চেষ্টা করছে। এখন দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য চীন চেষ্টা চালাচ্ছে। দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন উৎসাহিতকরণের ক্ষেত্রে চীন বাংলাদেশেরও সক্রিয় ভূমিকা দেখতে চায়।
ওদিকে, কক্সবাজারে আশ্রিত প্রায় এগারো লক্ষ রোহিঙ্গা চলতি বর্ষা মওসুমে বৃষ্টি এবং পাহাড় ধ্বসের কারণে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এর মধ্যে ছোট-খাট মিলিয়ে বিশটির মতো পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে । এতে শিশুসহ কয়েকজন নিহত ও আহত হয়েছে।
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের এরকম ঝুঁকি থেকে রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসনের গৃহীত পদক্ষেপের কথা জানান উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান। তিনি বলেছেন, কম ঝুঁকিপূর্ণ বস্থার মানুষদের ঘরবাড়ী মজবুত করে দেয়া হয়েছে এবং যারা বেশি ঝুঁকিতে অছেন তাদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার কাজ চলছে।
তবে, রোহিঙ্গা প্রশ্নে মিয়ানমারের ভূমিকায় শঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন।
‘ইউনাইটেড নেশনস হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল’ কর্তৃক নিযুক্ত মিয়ানমারে মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ বিষয়ক বিশেষ দূত ইয়াংহি লি জানিয়েছেন, রোহিঙ্গাদের এখনও রাখাইনে ফেরত পাঠানোর মতো উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত হয় নি।
জাতিসংঘের ইনফরমেশন সেন্টারে প্রকাশিত তার এক বিবৃতি থেকে এসব কথা জানা গেছে।
রোহিঙ্গা সংকট পর্যবেক্ষণে ৭ দিনের বাংলাদেশ সফরের শেষদিনে রবিবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লি বলেছেন, ‘যেহেতু এটি পরিষ্কার যে মিয়ানমার সরকার কার্যত কোনও অগ্রগতিই অর্জন করে নি অর্থাৎ, রোহিঙ্গাদের বঞ্চিত করার আইন, নীতি ও প্রথার বিলুপ্তিতে এবং দক্ষিণ রাখাইনকে নিরাপদ করে তুলতে কোনও ব্যবস্থা নেয় নি সেহেতু নিকট ভবিষ্যতে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। ’
ইয়াং লি মন্তব্য করেছেন, বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গাদের অবস্থা অত্যন্ত সঙ্গীন। তাদের দ্রুত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে সহায়তা পাওয়া উচিত। জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান (জেএসপি) প্রয়োজনের মাত্র ২৬ শতাংশ পূরণ করতে পারছে। দাতাদের উচিত আর্থিক সহায়তা নিশ্চিতে এগিয়ে আসা। বর্তমানে রোহিঙ্গাদের মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী সহায়তাও অত্যন্ত জরুরি। রোহিঙ্গাদের জন্য তিনটি প্রয়োজনীয় সুবিধা নিশ্চিতের ওপর জোর দিয়েছেন লি। সেগুলো হলো, ‘সবার জন্য শিক্ষা, জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় জীবিকার প্রকৃত সুযোগ এবং রোহিঙ্গা নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্য কর্মমুখী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। শীর্ষ নিউজ