বার্তা সংস্থা ইকনা: বেশ কয়েক মাস রোগে ভোগার পর সোমবার রাতে তিনি তেহরানের খতামুল আম্বিয়া (সা.) হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
আয়াতুল্লাহ শাহরুদি ১৯৪৮ সালে ইরাকের নাজাফ শহরে অবস্থানরত একটি ইরানি ধর্মীয় পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ওই নগরীর প্রখ্যাত ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তিনি লেখাপড়া করেন। ১৯৬০’র দশকে ইসলামি ইরানের প্রতিষ্ঠাতা ইমাম খোমেনী (রহ.)কে তৎকালীন স্বৈরাচারী শাহ সরকার ইরাকের নাজাফে নির্বাসনে পাঠালে তিনি সেখানে ধর্মতত্ত্বের ক্লাস নিতে শুরু করেন। আয়াতুল্লাহ শাহরুদি ইমামের ছাত্র হিসেবে ওইসব ক্লাসে অংশগ্রহণ করেন।
১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামি বিপ্লবের বিজয় হলে আয়াতুল্লাহ শাহরুদি ইরানে আসেন এবং জীবদ্দশায় তিনি ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯৪ সাল থেকে টানা পাঁচবার তিনি ইরানের সাংবিধানিক অভিভাবক পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া, ১৯৯৯ সালের আগস্ট মাস থেকে ২০০৯ সালে আগস্ট মাস পর্যন্ত ১০ বছর তিনি ইরানের বিচার বিভাগের প্রধান ছিলেন।
ইরানের প্রভাবশালী বিশেষজ্ঞ পরিষদেও তিন মেয়াদে সদস্যপদ লাভ করেছিলেন আয়াতুল্লাহ হাশেমি শাহরুদি।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ীর এক ফরমানবলে ২০১৭ সালের ১৪ আগস্ট আয়াতুল্লাহ শাহরুদি ইরানের নীতি নির্ধারণী পরিষদের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পান। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ওই দায়িত্বে ছিলেন।
আয়াতুল্লাহ শাহরুদির মৃত্যুতে শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী, প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি, বিচার বিভাগের প্রধান আয়াতুল্লাহ আমুলি লারিজানি, পার্লামেন্টে স্পিকার ড. আলী লারিজানি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফ।
আয়াতুল্লাহ শাহরুদি তার জীবদ্দশায় বিভিন্ন বিষয়ের উপর অনেক প্রবন্ধ লিখেছেন। এছাড়াও তিনি ফার্সি ও আরবী ভাষায় অনেক বই লিখেছেন। বুহুছু ফি ইলমিল উসুল (৭ খণ্ড), কিতাবুল খুমস, মাকালাতুল ফেকহিয়া, হুকুমাতে ইসলামী, জাহানবিনিয়ে ইসলামী, তাফসিরে মৌজিয়ী বাখশী আজ নাহজুল বালাগা, মাওয়াদাতি জ্বিল কুরবা" আয়াতের তাফসির, মুহাজিরাতুল ফিছ ছুরাতিল হুসাইনিয়াহ, আস-সাউম, তারবিয়াত ওয়া হেদায়াত, কিতাবুল ইজারা (২ খন্ড), কিতাবুয যাকাত (৪ খন্ড), কিতাবুল মুদারাবা, বুহুছহায়ে পিরামুনে উসুলে ফেকহ, দারস নামেই উসুলে ফেকহ, রিসালায়ে তৌজিহিল মাসায়েল, আরবী ও ফার্সি ভাষায় মানাসেকে হজ, আস-সাউম মাসায়েলে ওরদুদ, পোরসেশহা ও পসখহায়ে পিরামুনে রুজেহ, আস-সিরাত (আজবেবাতুল ইসতেফতায়াত) কিতাবুল হজ, মানশুরে ক্বাজা এবং সাহিয়ায়ে আদালতসহ বেশ কয়েক খণ্ড বই লিয়েছেন।