IQNA

মিয়ানমার সেনাবাহিনী যেন কোথাও ব্যবসা করতে না পারে: জাতিসংঘ

0:11 - November 28, 2019
সংবাদ: 2609717
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রোহিঙ্গা গ'ণহ'ত্যায় মিয়ানমারের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক স্পেশাল র‌্যাপোর্টিয়ার ইয়াংঘি লি।

বার্তা সংস্থা ইকনা'র রিপোর্ট: তিনি বলেছেন, অনেক সময় গড়িয়ে গেছে। এখন মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও তাদের নিয়ন্ত্রিত সামরিক কোম্পানিগুলোর ওপর দ্রুত নিষেধাজ্ঞা দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দ্রুত কাজ করতে হবে। বিশেষ করে সেনাবাহিনীর সরাসরি নিয়ন্ত্রিত ‘মিয়ানমার ইকোনমিক হোল্ডিংস লিমিটেড (এমইএইচএল) ও মিয়ানমার ইকোনমিক কো-অপারেশনের (এমইসি) ওপর।
যাতে তারা কোনো বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে না পারে। বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে ব্যবসার ফলে দেশটির সেনাবাহিনী আরও শক্তিশালী হচ্ছে।

এই শক্তি রোহিঙ্গা গণহত্যার মতো কাজে লাগাচ্ছে তারা। মঙ্গলবার আলজাজিরায় লেখা এক বিশেষ নিবন্ধে নিষেধাজ্ঞার এ আহ্বান জানান ইয়াংঘি লি। ইয়াংঘি লি বলেছেন, দীর্ঘ ছয় দশকের সেনাশাসনের পর মিয়ানমারে ২০১৫ সালে সাধারণ নির্বাচন হয়। এর মধ্য দিয়ে সরকার গঠনের সুযোগ পায় দেশটির নেত্রী অং সান সু চির ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। সেনাশাসন থেকে গণতান্ত্রিক শাসনে ফেরার প্রতিশ্রুতিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের মাধ্যমে সুচির সরকারকে সমর্থন প্রদান করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। কিন্তু সু চির নেতৃত্বে গণতন্ত্র আসেনি, বরং সেনাবাহিনীর রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় রাখাইনের রোহিঙ্গাদের ওপর গ'ণহ'ত্যা চালায় সেনাবাহিনী।

এ নিয়ে রোহিঙ্গাদের মানবাধিকারের পক্ষে একটি কথাও খরচ করেননি সু চি। আগামী ২০২০ সালের আরেকটি নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে মিয়ানমার। এমন পরিস্থিতিতে গণতন্ত্রে ফেরার আশা আরও সংকুচিত হয়েছে।

সু চির সরকারের আমলে দেশজুড়ে মানবাধিকার পরিস্থিতি আরও শোচনীয় হয়েছে। গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা খর্ব হয়েছে। স'শ'স্ত্র সং'ঘাতে হাজার হাজার মানুষের জীবন ধ্বংস হচ্ছে। প্রাকৃতিক সম্পদ লুট হয়ে যাচ্ছে। আগের চেয়ে আরও শক্তিশালী সেনাবাহিনী রাজনীতি ও অর্থনীতির ওপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ জোরদার করেছে। কিন্তু সু চির সরকার এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে পুরোপুরি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। সরকার ও সেনাবাহিনীর এই কর্মকাণ্ড মিয়ানমারের মানবাধিকার ও গণতন্ত্রপন্থীদের হতাশ করেছে।

লি আরও বলেন, রোহিঙ্গা গণহত্যায় সেনাবাহিনী প্রধান মিং অন হ্লাইংসহ সিনিয়র সেনা কর্মকর্তারা এখন মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধের মুখে। যু'দ্ধাপরা'ধ তদন্তের অনুমোদন দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।

সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে কিছু নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। কিন্তু এগুলো যথেষ্ট নয়। দেশে ও বিদেশে বহু ব্যবসা রয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এবং সেগুলো অব্যাহত রয়েছে।

সরকারিভাবে প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ, ব্যাংকিং কার্যক্রম, পর্যটন, পরিবহন, উৎপাদন ও টেলিযোগাযোগের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাত তাদের নিয়ন্ত্রণে। পারিবারিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের মাধ্যমে ব্যক্তিগত বহু কোম্পানির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে সেনা কর্মকর্তাদের। এসব কোম্পানি মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন উদ্যোগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে সুযোগ-সুবিধা পেয়ে আসছে। এমটি নিউজ

captcha