গত ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সু চির সরকার উৎখাত করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। এর পরপরই আটক হন সু চি (৭৫)। তাঁকে কোথায় রাখা হয়েছে, সেটা স্পষ্ট নয়। জান্তা সরকার সু চির বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করেছে। তাঁর মধ্যে রাষ্ট্রদ্রোহ ও করোনাভাইরাসের বিধিনিষেধ ভঙ্গের অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগের তালিকায় অবৈধ উপায়ে ওয়াকিটকি আমদানি ও ব্যবহার, ঘুষ হিসেবে সোনা, অর্থ গ্রহণসহ আরও নানা বিষয় রয়েছে।
সব কটি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করা হলে এক দশকের বেশি কারাদণ্ড হতে পারে সু চির। গতকাল মঙ্গলবার তাঁর বিরুদ্ধে আনা করোনাভাইরাস বিধিনিষেধ ভঙ্গ করে নির্বাচন আয়োজনের অভিযোগের সাক্ষ্য শোনেন তিনি। ওই নির্বাচনে তাঁর দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) ব্যাপক জয় পায়।
সু চির আইনজীবী বলেছেন, সু চি জনগণকে ঐক্যবদ্ধ ও অটুট থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
নেপিডো বিশেষ আদালতে গতকাল সু চির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার শুনানিও হয়। তবে তাঁর আইনজীবীরা বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের দাখিলকৃত দুটি নথি স্বাক্ষরবিহীন থাকায় তা আদালতে অগ্রহণযোগ্য ছিল।
মিয়ানমারের সাবেক প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও জ্যেষ্ঠ এনএলডি নেতা মায়ো আংয়ের বিরুদ্ধেও গতকাল রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার শুনানি হয়। তাঁরাও আদালতে সু চির পাশে উপস্থিত ছিলেন।
মিয়ানমারে গত বছরের নভেম্বরে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) বিপুল জয় পায়। নির্বাচন স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হয়েছে বলে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক সংস্থা অভিমত দেয়। তবে এই নির্বাচনে কারচুপি-জালিয়াতির অভিযোগ আনে দেশটির সেনাবাহিনী।
সেনাবাহিনীর এই অভিযোগ নাকচ করে তৎকালীন নির্বাচন কমিশন। সু চিকে গ্রেপ্তারের পর থেকে দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে। চলমান বিক্ষোভে জান্তা সেনা-পুলিশের গুলিতে এরই মধ্যে ৮৮০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন।