IQNA

ইরাকের আরবাইন উদযাপনের প্রস্তুতির নতুন বিবরণ

0:02 - July 29, 2025
সংবাদ: 3477787
ইকনা- ইরাকের নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ পবিত্র আরবাঈন হোসেইনি (আ.) উপলক্ষে দেশের সার্বিক প্রস্তুতির বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছে। এই প্রস্তুতির মূল উদ্দেশ্য হলো: কোটিরও বেশি দেশি-বিদেশি যেয়ার (যাত্রী) যেন নিরাপদ, সুশৃঙ্খল ও স্বাচ্ছন্দ্যে কারবালায় পৌঁছাতে পারেন এবং মহান এই ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতায় অংশ নিতে পারেন।
ইরাকি নিরাপত্তা বাহিনী এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহ আরবাঈন উপলক্ষে একটি সমন্বিত ও বিস্তৃত নিরাপত্তা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করছে।
সোমবার (২৮ জুলাই), বাগদাদ অপারেশনের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওলিদ খলিফা আল-তামিমি জানান: “আরবাঈন হোসেইনি (আ.)-এর যিয়ারতের নিরাপত্তা পরিকল্পনায় রয়েছে—যাত্রীদের চলাচলের পথসমূহে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার, চিকিৎসা ও প্রশাসনিক সেবা প্রদান, মোকেবগুলোর কার্যক্রমে সমন্বয়, এবং এসব মোকেবের সুশৃঙ্খল ও সুষম বণ্টন।”
তিনি আরও জানান: এই পরিকল্পনা ১ আগস্ট (১০ মর্দাদ) থেকে শুরু হবে। ৪ আগস্ট (১৩ মর্দাদ) থেকে নিরাপত্তা বাহিনীগুলো সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় থাকবে। ট্রাক ও মোটরসাইকেলের চলাচল শুধু নির্ধারিত পথেই সীমাবদ্ধ থাকবে, যাতে যাত্রীদের যাত্রা ব্যাহত না হয়।
শনিবার (২৬ জুলাই), ইরাকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুলআমির আল-শাম্মারি বাগদাদে ইরান ও পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র উপমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি বলেন: “ইরাক প্রস্তুত রয়েছে কোটি কোটি যেয়ারের আতিথেয়তার জন্য, যারা ভাইচারা ও বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলো থেকে আগত। এটি একটি পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনার অংশ, যার ভিত্তি—নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, নির্বিঘ্ন চলাচল এবং সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করা।”
তিনি আরও বলেন: “ইরাকি জনগণ ও সরকার—জাতি, গোত্র বা পেশা নির্বিশেষে—এই মহৎ খিদমতের মাধ্যমে ইমাম হোসেইন (আ.)-এর যেয়ারতকারীদের সেবা দিতে গর্ববোধ করে। এটি শুধু একটি দায়িত্ব নয়, বরং এক ধরণের আধ্যাত্মিক ও মানবিক আনন্দও।”
কারবালা অপারেশন কমান্ড এক বিবৃতিতে জানিয়েছে: ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ ও নিরাপত্তা কমান্ডের নির্দেশ অনুযায়ী, আরবাঈন উপলক্ষে প্রতিরোধমূলক অভিযান চালানো হয়েছে। কমান্ডো ইউনিট ও স্পেশাল ফোর্স সমন্বিতভাবে কারবালার পশ্চিমাঞ্চলে এবং রজাজা হ্রদের আশপাশে টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি চালিয়েছে।
এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য: আগত যেয়ারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, যাতায়াতের রুটগুলোর সুরক্ষা বজায় রাখা এবং একটি পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা কাঠামো নিশ্চিত করা।
ইরাকের বিদ্যুৎমন্ত্রী জিয়াদ আলী ফাজেল নির্দেশ দিয়েছেন: শালামচে সীমান্তে দুটি বিশেষ টিম সার্বক্ষণিক অবস্থান করবে। আলো ও বিদ্যুৎ লাইন রক্ষণাবেক্ষণ, যেন আরবাঈন চলাকালীন কোনো সেবা ব্যাহত না হয়।
এই প্রতিবেদন স্পষ্টভাবে তুলে ধরে যে, পবিত্র আরবাঈন উপলক্ষে ইরাক সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী এবং সাধারণ জনগণ এক ঐক্যবদ্ধ পরিকল্পনা ও চেতনায় কাজ করছে।
এটি কেবল একটি ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং মুসলিম উম্মাহর মাঝে সংহতি, নিরাপত্তা ও সহযোগিতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ধর্মীয় জমায়েতের নিরাপত্তা, সেবাদান ও মানবিক দায়িত্ব পালনে ইরাকের এই প্রস্তুতি প্রশংসার দাবিদার।  4296808
 
captcha