পবিত্র কুরআনের ছিয়াত্তরতম সূরার নাম "মুরসালাত"। ৫০টি আয়াত বিশিষ্ট এই সূরাটি পবিত্র কুরআনের ২৯তম পারায় অবস্থিত। এই সূরাটি মাক্কী সূরা এবং নাযিলের ক্রমানুসারে এই সূরাটি ৩৩তম সূরা যা প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)এর উপর নাযিল হয়েছে।
এই সূরাকে মুরসালাত (অর্থাৎ প্রেরিত পুরুষগণ) বলা হয়; কেননা সূরার শুরুতে শপথ তাদের ব্যাপারে কসম করা হয়েছে। "মুরসাল"এর বহুবচন "মুরসালাত" অর্থ যাদের পাঠানো হয়েছে।
এই সূরায় আল্লাহ পাক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি বিষয়ের উপর শপথ করেছেন।
و المرسلت عرفا؛ فالعصفت عصفا؛ و النشرات نشرا؛ فالفرقت فرقا؛ فالملقیت ذکرا
উপর্যুপরি প্রেরিতগণের শপথ; এবং অতিদ্রুত গতিতে ধাবমানদের। এবং শপথ ব্যাপকভাবে বিস্তারণকারীদের। এবং পূর্ণরূপে পৃথককারীদের। এবং প্রত্যাদেশ আনয়নকারীদের (ফেরেশতাগণের)।
সূরা মুরসালাত, আয়াত ১ থেকে ৫।
কেয়ামতের ঘটনা এবং এর আলামত ও সেইসাথে মানুষের প্রতি আল্লাহর ক্ষমার উপর খুব জোর দিয়ে, সূরা মুরসালাতে অপরাধী এবং ধার্মিক লোকদের কাজ এবং লক্ষণ এবং উভয় দলের চূড়ান্ত পরিণতি সম্পর্কে কথা বলা হয়েছে। এই সূরায় কিয়ামতের উপর জোর দেওয়া হয়েছে এবং কিয়ামত অস্বীকারকারীদের জন্য কঠোর হুমকি দেওয়া হয়েছে। যদিও বিভিন্ন সূরায় এই সতর্কবানী দেওয়া হয়েছে, কিন্তু এই সূরায় অন্যান্য সূরার চেয়ে বেশি সতর্কতা ও হুমকি রয়েছে। এই সূরায় দশবার উল্লেখ করা হয়েছে।
ویل یومئذ للمکذبین
সেদিন অস্বীকারকারীদের জন্য দুর্ভোগ" বলা হয়েছে, যা কিয়ামতের অস্বীকারকারীদের বিপক্ষে শেষ যুক্তির বলে মনে হয়।
আল্লামা তাবাতাবাই-এর মতে, কিয়ামত এমন ঘটনার সাথে জড়িত যা মানব জগতের বিলুপ্তির ইঙ্গিত দেয়। তার মতে, সূরা মুরসালাতের ৮ থেকে ১২ নং আয়াতে কিয়ামতের কিছু ঘটনার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে, এবং যখন নক্ষত্ররাজি (র ঔজ্জ্বল্য) বিলীন হবে, এবং যখন আকাশ বিদীর্ণ হবে, এবং যখন পর্বতমালা উৎপাটিত ও বিক্ষিপ্ত হবে, এবং যখন রাসূলগণকে (সাক্ষ্য দানের জন্য) সময় দেওয়া হবে। (এ সকল বিষয়) কোন্্ দিবসের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে?