ইসলাম ধর্মে অর্থ আত্মসাৎ, মজুদ, ওজনে কম বিক্রি, সুদ, চুরি, ঘুষ ইত্যাদির মতো অবৈধ উপায়ে প্রাপ্ত আয়কে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে এবং এই সম্পত্তিগুলি তাদের আসল মালিকদের কাছে ফেরত দেওয়ার জন্য ইসলামী সরকারকে দায়ী করেছে।
সমস্ত মানব ব্যবস্থাই নিম্ন আয়ের লোকদের জন্য একটি সমাধানের কথা ভেবেছে, কারণ এই শূন্যতা যদি কোনোভাবে পূরণ না হয়, তাহলে নিম্ন আয়ের লোকদের বিদ্বেষ ও হিংসা জ্বলে উঠবে এবং তার শিখা সবকিছু পুড়িয়ে ফেলতে পারে। ক্ষুধার্তদের খাওয়ানো না হলে গুরুতর অপরাধের ঝুঁকি বাড়বে এবং ক্ষুধার্তদের কথা চিন্তা করে না এমন কোনও ব্যবস্থা স্থায়ী হবে না।
ইসলাম, যা একটি ব্যাপক ও সামাজিক মকতব, দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং সমাজে বঞ্চিতদের সমস্যা সমাধানের পরিকল্পনা পেশ করেছে, যার মধ্যে একটি হল খুমসের বিষয়।
গরীবদের কাছে তাদের অধিকার পৌঁছানো এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে হযরত আলী (আঃ) তার আংটি একজন দরিদ্র ব্যক্তিকে দিয়েছিলেন। এক অসহায় ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে মসজিদে উপস্থিত ব্যক্তিদের কাছে সাহায্য চাইছিলেন। কিন্তু কেউ তাকে ইতিবাচক উত্তর দেয়নি। একমাত্র ইমাম আলী (আঃ) তাকে সাহায্য করেছেন। এ ক্ষেত্রে ইমাম কিন্তু তাকে ইঙ্গিত করেননি যে, আমার নামাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত তুমি অপেক্ষা করো। বরং ইমাম নামাজের মধ্যে রুকুরত অবস্থায় তাদের আংটি দান করেন। আর এজন্য ইমাম আলী (আঃ)এর শানে আয়াত নাযিল
হল:
«انّما ولیّكم اللّه و رسوله و الّذین آمنوا الّذین یقیمون الصلوة و یؤتون الزّكاة و هم راكعون»
(হে বিশ্বাসিগণ!) তোমাদের অভিভাবক তো কেবল আল্লাহ, তাঁর রাসূল এবং সেই বিশ্বাসীরা যারা নামায প্রতিষ্ঠা করে এবং রুকু অবস্থায় যাকাত প্রদান করে।
সূরা মায়েদাহ, আয়াত: ৫৫।
অবশ্যই, খুমসের আলোচনায়, খুমস ও যাকাত এবং প্রচলিত সরকারি করের মধ্যে পার্থক্যগুলি উল্লেখ করা হয়েছে। ইনশা-আল্লাহ এ বিষয়ে আপনারা সংশ্লিষ্ট গ্রন্থ অধ্যয়ন করবেন।
খুমস হল এক প্রকার সম্পদের সমন্বয় যা একজন ব্যক্তি তার ইচ্ছায় এবং নৈকট্যের অভিপ্রায়ে, তার বিশ্বাস এবং তার উপর স্থাপিত আস্থার ভিত্তিতে, তার আয় পরীক্ষা করে এবং তা থেকে তার জীবনের স্বাভাবিক ব্যয় হ্রাস করে এবং লাভের বিশ শতাংশ যা জীবনযাত্রার ব্যয়ের চেয়ে বেশি তার খুমস হিসেবে দান করেন। অর্থাৎ প্রতি বছরে তার যে সঞ্চয় থাকে তার থেকে ২০ শতাংশ ধর্ম এবং সমাজের উন্নয়নের জন্য খুমস হিসেবে দান করা।
খুমস এবং যাকাতের মাধ্যমে সম্পদের ভারসাম্য অর্জন করা বাধ্যতামূলক, তবে ইসলাম সম্পদ সমন্বয় করার জন্য অন্যান্য অ-বাধ্যতামূলক উপায়ও প্রতিষ্ঠা করেছে, যেমন দান, ওয়াকফ, হেবাহ, সাদকা, ইনফাক, অসিয়ত, কাফফারা, মানত, আহাদ, কুরবানী এবং ঋণ প্রদান প্রমুখ।
কিছু অর্থনৈতিক মকতবে যেমন সাম্যবাদে সম্পদের সামঞ্জস্য, ব্যক্তিগত সম্পত্তিকে অস্বীকার করার মাধ্যমে এবং সরকার কর্তৃক সবকিছুর একচেটিয়াকরণের মাধ্যমে, তাও বাধ্যতামূলকভাবে করা হয় এবং এই ধরনের সমন্বয়ের মধ্যে কোন স্বাধীনতা, পছন্দ এবং বৃদ্ধি নেই।